ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে খালেদার গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকে নিয়ে আলোচনার ঝড়

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কারাগারে খালেদার গৃহপরিচারিকা ফাতেমাকে নিয়ে আলোচনার ঝড়

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ আদালতের নির্দেশে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে দেখাশোনার জন্য রাজধানীর পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তার গৃহপরিচারিকা ফাতেমা। জিয়া এতিমখানার দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কারাগারে তাকে দেখাশোনার জন্য ফাতেমাকে রাখার নির্দেশ দেন। ফলে বিএনপির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে কারাগারে রয়েছে ফাতেমা। যা দেশে নজিরবিহীন ঘটনা। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যেমন আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে, তেমনি ফাতেমার গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জেও ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। বিনাদোষে ফাতেমার কারাবাসের ঘটনাটি এখন গ্রামের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস-আদালতেও আলোচিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩৫ বছর বয়সী ফাতেমার গ্রামের বাড়ি মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় হলেও তিনি তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে ঢাকার শাহজাহানপুরে থাকতেন। এখনও তার বাবা-মা ও কিশোর বয়সী একমাত্র পুত্র শাহজাহানপুর এলাকাতেই থাকেন। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে ৯২ দিন গুলশানের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থানের সময় খালেদা জিয়ার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ফাতেমা। তার (ফাতেমা) একমাত্র পুত্র সন্তান ওই সময় মাঝেমধ্যে গুলশান কার্যালয়ে এসে মায়ের সঙ্গে দেখা করে যেত। সূত্রে আরও জানা গেছে, ফাতেমার পরিবারের ব্যাপারে বিএনপির সাবেক দু’জন সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা সব খবর রাখেন। মূলত তারাই ফাতেমাকে খালেদা জিয়ার বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজে পাঠিয়েছিলেন। দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাতেমা বিএনপির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে রয়েছেন। ফাতেমা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কাজগুলো করেন। বিএনপির চেয়ারপার্সন তার দৈনন্দিন কাজের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই ফাতেমার ওপর নির্ভরশীল। দেশের ভেতর তো বটেই, দেশের বাইরেও খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকেন ফাতেমা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির চেয়ারপার্সনের ঘনিষ্ঠ কয়েক নেতা জানান, দলীয় চেয়ারপার্সনের প্রতি ফাতেমার মমত্ববোধ প্রবল। সব সময় পাশে থাকা, চেয়ারপার্সনকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মনে করিয়ে দেয়াসহ সব কাজই ফাতেমা করে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে দলীয় চেয়ারপার্সনের এ কাজগুলো সঠিকভাবে করার জন্য খালেদা জিয়া এখন তার কাজগুলোর ব্যাপারে ফাতেমার ওপর নির্ভর করেন। এ কারণে দৈনন্দিন কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি ফাতেমাকে সঙ্গে রাখার জন্য আদালতে আবেদন করেছেন। সূত্রমতে, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যখন গুলশানের কার্যালয়ে থেকে খালেদা জিয়া বের হতে পারছিলেন না ওই সময় বিএনপির চেয়ারপার্সনের পেছনে পতাকা হাতে দাঁড়ানো ফাতেমাকে নিয়ে অনেকেই কৌতূহল দেখান। খালেদা জিয়া গুলশান কার্যালয়ে থাকাকালীন ফাতেমার সঙ্গে কয়েকজন সাংবাদিক কথাও বলেছেন। ঐ সময় ফাতেমা জানিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে তিনি অনেক দেশে গেছেন। সাবেক এক কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) বলেন, সাধারণত প্রথম শ্রেণীর বন্দী বা ডিভিশন পাওয়া ব্যক্তিদের দেখভালের জন্য সাজা ভোগরত কোন কয়েদিকে নিয়োজিত করা হয়। নারী বন্দীদের জন্য একজন নারীকে এবং পুরুষ বন্দীদের টুকটাক কাজের জন্য একজন পুরুষ বন্দীকে নিয়োজিত করা হয়। কারাগারে এমনটিই হয়ে থাকে। তবে আদালতের আদেশে যে কোন কিছু করা যায়। আদালতের আদেশ কারা কর্তৃপক্ষকে বাস্তবায়ন করতে হয়। তবে বিএনপির চেয়ারপার্সনের সঙ্গে ফাতেমার থাকার ব্যাপারটি বাংলাদেশে ‘নতুন’ কোন ঘটনা বলেও তিনি আখ্যা দিয়েছেন।
×