ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৩:৪১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধে চাই সমন্বিত উদ্যোগ

সারাদেশে চলমান এসএসসি পরীক্ষাকে সামনে রেখে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে প্রশ্ন রয়েছে ফাঁস। আর অতি মাত্রায় রাজনীতি সচেতন এই জাতির অবসরে বিনোদন চর্চার প্রধান মাধ্যম যখন রাজনীতি, তখন সব আলোচনাই শেষ হয় এভাবে- যত দোষ মন্ত্রী ব্যাটাই নন্দ ঘোষ! অতএব জ্বালো, জ্বালো... এর গদিতে আগুন জ্বালো এক সাথে আর নয়তো পদত্যাগ চাই। এবারও তাই হয়েছে। জাতীয় সংসদ থেকে পর্যন্ত হাওয়া উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে। প-িত পথিক থেকে পথকলি পর্যন্ত তাদের জ্ঞানগর্ভ বিশ্লেষণ শেষে উপসংহার টানছেন এই বলে যে, সমাধান একটাইÑ শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ! অধ্যাপক, ডক্টরেট থেকে আমার মত আমজনতা কলমের আঁচড়ে জাতির ভয়াবহ আগামীর ছবি এঁকে সমাপ্তি টানছি এই বলে, জাতির ভবিষ্যতের স্বার্থে শিক্ষামন্ত্রীর সরে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই! যেন শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগে আমরা পেয়ে যাব আলাদিনের চেরাগ, যার দৈত্য এক মুহূর্তে করে দেবে সমস্যার সমাধান। সমালোচনা এখন এসে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক, ব্যক্তি নুরুল ইসলাম নাহিদ (শিক্ষামন্ত্রী)-এর পদত্যাগেই যেন সমাধান নিহিত। সমালোচনা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হওয়ার পেছনে যে কারণ নেই, তাও নয়। প্রথম কারণটি হতে পারে জনাব নাহিদের কাছে প্রত্যাশা সব সময়েই একটু বেশি। দ্বিতীয় কারণটি বলা যায় প্রশ্ন ফাঁস রোধে বিগত কয়েক বছরের ধারাবাহিক ব্যর্থতা। এর বাইরে তার নিজের এবং মন্ত্রণালয়ের বড় কর্তাদের বেসামাল কথার্বাতাও জনাব নাহিদকে নিয়ে এসেছে ক্ষোভের কেন্দ্রে। হাস্যকর ব্যাপার হলো নাহিদ বিন্দুমাত্র সম্পর্কিত নন এমন সব দায়ও তাকে বইতে হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা, পিএসসি, বিভিন্ন স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, পিয়ন থেকে পুলিশের চাকরির পরীক্ষা, ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা, যার ওপর কার্যত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন নিয়ন্ত্রণ বা সংশ্লিষ্টতা নেই, সে পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নপত্র ফাঁস হলেও আঙ্গুল ওঠে শিক্ষামন্ত্রীর দিকে। হাস্যকর হলেও সত্য যে, বহু বিদ্বান বুদ্ধিজীবী, আমজনতা নির্দ্বিধায় বলে ফেলে পাবলিক পরীক্ষা থেকে শুরু করে চাকরির সব পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে অতএব শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চাই! ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষার সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর কি সম্পর্ক তা জানা ছিল না। জানার চেষ্টা করতে গিয়ে যে জ্ঞান লাভ করেছি তা শুনলে স্বয়ং সক্রেটিসও পুলকিত হতেন। সমীকরণটি অতি সহজ, যেহেতু প্রশ্ন মানেই পড়াশোনা সংক্রান্ত বিষয় আর পড়াশোনার মা-বাবা হলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়, তাই প্রশ্ন ফাঁস মানেই শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা শিক্ষামন্ত্রীর দোষ! এই যখন অবস্থা তখন শিক্ষামন্ত্রীর অবস্থা সহজেই অনুমেয়! দেশের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত একটি