ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সিইসির মন্তব্য

বর্তমান অবস্থানে থাকলে খালেদা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বর্তমান অবস্থানে থাকলে খালেদা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে যে অবস্থানে আছেন, সেই অবস্থানে থেকে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, তবে পরে উচ্চ আদালত তার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে যেভাবে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন সেই অনুসারে কাজ করবে। খালেদা জিয়া যদি তার রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করেন, আদালত যদি তাকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়, তবে সেক্ষেত্রে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সোমবার সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। তবে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন সব সমস্যার সমাধান করে এটা আমার প্রত্যাশা। কিন্তু এখন কোর্টের যে নির্দেশনা রয়েছে তা আমাদের মানতে হবে। তিনি বলেন, আমার যেটা মনে হয়, আমিও তো ছোটোখাট একজন বিচারক ছিলাম। এডিএম ছিলাম। সামান্য জ্ঞানে যেটা মনে হয়, খালেদা জিয়া এখন যে অবস্থানে আছেন, এখন তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। এখন তিনি কনভিকটেড। এর পর উচ্চ আদালতে গেলে যে রকম নির্দেশ দেবে সে রকম হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, তারা যদি আপীল করে তখন একটা পরিস্থিতি। এখন পর্যন্ত আপীল করেননি এখন একটা পরিস্থিতি। যেহেতু আপীল করেননি তার মানে কনভিকশন অবস্থায় আছে। সুতরাং এই অবস্থায় তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না। তার পরে উচ্চ আদালতে গেলে কি রকম ডিরেকশন আসে তার ওপর নির্ভর করে আমাদের ডিসিশন হবে। উচ্চ আদালত থেকে আপীল নিষ্পত্তি হয়ে যদি এরকম একটা পরিস্থিতি হয় যে, বিএনপির চেয়ারপার্সন নির্বাচনে আসতে পারছেন না সেক্ষেত্রে কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, এত দূরের কথা বলা যাবে না। এটা তো অনেক সময় আছে। নির্বাচন তো অনেক দূরে। কি অবস্থা হবে তা বলা মুশকিল, কঠিন। আমাদের কাছে উচ্চ আদালত আছে, সুপ্রীমকোর্ট আছে তারপর আমরা আছি। আমি আশা করি যে, এই সমস্যার সমাধান হবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংস্কারের কাজ হচ্ছে। এ সময় তিনি বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন নিয়েও কথা বলেন। সোমবার বেলা ২টা ১০ মিনিটে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। এসময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেন। প্রায় আধাঘণ্টা সাক্ষাতের পর বের হয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। প্রধান বিচারপতি সংবিধানের প্রথম স্থানের একজন লোক। সে হিসেবে ওনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছে। সাক্ষাতে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনের সময় আপনাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাই, সহমর্মিতা পাই। এছাড়া অন্য কোন ইস্যু ছিল না বলে উল্লেখ করেন। নির্বাচন কমিশনের অনেক মামলা বিচারাধীন। এসব মামলার বিবাদী হিসেবে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসতে পারেন কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন এটা তো তার চেম্বার। মামলা-মোকদ্দমা যেগুলো ফেস করি সেগুলো তো কোর্টের মাধ্যমে হয়, আমাদের আইনজীবী আছে। ফ্যাক্টস এ্যান্ড ফিগার আমরা দেই, তার উপরে হয়। নির্বাচন কমিশনকে বিচার বিভাগ কী ধরনের সহযোগিতা করতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তারা পুরোপুরি সহযোগিতা করতে পারে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য হাইকোর্টের ভূমিকা হলো যে, যাতে আমরা সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন করতে পারি। আইনের জটিলতা যদি থাকে সেটা কীভাবে নিষ্পত্তি করে সময়মতো নির্বাচন উত্তরণ করা যায়, এগুলো তো করেই থাকে সব সময়। তবে তিনি উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় খালেদা জিয়ার মামলার বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কোন কথা হয়নি।
×