ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গী দুই বোনের কাহিনী

সোমাই ছুরি ব্যবহার শিখিয়ে যায় সুমনাকে

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সোমাই ছুরি ব্যবহার শিখিয়ে যায় সুমনাকে

শংকর কুমার দে ॥ মোমেনা সোমা ও আসমাউল হুসনা সুমনা দুই বোন জঙ্গী হয়ে ওঠার কাহিনীর নেপথ্যের নায়ক কে এই নজিবুল্লাহ আনসারীর? তার প্রেমের ফাঁদে পড়েই জঙ্গীবাদে প্রথমে উদ্বুদ্ধ হয় বড় বোন মোমেনা সোমা (২৪)। বড় বোনের অনুসারী হয় জঙ্গীবাদে জড়ায় ছোট বোন আসমাউল হুসনা সুমনা (২২)। অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে এক মহিলাকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সেখানে গ্রেফতার হয় বড় বোন মোমেনা সোমা। এ ঘটনা ঢাকায় তদন্ত করার সময়ে ছোট বোন সুমনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তার হাতে ছুরিকাঘাত হন তদন্তকারী সংস্থার এক কর্মকর্তা। ছোট বোন সুমনাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঢাকা থেকে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে দুই বোন জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার নেপথ্যের কাহিনী জানার তদন্ত করে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে দুই বোনই ইন্টারনেটে অনলাইনের মাধ্যমে আইএস-আল-কায়েদাসহ জঙ্গীদের ছড়িয়ে রাখা বিভিন্ন উপকরণ দেখে নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গীবাদে পা বাড়ানোর কথা বলেছে। কিন্তু দেশের কোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা এখন পর্যন্ত পাওয়া না যাওয়ার পরও দুই বোনই এত দুর্ধর্ষ জঙ্গী হয়ে উঠেছে কিভাবে সেটাই এখন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে বড় প্রশ্ন। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই বোনের মধ্যে বড় বোন মোমেনা সোমার জঙ্গীবাদে জড়িয়ে সিরিয়ায় চলে যাওয়া নজিবুল্লাহ আনসারীর নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। প্রায় চার বছর আগে ২০১৪ সালের শেষ দিকে তাদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু নজিবুল্লাহর পরিবার বিয়েটা মেনে নিতে না পারার জন্য তাদের আর বিয়েটা হয়নি। তখন থেকেই সোমা জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েন। এক বছর পর ২০১৫ সালে সোমার মা মারা যান। প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনার পর বিয়েটা না হওয়ায় সোমা হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। আর এক বছর পর মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় শোকে মুষড়ে পড়ে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় আরও বেশি অন্ধ হয়ে পড়ে সোমা। সোমার পথ ধরেই ছোট বোন সুমনা জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ে হতাশা থেকে বাঁচার স্বপ্ন দেখার চেষ্টায় সর্বনাশা পথে পা বাড়িয়ে দুই বোনই দুই দেশে গ্রেফতার হয়ে পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অধীন। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, নজিবুল্লাহ আনসারীর রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এরপর পড়তে যান মালয়েশিয়ান মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে পড়তে যান বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে। সর্বশেষ পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় ২০১৬ সালে। এটাই তার সঙ্গে পরিবারের শেষ যোগাযোগ। নজিবুল্লাহ আনসারীর সঙ্গে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন গাজী সোয়ান নামে আরেক যুবক। জঙ্গীবাদে মোহ ভঙ্গ ভাঙ্গার পর দেশে ফিরে আসেন সেই যুবক গাজী সোয়ান। দেশে ফেরার পর গাজী সোয়ান পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তি জবানবন্দী দেয়। এই জবানবন্দী থেকে জানা যায়, সোয়ানের সঙ্গে নজিবুল্লাহ তুরস্কে দেখা হয়। কিন্তু এরপর গাজী সোয়ান বারবার যোগাযোগ করেও আর নজিবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সোয়ান যে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক যে জবানবন্দী দিয়েছে তাতে তার ধারণায় ব্যক্ত করেছেন, নজিবুল্লাহ সম্ভবত তুরস্ক সীমান্তে মারা গেছেন। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, বড় বোন মোমেনা সোমা সম্ভবত নজিবুল্লাহ আনসারীর মৃত্যুর ঘটনাটি জানতে পারেন। ছোট বোন সুমনাকেও রিমান্ডে আনার পর বিষয়টি জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বড় বোন সোমা বৃত্তি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে গিয়ে সেখানে ঘুমন্ত একজনকে ছুরিকাঘাত করতে গিয়ে ধরা পড়ে। এরপর তার ব্যাপারে সিটিটিসির একটি দল কাফরুলে সোমার বাসায় তথ্য নিতে গেলে সেখানে আকস্মিকভাবে সিটিটিসির সহকারী কমিশনার তৌহিদুল ইসলামের ওপর ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে সুমনা বর্তমানে তাকে সন্ত্রাস দমন আইনে দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, সোমা ও সুমনা ‘সেলফ মোটিভেটেড’ উগ্রপন্থী। তারা দু’জনই নব্য জেএমবির জঙ্গীবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত। এর আগে ইসলামিক স্টেটের হয়ে কাজ করতে তুরস্কে যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সোমা। ভিসা না পাওয়ায় তুরস্কে যাওয়া হয়ে ওঠেনি তার। দেশে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সময়ই ২০১৪ সালে উগ্রপন্থায় জড়ায় সোমা। এরপর ২০১৬ সালে তাকে অনুসরণ করে সুমনাও একই পথে পা বাড়ায়। সুমনা মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পাস করে। এরপর ভর্তি হয় গ্রিনফিল্ড কলেজে। ওই কলেজ থেকে অংশ নেয়ার পর এইচএসসিতে অকৃতকার্য হয় সুমনা। এরপর ২০১৭ সালে ম্যানটরস থেকে জিইডি শেষ করে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসে (ইউল্যাব) ইংরেজীতে ভর্তি হয়। মালয়েশিয়ায় জিয়াম্যান নামে একটি প্রতিষ্ঠানে পড়তে বৃত্তি পায় সুমনা। তবে অসুস্থতার কারণে সেখানে যাওয়া হয়নি তার। এরপর ট্যুরিস্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা করেও পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় তার সেখানে যাওয়া হয়নি। তবে ২০১৬ সালে বড় বোনের কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গীবাদে পথে পা বাড়ায় সুমনা। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে সোমা তার পরিকল্পনার কথা সুমনাকে বলে যায়। কোন সময় পুলিশ বাসায় অভিযানে গেলে কীভাবে ছুরি নিয়ে হামলা করতে হবে তাও বড় বোন তাকে শিখিয়ে দিয়ে গেছে বলে তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তার দাবি। জানা গেছে, সোমা ও সুমনার বাবা মনিরুজ্জামান জনতা ইন্স্যুরেন্সের ভাইস চেয়ারম্যান। তাদের গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। ২০১৫ সালের জুনে মনিরুজ্জামানের স্ত্রী মারা যান। এক সময় পূর্বাচলে তাদের অনেক জমিজমা ছিল। সেখানে জমি অধিগ্রহণের পর ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের একটি অংশ দুই মেয়ের নামে ব্যাংকে গচ্ছিত রাখেন মনিরুজ্জামান। তিনি নিজে আহলে হাদিসের অনুসারী। তবে দুই মেয়ের মধ্যে কয়েক বছর ধরে বাহ্যিক অনেক পরিবর্তন দেখলেও তারা জঙ্গীবাদে জড়িয়েছে এ বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। পুলিশের বক্তব্য ॥ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মোমেনা সোমা অনলাইনে জঙ্গীবাদের উপকরণ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। ছোট বোন আসমাউল হুসনা সুমনাকেও জঙ্গীবাদে উদ্বুদ্ধ করেন বড় বোন সোমাই। তবে দেশের কোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা সুমনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। বাংলাদেশ পুলিশ অস্ট্রেলিয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। তিনি বলেন, মোমেনা সোমা ও তার বোন আসমাউল হুসনা অনলাইনের মাধ্যমে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েন। তবে দেশের কোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। অনলাইনে আইএস-আল-কায়েদাসহ জঙ্গীদের ছড়িয়ে রাখা বিভিন্ন উপকরণ দেখে নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এ পথে আসেন সোমা। তিনি তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভিসা না পাওয়া যেতে পারেননি। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় যান। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কথা আগেই বোনকে বলে গিয়েছিলেন তিনি। বাসায় পুলিশ এলে তাদের ওপর হামলা করার জন্য ছোট বোন সুমনাকে নির্দেশ দেন বড় বোন মোমেনা সোমাই। আজ আদালতে পাঠানো হচ্ছে সুমনাকে ॥ জঙ্গী সম্পৃক্ততায় আটক ছোট বোন আসমাউল হুসনা সুমনাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হচ্ছে রবিবার। রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সুমনা বলেছে, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে একটি ঘটনা ঘটিয়ে আলোচনায় আসার কথা আগেই জানিয়েছিল বড় বোন মোমেনা সোমা। বাড়িতে পুলিশ আসলে তাদেরকে হত্যা করে নিজে যেন শহীদ হন- এমন কথাও অষ্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিলেন বড় বোন সোমা। জঙ্গী সম্পৃক্ততার ঘটনায় প্রথমে অষ্ট্রেলিয়ায় গিয়ে এক ঘুমন্ত বৃদ্ধকে ছুরিকাঘাত করে সেখানে আটক হন বড় বোন সোমা ও সোমার বিষয়ে ঢাকায় তদন্ত করতে যাওয়া এক পুলিশকে ছুরিকাঘাত করে আটক হন ছোট বোন সুমনা। দুই বোনের জঙ্গী সম্পৃক্ততার বিষয়টি দুই দেশের পুলিশ তদন্ত করছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা বলেন, বড় বোন মোমেনা সোমা জঙ্গী হয়ে ওঠার কাহিনীর নেপথ্যের নায়ক সম্ভবত এই নজিবুল্লাহ আনসারীর নামের এক যুবক। তার প্রেমের ফাঁদে পড়েই জঙ্গীবাদে প্রথমে উদ্বুদ্ধ হয় বড় বোন মোমেনা সোমা। বড় বোনের হাত ধরে জঙ্গীবাদে জড়ায় ছোট বোন আসমাউল হুসনা সুমনা। অষ্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে এক মহিলাকে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করার ঘটনায় সেখানে গ্রেফতার হয় বড় বোন মোমেনা সোমা। এই ঘটনা ঢাকায় তদন্ত করার সময়ে ছোট বোন সুমনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তার হাতে ছুরিকাঘাত হন তদন্তকারী সংস্থার এক কর্মকর্তা। ছোট বোন সুমনাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিটিসি)। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঢাকা থেকে অষ্ট্রেলিয়ার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে দুই বোন জঙ্গীবাদে উদ্বদ্ধু হওয়ার নেপথ্যের কাহিনী জানার তদন্ত করে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে দুই বোনই ইন্টারনেটে অনলাইনের মাধ্যমে আইএস-আলকায়েদাসহ জঙ্গীদের ছড়িয়ে রাখা বিভিন্ন উপকরণ দেখে নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে জঙ্গীবাদে পা বাড়ানোর কথা বলেছে। কিন্তু দেশের কোন জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা এখন পর্যন্ত পাওয়া না যাওয়ার পরও দুই বোনই এত দুর্ধর্ষ জঙ্গী হয়ে উঠেছে কীভাবে সেটাই এখন তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের কাছে বড় প্রশ্ন। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুই বোনের মধ্যে বড় বোন মোমেনা সোমার জঙ্গীবাদে জড়িয়ে সিরিয়ায় চলে যাওয়া নজিবুল্লাহ আনসারীর নামে এক যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। প্রায় চার বছর আগে ২০১৪ সালের শেষ দিকে তাদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু নজিবুল্লাহর পরিবার বিয়েটা মেনে নিতে না পারার জন্য তাদের আর বিয়েটা হয়নি। তখন থেকেই সোমা জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েন। এক বছর পর ২০১৫ সালে সোমার মা মারা যান। প্রেম ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনার পর বিয়েটা না হওয়ায় সোমা হতাশার মধ্যে পড়ে যায়। আর এক বছর পর মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় শোকে মুষড়ে পড়ে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনায় আরও বেশি অন্ধ হয়ে পড়ে সোমা। সোমার পথ ধরেই ছোট বোন সুমনা জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়ে হতাশা থেকে বাঁচার স্বপ্ন দেখার চেষ্টায় সর্বনাশা পথে পা বাড়িয়ে দুই বোনই দুই দেশে গ্রেফতার হয়ে পুলিশের হেফাজতে জিজ্ঞাবাদ ও তদন্তনাধীন। নজিবুল্লাহ আনসারী রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এরপর পড়তে যান মালয়েশিয়ান মেরিন একাডেমিতে। সেখান থেকে পড়তে যান বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে। সর্বশেষ পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় ২০১৬ সালে। এটাই তার সঙ্গে পরিবারের শেষ যোগাযোগ। নজিবুল্লাহ আনসারীর সঙ্গে জঙ্গীবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন গাজী সোয়ান নামে আরেক যুবক। জঙ্গীবাদে মোহ ভাঙ্গার পর দেশে ফিরে আসেন সেই যুবক গাজী সোয়ান। দেশে ফেরার পর গাজী সোয়ান পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তি জবানবন্দী দেয়। এই জবানবন্দী থেকে জানা যায়, সোয়ানের সঙ্গে নজিবুল্লাহ তুরস্কে দেখা হয়। কিন্তু এরপর গাজী সোয়ান বারবার যোগাযোগ করেও আর নজিবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সোয়ান যে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক যে জবানবন্দী দিয়েছে তাতে তার ধারণায় ব্যক্ত করেছেন, নজিবুল্লাহ সম্ভবত তুরস্ক সীমান্তে মারা গেছেন। প্রসঙ্গত গত ৯ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মোমেনা সোমাকে (২৪) গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। এরপর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সোমার বিষয়ে খোঁজ নিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর কাজীপাড়ার বাসায় গেলে আসমাউল হুসনা ওরফে সুমনা।
×