মন্ত্রণালয়কে জনাব নাহিদ গত নয় বছর ধরে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন, তা বিবেচ্য নয়। তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে শিক্ষা বিস্তারের তথ্য হাতের নাগালে থাকলেও তাতে কিছু যায় আসে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠনের সংখ্যা বৃদ্ধি, জাতীয়করণ এমন অনেক উদাহরণের কোনটিই জনাব নাহিদের পক্ষে যায় না, কারণ তিনি বোর্ডসহ অন্যান্য পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধে ব্যর্থ। এখানে একটি বিষয় স্বীকার করে নিতে হবে, কোন একটি উপজেলায় স্কুল নির্মাণে অনিয়ম বা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণে বৈষম্যের প্রভাব স্থানীয় পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকে। অন্যদিকে এসএসসি বা এইচএসসির পরীক্ষাগুলোতে অনিয়মের প্রভাব পরে সারা দেশজুড়ে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতকে তা প্রভাবিত করে সরাসরি। এ কারণেই জনাব নাহিদের শিক্ষামন্ত্রী হিসাব সব সাফল্যকে ছাপিয়ে প্রশ্ন ফাঁস রোধে তার ব্যর্থতাটি বড় হয়ে উঠেছে। এমনকি মন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব গ্রহণের বহু পূর্বেই পচে যাওয়া, দুর্নীতিগ্রস্ত একটি মন্ত্রণালয়কে ন’বছর একটানা নেতৃত্ব দেয়ার পরও পরিচ্ছন্ন, সৎ, ইমেজ, তার সজ্জন ভাবমূর্তি কোন কিছুই তার পদত্যাগের দাবিকে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। অথচ জনাব নাহিদকে কাজ করতে হয়েছে এমন এক মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী, কর্মকর্তাদের নিয়ে যার ইট-কাঠ পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। এদের নিয়েই তাকে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ছাপা, বিতরণ, পরীক্ষা গ্রহণের জটিল কাজ করতে হয়েছে। এর যে কোন পর্যায়ে সামান্য একটি ছিদ্র ডেকে আনতে পারে বিপর্যয়। শুধু মন্ত্রণালয় নয়, স্কুল পর্যায়ে বিতরণকৃত প্রশ্ন ফাঁসের জন্য, প্রশ্ন দেখা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত অথচ নৈতিকভাবে অধঃপতিত একজন শিক্ষকই যথেষ্ট। নৈতিক অধঃপতনের বাইরে স্রেফ রাজনৈতিক মতবিরোধ থেকেও সংশ্লিষ্ট কেউ সরকারকে বিপাকে ফেলার জন্য এমনটা করতে পারে। হাতের কাছেই রয়েছে সহজ প্রযুক্তি। কেবল একটি ক্লিকে ছবি তুলে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট গন্তব্যে প্রেরণ হতে পারে প্রশ্ন ফাঁসের সহজ পথ। বলা বাহুল্য, এই প্রযুক্তির দৌরাত্ম্য মোকাবেলায় শিক্ষামন্ত্রী স্রেফ ঢাল তলোয়ারবিহীন নিধিরাম সর্দার অর্থাৎ, তার হাতে কিছুই নেই। শুধু তাই নয়, তার মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারক আমলাদেরও এই প্রযুক্তি মোকাবেলায় তেমন ধারণা আছে বলে মনে হয় না। এতক্ষণ যা বললাম, তা কেবল মোটা দাগের চিত্র। ভেতরের জটিলতার গভীরতা অনেক বেশি, জল অনেক বেশি ঘোলা বা ইচ্ছাকৃত ঘোলা করা হয়েছে। এই যখন অবস্থা তখন একা শিক্ষামন্ত্রী বা ব্যক্তি নুরুল ইসলাম নাহিদ কী করতে পারেন? অথবা তার জায়গায় অন্য কেউ? তার মানে এই নয় যে, পিইসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসি বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে গৃহীত কোন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের দায় জনাব নাহিদ এড়াতে পারেন! বিষয়টি এক-দু’বার হলে হয়তো তার সে সুযোগ ছিল, কিন্তু গত সাত বছরের ধারাবাহিক প্রশ্ন ফাঁসের দায় এড়ানো বা প্রশ্ন ফাঁস রোধে ব্যর্থতার