ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে

সহযোগিতা জোরদারে ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্ট ৪ মার্চ আসছেন

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 সহযোগিতা জোরদারে ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্ট  ৪ মার্চ আসছেন

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা-হ্যানয় সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াং আগামী ৪ মার্চ তিনদিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন। সফরকালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও। সে সময় উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট সফরকালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যেতে পারেন। তবে তিনি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন কিনা সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট আগ্রহী হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করাবে বাংলাদেশ। ভিয়েতনাম প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর পুরোপুরিভাবে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্য সম্ভাবনা সংক্রান্ত একটি সফর। এ সফরে দুই দেশের মধ্যে আয়োজিত হবে ‘বাংলাদেশ-ভিয়েতনাম বিজনেস ফোরাম’। দুই দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এ ফোরামে অংশ নেবে। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী হিসেবে আসছে দেশটির ১০০ প্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক ব্যবসায়ীর সমন্বয়ে গঠিত প্রতিনিধি দল। বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন ভিয়েতনামের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগসহ অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবেন তারা। ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনার পর বেশ কয়েকটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়েরও কথা রয়েছে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের। সফর শেষে আগামী ৬ মার্চ ঢাকা ত্যাগ করবেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট। ২০১২ সালের নবেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিয়েতনাম সফর করেন। সে সময় ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ত্রান দাই কুয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টকে ঢাকা সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সে অনুযায়ী ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ঢাকায় আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিয়েতনাম সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে চারটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। এছাড়া বাংলাদেশ ভিয়েতনাম থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাল আমদানি করে আসছে। অতীতে ভিয়েতনামই মূলত বাংলাদেশে চালের চাহিদা মিটিয়েছে। যদিও এখন ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি কমেছে। ভিয়েতনাম বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানি করছে। তবে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পরিমাণে ওষুধ নিতে চায় দেশটি। কেননা বাংলাদেশের ওষুধের প্রতি ভিয়েতনাম বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সে কারণে ভিয়েতনামের উপপ্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় বাংলাদেশ থেকে ওষুধের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ জাহাজ শিল্পে বিশেষ অগ্রগতি করেছে। বাংলাদেশ থেকে জাহাজ কেনার বিষয়েও ভিয়েতনাম আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। কেননা দুই দেশই দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সে কারণে উভয় দেশই দীর্ঘদিন ধরে একে অপরকে সহযোগিতা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ভিয়েতনাম সফর করেন। সে সময় বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর প্রতি জোর দেন। বাংলাদেশের রফতানির অন্যতম দেশ ভিয়েতনাম। ১৯৯০ সালে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য শুরু। দেশটিতে মূলত রফতানি হচ্ছে রাসায়নিক দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, লেদার, কাঁচাপাট, কৃষিজাত দ্রব্য, পাটজাত দ্রব্য, তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার ইত্যাদি। আর ভিয়েতনাম থেকে চাল ছাড়াও আমদানি হচ্ছে, মেকানিক্যাল ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী, শাকসবজি, মিনারেল, ঔষধ ও সিরামিক পণ্য।
×