ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নয় মাসের মধ্যে প্রস্তাব কার্যকরের শতভাগ সুযোগ

একত্রে ২৭ সেবা ॥ বিনিয়োগ আকর্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

একত্রে ২৭ সেবা ॥ বিনিয়োগ আকর্ষণে বিশেষ ব্যবস্থা

এম শাহজাহান ॥ জমি রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে বয়লার সার্টিফিকেট প্রাপ্তি-এ রকম ২৭ ধরনের সেবা এক ছাতার নিচ থেকে পাবেন বিনিয়োগকারীরা। এর ফলে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ নয় মাসের মধ্যে তাদের বিনিয়োগ প্রস্তাব কার্যকর করার শতভাগ সুযোগ পাবেন। এজন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন প্রণয়ন ও তা পাস করানো হয়েছে জাতীয় সংসদে। আইনটি যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে সরকার। আশা করা হচ্ছে, আইনটি কার্যকর করা গেলে দেশে বিনিয়োগ নিয়ে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, দীর্ঘসূত্রতা, ঘুষ এবং দুর্নীতির মতো যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, সরকারের এ উদ্যোগের ফলে র‌্যাঙ্ক অব ডুয়ি বিজনেস-এ দেশের অবস্থান উন্নত হবে এবং বিদেশী বিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে ডুয়ি বিজনেসে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে ১৭৬। বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই অবস্থান ১০০ এর মধ্যে রাখার পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। ইতোমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ। বাংলাদেশে এখন সরাসরি নিট বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকা। জানা গেছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে বর্তমানে অন্তত ১৭টি খাতে কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছেন বিদেশীরা। তাদের মুনাফা প্রত্যাবাসন বা ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও বিধি-বিধান শিথিল করা হয়েছে। মুনাফাসহ শতভাগ মূলধন ফেরত নেয়ার পাশাপাশি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠায় যন্ত্রপাতির অবচয় সুবিধা, শুল্কমুক্ত যন্ত্রাংশ আমদানি এবং রফতানি উন্নয়ন তহবিল থেকে কম সুদে ঋণ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বিদেশীরা। পাশাপাশি রয়েছে সস্তা শ্রমের সহজলভ্যতা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব সুযোগ-সুবিধার জন্যই বিদেশীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশন, টেক্সটাইল, জ্বালানি, গ্যাস ও বিদ্যুত এবং ব্যাংক-বীমায় বেশি বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। জানা গেছে, উচ্চ প্রবৃদ্ধির জন্য চলতি বাজেটে সঞ্চয় ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখানে সরকারী খাতের বিনিয়োগ ছিল ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে মোট বিনিয়োগকে জিডিপির ৩১ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তি ও সরকারী খাতের বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা হলো ২৩ দশমিক ৩ ও ৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন। এজন্য সরকার বাংলাদেশে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৬ জারি করেছে। এ আইনের বিধান মতে, বিনিয়োগ বোর্ড ও প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের কার্যক্রম একীভূত করে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) গঠন করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে সরাসরি বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতাসমূহ অপসারণে কাজ করছে। ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন প্রণয়ন করা হয়েছে যা মহান জাতীয় সংসদে পাসও হয়েছে। তিনি বলেন, এ আইন অনুযায়ী একজন বিনিয়োগকারীর প্রয়োজনীয় আন্তঃমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সব সেবা কর্তৃপক্ষ নিজেই সম্পাদন করবেন। এভাবে একটি বিনিয়োগ প্রস্তাব নয় মাসের মধ্যে কার্যকর করা সম্ভব হবে। গত বছর এ বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এক দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। তবে চলতি বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। ওয়ানস্টপ সার্ভিসে পাওয়া যাবে সব সেবা ॥ দেশের জনগণের জীবনমান দ্রুত উন্নয়নের স্বার্থে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে এবং বিনিয়োগকারীদের এক ছাতার নিচে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করতে ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস বিল-২০১৮’ সংসদে পাস হয়েছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতেই নতুন এই আইন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিল উত্থাপনকারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ‘কেন্দ্রীয় ওয়ানস্টপ সার্ভিস কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে দায়িত্বপালন করবে। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, ওয়ানস্টপ সার্ভিস একটি ভাল আইন। এই আইনের বাস্তবায়ন ঠিকমতো হলে দেশে সরকারী-বেসরকারী এবং বিদেশী বিনিয়োগ বাড়বে। ছাড়পত্র, কোম্পানি নিবন্ধন, আর্টিক্যালস অব এ্যাসোসিয়েশন ও মেমোরেন্ডাম অব এ্যাসোসিয়েশন এবং শেয়ার ট্রান্সফার, নিবাসী ও অনিবাসী ভিসা, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পার্ক ইত্যাদি ঘোষণা, অর্থনৈতিক এলাকার (রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা, অর্থনৈতিক অঞ্চল, পার্ক ইত্যাদি) অভ্যন্তরে ভূমি বরাদ্দ, ব্যাংক ঋণের অনাপত্তি পত্র, নমুনা প্রেরণের অনুমতি, বিনিয়োগ প্রস্তাব-প্রকল্প ছাড়পত্র ও অফশোর ব্যাংকিং লাইসেন্সের অনাপত্তি পত্র, ওয়ার্ক পারমিট প্রদান, ট্রেড লাইসেন্স, উদ্যোক্তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমির ক্রয় ও লিজ দলিল রেজিস্ট্রেশন, সংশ্লিষ্ট উপজেলা ভূমি অফিস থেকে নামজারি, পরিবেশগত ছাড়পত্র, নর্মাল পারমিট, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন, ওয়ারিং-সংক্রান্ত্র ছাড়পত্র ও জেনারেটর স্থাপনের অনুমতি, কল কারখানার মেশিন লে-আউট প্ল্যান অনুমোদন এবং কারখানা বা প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও সংশোধন, বিদ্যুত বিভাগের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট বিতরণ সংস্থাসমূহ থেকে বিদ্যুত সংযোগ, জ্বালানি ও খনিজ বিভাগের আওতাধীন সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী সংস্থাসমূহ থেকে গ্যাস সংযোগ, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভা থেকে পানি সংযোগ ও পয়ঃনিষ্কাশন, বিটিসিএল থেকে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর থেকে অগ্নি নিরোধ সংক্রান্ত সেবা ও ছাড়পত্র, বিস্ফোরক অধিদফতর থেকে বিস্ফোরক লাইসেন্স, প্রধান বয়লার পরিদর্শকের কার্যালয় থেকে বয়লার সার্টিফিকেট, বয়লার নিবন্ধন ও সনদপত্র নবায়ন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডিভিডেন্ট, রেমিট্যান্স ও ক্যাপিটালের প্রত্যাবাসন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিভিন্ন প্রকার প্রণোদনা, আমদানি ও রফতানি, বন্ড লাইসেন্স ও কাস্টমস-সংক্রান্ত ছাড়পত্র, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে টি আই এন ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্থানীয় ক্রয় ও বিক্রয় ছাড়পত্র, আমদানি ও রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দফতর থেকে আমদানি ও রফতানি পারমিট জারিকরণ, রফতানি নিবন্ধন সনদপত্র এবং ইনডেন্টিং নিবন্ধন সনদপত্র, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে সার্টিফিকেট অব অরিজিন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পানি ও বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনের অনুমতি পাওয়ার মতো ২৭ ধরনের সেবা পাওয়া যাবে ওয়ানস্টপ সার্ভিস থেকে। এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক প্রথম সহসভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী জনকণ্ঠকে বলেন, ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন হয়েছে এখন এই আইনের বাস্তবায়ন জরুরী। সেবা পেতে হয়রানি দূর হলে নতুন উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে অনেক দেশই এখন বাংলাদেশমুখী হচ্ছেন। ব্যাংক সুদের হার আরও কমানো যেতে পারে। উচ্চ সুদ দিয়ে কখনও কোন দেশে শিল্পায়ন হয়নি, বাংলাদেশেও হবে না। বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ বাড়াতে রাষ্ট্রের সহযোগিতা সবচেয়ে বড় প্রয়োজন। তিনি বলেন, বেসরকারীখাতের বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক শিল্পনীতি করতে হবে। এদিকে, সম্প্রতি ঢাকায় দুই দিনের বাংলাদেশ উন্নয়ন ফোরামের একাধিক আলোচনায়ও