ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

টি২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ ॥ ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পর টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়া থেকে বাঁচে বাংলাদেশ। কিন্তু এবার দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ থেকে রক্ষা হয়নি। রবিবার দ্বিতীয় টি২০তে ৭৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে হোয়াইটওয়াশ হয় বাংলাদেশ। প্রথম টি২০তে টস জিতে বাংলাদেশ ব্যাটিং করেছিল। এবার টস জিতে নিয়েছে ফিল্ডিং। আগে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে শ্রীলঙ্কা এমন রানই করেছে যে, শুরুতেই বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিয়। কুশল মেন্ডিসের ৭০, দানুশকা গুনাথিলাকার ৪২, থিসারা পেরেরার ৩১, দাসুন শানাকার অপরাজিত ৩০ ও উপুল থারাঙ্গার ২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারে ২১০ রান করে শ্রীলঙ্কা। জবাব দিতে নেমে ১৮.৪ ওভারে ১৩৫ রান করতেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশ শিবিরে যেন হারের অস্থিরতা জেঁকে বসেছে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারল। এবার টি২০ সিরিজও খোয়াল। টি২০ সিরিজ যে বাংলাদেশ জিততে পারবে না তা প্রথম টি২০তে শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটে জেতাতেই নিশ্চিত হয়ে যায়। আশা ছিল যদি দ্বিতীয় টি২০ জেতা যায় তাহলে সান্ত¡না মিলবে। অন্তত একটি সিরিজ তো নিজেদের মুঠোয় করতে পারবে না শ্রীলঙ্কা। কিন্তু শ্রীলঙ্কা দুই হাত ভরে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রথম টি২০তে ইনজুরির জন্য খেলতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল। তিনি ফেরাতে স্বাভাবিকভাবেই জাকির হাসানকে একাদশের বাইরে রাখতেই হতো। তবে প্রথম টি২০তে যেমন চার ক্রিকেটারের অভিষেক হয় বাংলাদেশের। এবার দ্বিতীয় টি২০তে চারজনকে বদল করা হয়। এর মধ্যে দুইজনের হয় অভিষেক। তামিম ফেরেন। জাকির একাদশের বাইরে থাকেন। পেসার আবু জায়েদ রাহী ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানের অভিষেক হয়। মোহাম্মদ মিঠুনকেও এবার একাদশে রাখা হয়। জাকিরের সঙ্গে আফিফ হোসেন ধ্রুব, সাব্বির রহমান রুম্মন ও রুবেল হোসেনকে বাইরে রাখা হয়। জয়ের আশাতেই একাদশে এমন ওলট-পালট করা হয়। কিন্তু সেই জয়টি তো আর মিলছে না। মিলেওনি। মিলবে কিভাবে? এত বড় টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে যদি ২২ রানে তিনটি (সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুন) উইকেট চলে যায়, তাহলে আর জেতার কোন সুযোগ থাকার সম্ভাবনা থাকে না। যখন ৫৯ রানে গিয়ে তামিম ইকবালও (২৯) আউট হয়ে গেলেন, তখন যেন শুধু ইনিংস শেষ হওয়ার অপেক্ষা থাকে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সর্বোচ্চ ৪১ রান করতে পারেন। বাকিরা এমনই ব্যর্থ হন ১৩৫ রানের বেশি করতেই পারেনি বাংলাদেশ। শুরুতে গুনাথিলাকা ও মেন্ডিস মিলে যে জুটি (৯৮ রানের) গড়ে দেন তাতেই শ্রীলঙ্কা অনেক এগিয়ে যায়। একের পর এক ক্যাচ মিসের সুযোগ নিয়ে দুইজনই আবার বড় ইনিংসও খেলে দেখান। কুশল মেন্ডিস শুরুতেই ‘নতুন জীবন’ পেয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেন। তিনিই শ্রীলঙ্কার ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোর করেন। পাওয়ার প্লেতেই গুনাথিলাকা ও মেন্ডিস মিলে ৬৩ রান যোগ করেন। ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং করে এগিয়ে যেতে থাকেন। দেখতে দেখতে ৯৮ রান হয়ে যায়। তখন একাধিকবার আউট হওয়া থেকে বাঁচা গুনাথিলাকা (৪২) সাজঘরে ফেরেন। এরপর থিসারা পেরেরা ব্যাট হাতে নেমে ছক্কা-চার হাঁকাতে থাকেন। দেখতে দেখতে ১৭ বলে ৩১ রান করে আউট হন। একেকজন ব্যাটিংয়ে নামেন। দ্রুত রান তুলে আউট হন। আউট হওয়ার চেয়ে তারা যে পরিকল্পনামতো দ্রুত রান তুলতে পারেন, সেটিতেই ভোগে বাংলাদেশ। ১৪৯ রানে গিয়ে পেরেরা আউটের পর ১৬০ রানে গিয়ে অবশেষে মেন্ডিস (৪২ বলে ৭০) আউট হন। ২০৫ রানে গিয়ে উপুল থারাঙ্গাও (২৫) সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু ততক্ষণেই রান আকাশচুম্বী হয়ে যায়। দাসুন শানাকা (৩০*) শেষ পর্যন্ত উইকেটে টিকে থাকেন। বড় স্কোর নিয়েই মাঠ ছাড়েন। যে স্কোর শ্রীলঙ্কা গড়ে তাতেই যেন জয়ের হাসি ফুটতে থাকে। কারণ বাংলাদেশ যে কখনই ২০০ রানের বেশি টার্গেট নিয়ে জিততে পারেনি। এমনকি ১৬৪ রানের টার্গেট নিয়ে ২০১৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে যে জিতেছিল বাংলাদেশ সেটিই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল। শ্রীলঙ্কার টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে যেভাবে থুবড়ে পড়লেন ব্যাটসম্যানরা, তাতে হারটা শুধু দেরিই হলো। শেষ পর্যন্ত প্রথম টি২০’র পর দ্বিতীয় টি২০তেও হারল বাংলাদেশ।
×