ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

জাতির গলার ফাঁস

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জাতির গলার ফাঁস

প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন জাতির গলার ফাঁসে পরিণত হয়েছে। কোনভাবেই যেন প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ করা যাচ্ছে না। কিছুদিন আগেও এমনিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো না। বলা হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, প্রেসের লোকজন সবাই জড়িত। ফলে একপক্ষকে থামানো গেলেও অন্যপক্ষ প্রশ্নফাঁস করে দেয়। আগে যোগাযোগমাধ্যম কম ছিল। এখন অনেক মাধ্যম। মাধ্যমগুলো সহজলভ্য। তাই খুব দ্রুত ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ে। ভাল ছাত্রছাত্রীদের মন খারাপ হয়। ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র তাদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়। জাতির সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্নপত্র কারা করে, কারা নির্বাচন করে, কোথায় ছাপা হয়, কিভাবে তা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে, কে বা কারা এই পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রয়োজনে গোয়েন্দা লাগিয়ে কুচক্রীদের বের করতে হবে। প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে পরীক্ষার আগ মুহূর্তে ছাত্রছাত্রীদের হাতে পৌঁছা এই পুরো চেইনের মধ্যে মূল অপরাধী রয়েছে। শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর। পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে, তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। কিছু অপরাধীদের গ্রেফতারও করা হয়েছে বিভিন্ন সময়। প্রশ্ন হলো, তাদের উপযুক্ত বিচার হয়েছে কি? দৃষ্টান্তমূলক বিচার হয়নি। ফলে অপরাধীরা সতর্ক হয়নি। কঠিন থেকে কঠিনতর শাস্তি দরকার। অপরাধী সহসা পাড় পেয়ে যায়। যে কারণে অপরাধ কমেনি। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীদের কঠিন সাজা দিতে হবে। ওপরে আমি যে কথাগুলো বললাম। তার একটিও সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি? কাজ হচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে। কোন ধারাবাহিকতা নেই। পরিকল্পনা নেই। একদিনে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে টকশো হচ্ছে। করা হচ্ছে একে অপরকে দোষারূপ। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের সর্বনাশ হচ্ছে। অল্প কিছু মানুষ। তারা যে খুব ক্ষমতাবান তাও নয়। এই মানুষগুলো শিক্ষার গোটা পরিবেশকে দূষিত করছে। বায়ু দূষণের প্রভাব কাটিয়ে উঠা যায়। তবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের দূষণ কাটানো যায় না। বার বার মানুষ এসএসসি, এইসএসসি পরীক্ষা দেয় না। একবারই দেয়। সেটা যদি ফাঁসকৃত প্রশ্নে হয়। তাহলে তার শিক্ষাজীবনের কিই বা দাম রইল? প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যাদের জড়িত হওয়ার নাম আসছেÑ তারা কেউই প্রভাবশালী ব্যক্তি নয়। রাজনৈতিক বলয়ের, ছত্রছায়ার লোক নয়। তবুও সরকার এদের সঙ্গে কেনই বা পেরে উঠছে না সেটাই প্রশ্ন। টাকা দিয়ে যেসব অভিভাবক প্রশ্নপত্র কিনেন। তারাই বা কেমন অভিভাবক? কেন তারা ছেলে মেয়ের শিক্ষা জীবনকে দূষিত করছেন? নিজেদের পায়ে কেনই বা নিজেরা কুড়াল মারছেন? বিবেক, ভাল-মন্দ বোঝার ক্ষমতা এত লোপ পেলে চলে? অভিভাবক নামের এরা কলঙ্ক। এদের চিনে পুলিশে ধরিয়ে দিতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীরা কিভাবে লুকিয়ে থাকে সেটাই প্রশ্ন। বানারীপাড়া, বরিশাল থেকে
×