দায় অস্বীকারের কোন সুযোগ তার নেই। দায়ী যে বা যারাই হোক মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসেবে নৈতিক দায় তাকেই বহন করতে হবে। বিষয়টির কার্যকর সমাধানের জন্য হলেও দায় স্বীকার করেই পথ খুঁজতে হবে। ভুলগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এই ভুলগুলো চিহ্নিত করতে গিয়ে তাকে মাথায় রাখতে হবে দীর্ঘদিন ধরে তাকে ঘিরে থাকা কতিপয় আমলার দ্বারা সেটি কতটুকু সম্ভব? ঘড়ি যখন কিছুতেই সঠিক সময় দেয় না তখন ঘড়ি বদলে ফেলাই শ্রেয়। এখানে রাগ-অনুরাগের কোন স্থান নেই। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত জাতির ভবিষ্যতের প্রশ্ন। মুখে ডেসপারেট, এগ্রেসিভ বলে লাভ নেই, কাজে কঠোর হোন। মনে রাখবেন, বহু রাজনীতিবিদের ক্যারিয়ার ধ্বংস করে আমলারা বহাল তবিয়াতে আছে। শিক্ষমন্ত্রীর আমলা নির্ভরতার গল্প বাতাসে ভাসে। বলতে পারেন, বদলে যারা আসবে তারও তো আমলা, পরিস্থিতির উন্নতি হবে তার গ্যারান্টি কী? বরং এটা ভাবুন পরীক্ষিত ব্যর্থদের বাদ দিয়ে নতুনদের সুযোগ দিলে পরিস্থিতি এর চেয়ে বেশি আর কী খারাপ হবে? যদি সুফল মিলে সেটা না হয় বোনাস ধরে নেবেন। এবারের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর পূর্বে শিক্ষমন্ত্রী বলেছিলেন, দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এবার আপনি ডেসপারেট। এক্ষেত্রে ডেসপারেট হোন। মাননীয় মন্ত্রী, ভুল পথে সঠিক গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব নয় এবং আশার কথা এই যে কিছুটা হলেও আপনি নিজের ব্যর্থতা অনুভব করেছেন। এবারের পরীক্ষা শুরুর পূর্বে এবং পরীক্ষা চলাকালীন মন্ত্রণালয়ের কতিপয় কর্মকর্তার আচরণ পরিস্থিতি কতটা জটিল করেছে, সে চিত্রটি সামনে থাকলে আপনার পথচলা সহজ হবে বলে মনে করি। পরীক্ষাপূর্ব প্রেস কনফারেন্সে নিজেকে প্রশ্ন ফাঁস রোধে ডেসপারেট, এগ্রেসিভ বলে কঠিন পদক্ষেপের কথা বলছিলেন। আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু সব আশা বিশ বাঁও জলে গেল যখন শুনলাম পুরনো সুর, প্রশ্ন ফাঁস হলে, প্রমাণ পাওয়া গেলে সে পরীক্ষা বাতিল হবে। এ যেন ন’মণ ঘি আর রাধার গল্প! পুড়বেও না নাচবেও না! আমরা অপেক্ষায় ছিলাম ফাঁসরোধে মন্ত্রণালয় কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে সচিব মহোদয় সে কথা জানাবেন। আর তিনি কিনা বললেন, ফাঁস হলে কী করবেন! তাও আবার প্রমাণ পাওয়া গেলে! যে প্রমাণ তারা অতীতে কখনও খুঁজে পাননি! প্রশ্ন ফাঁস হলে পরীক্ষা বাতিল হবে, এ কথা বলবার জন্য সচিব হতে হয় না। আর পরীক্ষা বাতিল তো প্রশ্ন ফাঁসের পরের ধাপ। প্রশ্ন ফাঁস রোধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা যদি আপনাদের জানা না থাকে, তবে ২০ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারে আতঙ্ক না ছড়িয়ে নীরব থাকাই কাম্য ছিল না কি? দুষ্ট লোকেরা কিন্তু তখনই বলেছিল প্রশ্ন ঠিক ঠিক ফাঁস হবে, কিন্তু প্রমাণ খুঁজে পাবেন না। অর্থাৎ পরিস্থিতি বদলাবে না। তাদের কথার যে ভিত্তি নেই, তাও নয়। এই প্রমাণ তো মন্ত্রী নিজে খুঁজবেন না, প্রমাণ খুঁজতে গঠিত হবে আমলা নিয়ন্ত্রিত বা তাদের দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিটি। নেহায়েত নিরূপায় না হলে ১৮ কোটি বাঙালী কিরে কেটে সাক্ষ্য দিলেও কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পাবে না। আর সচিব মহোদয়ের বার্তার দুটো অর্থ হতে পারে, প্রমাণ পেলে পরীক্ষা বাতিল আর না পেলে ঘণ্টা! প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা যদি প্রমাণ খোঁজার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তো সোনায় সোহাগা। কই সচিব মহোদয় তো একবারও বললেন না, যে বিষয়ের প্রশ্ন ফাঁস হবে প্রয়োজনে সে প্রশ্ন প্রণয়ন থেকে বিতরণ পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেককে তদন্তের আওতায় আনা হবে। খুঁজে বের করা হবে দোষীদের। অথবা অন্তত এটা বলতে পারতেন পরীক্ষা গ্রহণ বা নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত উর্ধতন পাঁচজনকে বিদায় নিতে হবে। বিদায় বলতে চাকরি যাওয়া নয়, তারা নির্দোষও হতে পারেন! তাই ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের কোন সমমর্যাদার নিষ্ক্রিয় পদে বা ওএসডি করা হবে। তা না করে হুমকিতে ফেললেন ২০ লাখ পরীক্ষার্থী ও তাদের পরিবারকে। শিক্ষামন্ত্রী হঠাৎ করে ঘোষণা দিলেন সব কোচিং বন্ধ থাকবে পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত। কোচিং সেন্টার তো একটা প্রতিষ্ঠান, সে নিজে তো কিছু করে না। যদি প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকে তো সেটি থাকে এর পরিচালক বা শিক্ষকেরা। আপনার কি ধারণা কোচিং সেন্টার বন্ধ বিধায় প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ওদের কেউ সাধু, সন্ন্যাসী বনে যাবে? ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ কি খুব কঠিন, এই সময়ে? বরং প্রথম থেকে নিউ টেন, একাদশ-দ্বাদশ ও এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষার্থী, ক্যারিয়ার বিষয়ক বা পিএসসি কোচিং করছিল যারা তাদের কথা ভাবুন, তাদের প্রতিক্রিয়া ভাবুন। এই কোচিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষকতা করে সারাদেশে অন্তত দশ হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী পড়ার ব্যয় নির্বাহ করত। তাদের কথা কি বিবেচনায় ছিল? আপনি ফেসবুক বন্ধ রাখার কথা বলেছেন। ফেসবুক তো নিজে প্রশ্ন ফাঁস করে না। বড়জোর এটি ফাঁসকৃত প্রশ্ন সহজে, দ্রুত ছড়িয়ে যাবার একটি মাধ্যম মাত্র। উৎস থেকে প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হলে তা ফেসবুকে আসার কোন কারণ নেই। আর ফেসবুকের বাইরে হাজারও এ্যাপ তো আছেই। মাননীয় মন্ত্রী, আমরা বিশ্বাস করি আপনি যা বলেছেন তা সৎ উদ্দেশ্যে আন্তরিক হয়েই বলেছেন। কিন্তু বিষয়গুলোর সার্বিক প্রতিক্রিয়া বিবেচনায় ছিল কি? কোচিং বন্ধ রেখে প্রশ্ন ফাঁস কি ঠেকানা গেছে? বরং এই বন্ধের প্রতিক্রিয়া সরকারের পক্ষে যায়নি সেটি নিশ্চিত। পুজিবাদী সমাজ ব্যবস্থায় শিক্ষা যেখানে পণ্য সেখানে কোচিং এক বাস্তবতা। এও সত্যি, সব কোচিং সেন্টার কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত নয়। তারা কেন লোকসান গুনবেন? মুষ্টিমেয়ের অপরাধে সমষ্টিকে শাস্তি পেতে হবে এ কোন বিধান? জাতীয় স্বার্থে তাও মানা যেত যদি প্রশ্ন ফাঁস বন্ধ হতো। তা যখন হয়নি তখন ভুল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংশোধন করে কোচিংগুলো খুলে দিন। ঢালাও ভাবে শিক্ষক, অভিভাবক, কোচিং সেন্টার, ফেসবুক, মোবাইল এদের দোষারোপ না করে সুনির্দিষ্ট সমস্যা চিহ্নিত করে কাজ করুন। আপনার মন্ত্রণালয়কে বলুন গত কয়েক বছর প্রশ্নফাঁসের যে অভিযোগগুলো এসেছে তা কিভাবে নিষ্পন্ন করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের কী শাস্তি হয়েছে অথবা বিচার কোন পর্যায়ে আছে তা দেখুন। তাদের আইনানুগ সাজার বিষয়টি নিশ্চিত করুন। মনে রাখবেন, একটি দৃষ্টান্ত শত হুঙ্কারের চাইতে কার্যকর। চলবে... লেখক : সাংবাদিক
×