ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা দরকার

প্রকাশিত: ১৯:৩৯, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে সবার সহযোগিতা দরকার

অনলাইন রির্পোটার ॥ বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমক্তু হিসেবে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিতে এবং বিশ্বের দরবারে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সবার সহযোগিতা দরকার। এছাড়া আগামী প্রজন্মের কাছে দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে হবে।’ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদক প্রাপ্তদের মাঝে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইতিহাসও বিকৃতি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে যে মর্যাদা পাওয়ার কথা ছিল তা হারাতে বসেছিলাম। কারণ ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা করা হয়। অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেন নিজেদের ভাষা ও ঐতিহ্যকে ভুলে না যাই। তবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তারপরও নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও প্রতিবছর বাংলায় ভাষণ দেই। এখন বিশ্বের অনেক দেশ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে। এছাড়া বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষণা ও সংরক্ষণ করতে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি। তবে বিএনপি-জামায়াত সরকার সেটা বন্ধ করে দেয়। এ সময় তিনি শীতলপাটি ও নকশিকাঁথার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেরও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন। যা বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের বলে উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশের গৌরব সংরক্ষণ করতে হবে আগামী প্রজন্মের জন্য। এসব গৌরব ও সংস্কৃতি আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত না। আমরা সব সময় বঙ্গবন্ধু আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্রে জর্জরিত ছিল তা থেকে আমরা অনেকটা মুক্ত পেয়েছি। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে থাকতে চাই। সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। বাংলা নববর্ষ পালনের স্বীকৃতি কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের কিছু পেত্মাতা এদেশের এখনও রয়ে গেছে। যার কারণে আমাদের ভাষা, উন্নয়নের প্রতি আঘাত আসে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এখন আমাদের কেউ অবহেলা করতে পারে না। নিজেদের প্রচেষ্টায় আমরা বিশ্বে একটা মর্যাদা পাচ্ছি। আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও কলাকূশলীদের খুঁজে খুঁজে নিয়ে আসা এবং তাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া। যারা আমাদের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে পারে। প্রসঙ্গত, ২১ জনকে একুশে পদকের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। যাদের মধ্যে- সমাজসেবায় এবার সম্মানজনক এই পদক পাচ্ছেন নিরাপদ সড়কের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ইলিয়াস কাঞ্চন। ভাষা আন্দোলনে প্রয়াত আ জ ম তকীয়ুল্লাহর সঙ্গে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন অধ্যাপক মির্জা মাজহারুল ইসলাম। প্রয়াত হুমায়ূন ফরীদিকে (হুমায়ূন কামরুল ইসলাম) অভিনয়ের জন্য পদকে ভূষিত করা হয়েছে। সংগীতে পদক পাচ্ছেন শেখ সাদী খান, সুজেয় শ্যাম, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, মো. খুরশীদ আলম ও মতিউল হক খান। নৃত্যে মীনু হক, নাটকে নিখিল সেন (নিখিল কুমার সেনগুপ্ত), চারুকলায় কালিদাস কর্মকার এবং আলোকচিতে গোলাম মুস্তাফা এবার একুশে পদক পাচ্ছেন। সাংবাদিকতায় রণেশ মৈত্র, গবেষণায় প্রয়াত ভাষাসৈনিক অধ্যাপক জুলেখা হক, অর্থনীতিতে মইনুল ইসলাম, ভাষা ও সাহিত্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম খান (কবি হায়াৎ সাইফ), সুব্রত বড়ুয়া, রবিউল হুসাইন ও মরহুম খালেকদাদ চৌধুরী পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
×