ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফিরে দেখা

প্রকাশিত: ০৩:৩৯, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ফিরে দেখা

২০ টাকা দাও ভালবাসা নাও শরীফুল ইসলাম ॥ ১৪ ফেব্রুয়ারি, বুধবার, বিকেল ৩টা। গুলিস্তানগামী শতাব্দী সিটিং সার্ভিসের একটি বাস রাজধানীর বনানী এলাকা অতিক্রম করছিল। এ সময় সুসজ্জিত এক সুন্দরী হিজড়া নারী বাসে উঠে প্রথমেই সবাইকে ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা জানায়। এক পর্যায়ে সে বাসটির পেছন দিক থেকে অর্থসংগ্রহ শুরু করে। যাত্রীদের কাছে অর্থসংগ্রহ শুরুর আগে সে হাসতে হাসতে বলতে থাকে ‘২০ টাকা দাও ভালবাসা নাও’। এ সময় কোন কোন যাত্রী ১০ টাকা করে দিতে চাইলে সে তা প্রত্যাখ্যান করে আবারও হেসে হেসে বলতে থাকে : আজ ভালবাসা দিবস তাই অন্য দিনের মতো আজ ১০ টাকা নেব না। আজ আমাকে সবাই ২০ টাকা করেই দিতে হবে। বিশ্রী রশিদ মামুন ॥ সম্প্রতি দেশের বিদ্যুত সাশ্রয়ী প্রচারের জন্য ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স (এফইআরবি) এবং বাংলাদেশ সোলার এ্যান্ড রিনিউএ্যাবল এনার্জি এ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রীর জ¦ালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম। বক্তৃতা দিতে গিয়ে নবায়নযোগ্য জ¦ালানি কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনকে উদ্দেশ করে বলেন, হেলাল, তোমার সংগঠনের নাম বিশ্রী হয়ে গেছে। এটা পরিবর্তন করতে হবে। প্রধান অতিথির এই বক্তব্যের পর সারা হলে হাসির রোল ওঠে। হেলাল উদ্দিন সঙ্গে সঙ্গেই বলে ওঠেনÑ স্যার, বদলে দেয়া হবে। বোর্ডে পাস হয়ে গেছে। সংগঠন গঠন করার সময় উদ্যোক্তাদের আরও যতœবান হওয়া উচিতÑ কেউ কেউ এই সংগঠনকে বিশ্রা বলেও ডাকছে। আর উপদেষ্টা তো বললেন বিশ্রী। শুরুর আগেই খ-প্রলয় শেষ! রুমেল খান ॥ ঘটনাটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের। তারিখ মনে নেই। ঢাকায় বেশ গরম পড়েছে। প্রাণ ওষ্ঠাগত, জনজীবন অতিষ্ঠ। তারপর রাতে লোডশেডিং হলে সুখনিদ্রার ব্যাপক ক্ষতি। মন-মেজাজ হয়ে থাকে খিটখিটে, তিরিক্ষে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় পরের দিন বিভিন্ন কাজকর্মে। তেমনই একটি ঘটনার কথা বয়ান করব এখানে। একটি পারিবারিক কাজে এক আত্মীয়কে নিয়ে সকালে গেছি সেগুনবাগিচায়। কাজ শেষ করতে করতে দুপুর। মুগদাপাড়া যেতে রিকশা ভাড়া করেছি। বিজয়নগর-কাকরাইল মোড় দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কাকরাইল মোড়ে পৌঁছানোর আগেই ঝামেলায় পড়ে গেলাম। তীব্র যানজটে জান অস্থির। সেই সঙ্গে যোগ হলো তীব্র ভ্যাপসা গরম। আমাদের রিক্সাওয়ালা চেষ্টা করল ফাঁকফোকর বের করে তার মধ্যে দিয়ে চলতে। কিছুদূর গেলেও একটু পরেই গোল বাধল, সে আরেকটি রিক্সাকে পেছনে ফেলতে গিয়ে চাকার সঙ্গে ‘গিট্টু’ লাগিয়ে দিল! অপর রিক্সাওয়ালা দিয়ে বসল গালি! আর যায় কোথায়- আমাদের রিক্সাওয়ালা লাফিয়ে নেমে ছুটে গেল অপর রিক্সাওয়ালার কাছে। তার শার্টের কলার ধরে ঘুষি মারতে গেল। সঙ্গে খিস্তি-খিউরি ফ্রি! অপর রিক্সাওয়ালা এক ঝটকায় নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রাস্তার ফুটপাথে পড়ে থাকা একটি পাথরের খ- তুলে নিল। সেটি নিয়ে এবার তার আক্রমণের পালা। পুরো বিষয়টি ঘটে গেল প্রায় বিশ সেকেন্ডের মধ্যেই। এদিকে এই ‘খ-প্রলয়’ দেখে আশপাশে থেমে থাকা রিক্সাওয়ালা, রিক্সাযাত্রী এবং বাসযাত্রীরা দারুণ পুুলকিত! চেঁচিয়ে তারা সমানে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে, ‘লাগ! মার! দে ঘুষি!’ কিন্তু দুই রিক্সাওয়ালা এগুলোর কিছুই করতে পারল না। কারণ, জ্যাম ছুটে গেছে, মারামারি আপাতত মুলতবি করে রিক্সায় বসে দ্রুত প্যাডেল মারতে বাধ্য হলো তারা। ফলে উপভোগ্য দ্বৈরথের বিনাশ ঘটল অঙ্কুরেই। শুরুর আগেই এই খ-প্রলয় শেষ হয়ে যাওয়াতে ব্যাপক আফসোস করতে দেখলাম আশপাশের দর্শককে। আমার রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞেষ করলাম, ‘ওই মিয়া, মারামারি খেলায় কে জিতল, কিছুই তো বুঝলাম না!’ ব্যঙ্গাত্মক বাক্যটি হজম করে রিক্সাওয়ালার জবাব, ‘আর কইয়েন না। রাইতে ভালা ঘুম হয় নাই। তাই অল্পতেই মেজাজ খারাপ হইয়া গেছিল। ধৈর্য ধরবার পারি নাই!’ [email protected]
×