ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হবিগঞ্জে দখল ও উচ্ছেদ নিয়ে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০২:৩৭, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

হবিগঞ্জে দখল ও উচ্ছেদ নিয়ে পুলিশ-গ্রামবাসী সংঘর্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ ॥ বিতর্কিত সরকারী লীজকৃত জমি দখল ও গৃহ নির্মাণ দখল করা নিয়ে বুধবার দুপুরে হবিগঞ্জের উপজেলা বাহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামে দু’দল সশস্ত্র লোকের মধ্যে ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ,পুলিশের টিয়াসেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষনের ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত দেড় শতাধিক লোক। তন্মধ্যে গুরুতর আহত সংশ্লিস্ট গ্রামের বাসিন্দা ও আলোচিত চার শিশু হত্যাকান্ডের শিকার স্কুল ছাত্র মনিরের পিতা আব্দাল মিয়া (৩৫) ও একই গ্রামের হাবিবুল্লাহ (২৮) কে জনকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল এবং সংশ্লিস্ট গ্রামের রেনু, সোহেল, বিলাল, কদ্দুছ ও মোজাম্মেলকে সংশ্লিস্ট উপজেলা সহ অন্যান্যদেরকে নানা চিকিৎসালয়ে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া মুমূর্ষু অবস্থায় গুলিবিদ্ধ ইদ্রিছ আলীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করা হয়েছে। জানা গেছে, কর্তব্যরত ডাক্তারগণ বলেছেন তার অবস্থা সংকটাপন্ন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীগণ জানান, ওই গ্রামের পাশে সরকারী পতিত পাহাড়ী বির্তর্কিত টিলা রামপুর চা-বাগান কর্তৃপক্ষ লীজ নেন। এ খবর পেয়ে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের লোকজনের একটি অংশ আগের দিন মঙ্গলবার রাতে টিন দিয়ে গৃহ নির্মাণ করে তৎসংশ্লিস্ট ভূমিটি দখল করে নেন। এদিকে বাগান কর্তৃপক্ষ র্যাব-৯ ও স্থানীয় পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে বুধবার দুপুরে সংশ্লিস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নের্তৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে দখলদার গ্রামবাসীদের একাংশকে সরে যেতে বলেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে বরং লোকজন স্ব স্ব কাগজপত্র হাতে নিয়ে ওই টিলাকৃত ভূমি তাদের বলে নিশ্চিত করতে চান। তবে ইউএনও তা আমলে না নিয়ে তার সিদ্ধান্তেই অটল থাকে। ফলে সশস্ত্র লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনও সহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলে পড়ে। এমতাবস্থায় পুলিশ পাল্টা এ্যাকশনে গেলে শুরু হয় গ্রামবাসী একাংশ সশস্ত্র লোকজন ও পুলিশের মধ্যে ভয়াবহ সংর্ঘষ। একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচেছ, এমন ভাবনা থেকেই পুলিশ প্রথমে অন্তত অর্ধ শতাধিক টিয়ার সেল নিক্ষেপ ও শর্টগানের গুলি ছুড়লে উল্লেখিত লোকজন আহত হয় এবং অনেকেই ছত্রভঙ্গ হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এদিকে সংশ্লিস্ট গ্রামের জনৈক শাহজাহান মিয়া উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ওই টিলা তাদের। ফলে আমরা আমাদের বৈধ কাগজপত্র দেখাতে চেয়েছি। এছাড়া আমরা বাগান কর্তৃপক্ষের পক্ষে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে বললেও ইউএনও জসিম উদ্দিন নাকি তাতে কর্ণপাততো দুরের কথা বরং কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতেই রাজী হননি। অন্যদিকে ইউএন জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, এই টিলা নিয়ে বিরোধ অবস্থানের প্রেক্ষিকে কয়েকবার সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। এমনকি ৮ একর জায়গা তাদেরকে দেব বলে ঘোষনা দেয়া হলেও তারা এই ভূমি থেকে সরে আসছে না। এমনকি তারা সরকারী ভূমিতেই গৃহ নির্মাণ করেছে। এদিকে উক্ত সংর্ঘষের পর সংশ্লিষ্ট গ্রামের উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত টহলে রয়েছে।
×