ঘুরেফিরে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর ইস্যুটি বারবার সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা বলছেন, প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের চাইতে বাংলাদেশের সার্বিক ব্যবসায়িক পরিবেশ স্পষ্টতই দুর্বল। সম্প্রতি কিছু উদ্যোগ নেয়া হলেও বাস্তবে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারী বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে উদ্যোক্তারা এখন বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছেন। তবে বেসরকারী বিনিয়োগ কাগজে-কলমে যা আছে, বাস্তবে তা নেই। সরকারী সুযোগ-সুবিধা যেসব আছে তা বাস্তবায়িত হলে বিনিয়োগ বাড়বে। ওয়ানস্টপ সার্ভিস পুরোপুরি বাস্তবায়নে নজর দেয়া প্রয়োজন। জানা গেছে, ২০১৬ সালে দেশে সরাসরি নিট বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ২৩৩ কোটি ২৭ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ১৮ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা। এরপর থেকেই বিদেশী বিনিয়োগ ইতিবাচক ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভে প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সর্বোচ্চ বিনিয়োগ এসেছে টেলিকমিউনিকেশন খাতে। এ প্রসঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, ২০১৬ সাল বিশ্ব বিনিয়োগের মন্দার বছর গেছে। সে তুলনায় বাংলাদেশের এফডিআই খুব কম বলা যাবে না। তবে জিডিপি অনুপাতে এ হার আরও বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক হারে কাজ করছেন তারা। উদ্যোক্তাদের প্রয়োজন সহজেই মেটানোর পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। ফলে আগামীতে এফডিআই অনেক বেশি পরিমাণে বাড়বে। তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে দেশে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। পিপিপিতে বিদেশী বিনিয়োগ ॥ বাংলাদেশে সড়ক, রেল, বন্দর, বিমানবন্দর, পানিসম্পদ, পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন খাতে পিপিপির মাধ্যমে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুত উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ এবং তেল ও গ্যাস খাতে পিপিপির অধীনে বিনিয়োগ চাইছে সরকার। তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি এবং সামাজিক অবকাঠামো (স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদি) খাতে পিপিপির অধীনে বিনিয়োগ হচ্ছে। বাংলাদেশে পিপিপির সকল খাতে বিদেশী উদ্যোক্তাদের প্রকল্পের শতভাগ বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। সর্বশেষ এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-২০১৬ সালে ৩২টি পিপিপি প্রকল্পে বিদেশী উদ্যোক্তাদের অংশ দাঁড়িয়েছে ৪৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে ছিল ২৪টি প্রকল্পে ৪১ শতাংশ বিদেশী উদ্যোক্তাদের। পরের বছর ২০১৫ সালে ২৭ প্রকল্পে ৪৪ শতাংশ বিনিয়োগ করেন বিদেশী উদ্যোক্তারা। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে পিপিপির অধীনে ৬৮টি প্রকল্প শেষ হয়েছে। এসব প্রকল্পে এক হাজার ৯৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫টি জ্বালানি খাতের প্রকল্প। জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলোর মধ্যে তাপবিদ্যুত কেন্দ্রই বেশি। আটটি তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি খাতের। তিনটি সামাজিক অবকাঠামো ও দুটি পরিবহন খাতের। ব্যক্তিখাতের প্রতিবন্ধকতা দূর করা ॥ ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগে যেসব প্রতিবন্ধতা রয়েছে তা দূর করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এজন্য বিদ্যুত, গ্যাস প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিনিয়োগ প্রক্রিয়াকরণে প্রাতিষ্ঠানিক জটিলতা, জমির সঙ্কট দূর করা এবং উচ্চ ঋণের সুদ কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মোঃ সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন বাস্তবায়ন জরুরী। বিনিয়োগের জন্য অবকাঠামো বড় সমস্যা। এর পাশাপাশি রয়েছে ব্যাংক ঋণের অতিরিক্ত সুদ। এছাড়া কারখানা স্থাপনের পরও উদ্যোক্তারা বিদ্যুত ও গ্যাসের সংযোগ পাচ্ছে না। গ্যাস সংযোগ তো বন্ধই রাখা হয়েছে। এই বাস্তবতায় বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো কঠিন। এসব জায়গায় স্বস্তি প্রয়োজন।
×