ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

রফিক আজাদের জন্মদিনে প্রকাশনা ‘গদ্যের গহন অরণ্যে’

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রফিক আজাদের জন্মদিনে প্রকাশনা ‘গদ্যের গহন অরণ্যে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবিতা লিখলেও নিজেকে কৃষক বলেই দাবি করতেন কবি রফিক আজাদ। কবিতার আশ্রয়ে বলেছেন মাটি, মানুষ, উদ্ভিদ ও জনজীবনের কথা। ষাটের দশকের উজ্জ্বলতম এই কবি চলে গেলেও টিকে আছে তার কবিতা। আজ বুধবার একুশে পদকপ্রাপ্ত মৃত্তিকাসংলগ্ন এ কবির জন্মদিন। আর মঙ্গলবার উদযাপিত হলো তার ৭৭তম জন্মবসন্ত। জন্মদিনের সে আয়োজনে প্রয়াত কবি যেন হাজির হলেন নতুন রূপে। প্রকাশিত হলো তার গদ্যরচনার সংকলন ‘গদ্যের গহন অরণ্যে’। এদিন বিকেলে রফিক আজাদের ধানম-ির বাসভবনে গ্রন্থটির পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কবির সহধর্মিণী দিলারা হাফিজ ও পিয়াস মজিদ সম্পাদিত গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে চিত্রা প্রকাশনী। গ্রন্থটির পাঠোন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। শ্রদ্ধা সঙ্গীত পরিবেশন করেন কাজল মুখার্জী ও তালাত সুলতানা। স্বাগত বক্তব্য দেন কবি মুহাম্মদ সামাদ। রফিক আজাদের সাহিত্যকর্ম বিষয়ে মুখ্য আলোচকের বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান। কবির জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে স্মৃতিচারণ ও আলোচনায় অংশ নেন চিত্রশিল্পী হাশেম খান, কবি আসাদ চৌধুরী, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, অসীম সাহা, তারিক সুজাত, ফেরদৌস নাহার, পিয়াস মজিদ ও কবিপুত্র অভিন্ন আজাদ। প্রকাশকের বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিত্রা প্রকাশনীর প্রকাশক খোরশেদ বাহার। কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন পীযূষ বন্দ্যাপাধ্যায় ও অন্যান্য বাচিকশিল্পী। কবির গদ্য থেকে পাঠ করেন নীরু শামসুন্নাহার। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কবি রফিক আজাদ স্মৃতি পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক দিলারা হাফিজ। সভাপতিত্ব করেন স্মৃতি পর্ষদের সভাপতি কবি রবিউল হুসাইন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আপাদমস্তক কবি ছিলেন রফিক আজাদ। তার জীবনযাত্রার মধ্যে কবির বেহিসেবি ব্যাপারটা প্রবলভাবেই প্রকাশ পেয়েছিল। এমনও হয়েছে এক রাতে তিনি ১২টি কবিতা লিখেছেন। তার মধ্যে পাঁচটি কবিতা পড়ে শামসুর রাহমানের রহমান তাকে অভিনন্দিত করেছিলেন। এই যে কবির আত্মপ্রকাশের ক্ষমতা সেটি খুব উল্লেখযোগ্য। রফিক আজাদকে আমরা অকালে হারিয়েছি কিন্তু আমরা জানি যে, রফিক আজাদের নাম কখনও আমাদের সাহিত্য জগত থেকে হারিয়ে যাবে না। অধ্যাপক রফিক উল্লাহ খান বলেন, একজন কবির কবিতা মূল্যায়ন করতে গিয়ে আমার মূল্যায়ন হলোÑ কবির কবিতার আলোচনা শেষ হয় না। এই ষাটের দশকের কবিরাই উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে বড় একটা রূপ নিয়ে আত্মপ্রকাশ করলেন। তারাই আবার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করলেন। মুক্তিযুদ্ধোত্তর কবিরা কিন্তু ষাটের দশকের এই কবিদের ধারে কাছেও আসতে পারেননি। সেই সময়ের সামাজিক অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা, মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাÑ এগুলো কিন্তু আমাদের কবিদের অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছে। তারা সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।’ অনুষ্ঠানের শুরুতে গান পরিবেশন করেন কাজল মুখার্জী ও রফিক আজাদের পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠানে কবি রফিক আজাদ স্মৃতি পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক কবি পতœী দিলারা হাফিজের কথায় উঠে আসে কবি রফিক আজাদকে নিয়ে এই স্মৃতি পর্ষদ গঠনের গল্প। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমি ঠিক তার সহধর্মিণী হিসেবে নয়, একজন ভক্ত হিসেবে এই সংগঠনটি দাঁড় করানোর চিন্তা করেছিলাম। অনেকে তাকে নিয়ে অন্যান্য অনুষ্ঠান করবে। কিন্তু এই সংগঠন প্রতিবছরই তার জন্মবার্ষিকী পালন করবে।’ তিনি কবি রফিক আজাদের বাড়ির সামনের রাস্তাটিকে কবির নামে নামকরণ করারও আহ্বান জানান। এদিকে আজ বুধবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে কবির সমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করবে স্মৃতি পর্ষদ ও কবি পরিবার। পঞ্চকবির গানের সঙ্গীতসন্ধ্যা সুরের স্বজন ॥ মঙ্গলবার বসন্তের প্রথম দিনের সন্ধ্যায় পঞ্চকবির গানের সুরে সিক্ত হলো শ্রোতারা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত সুরের স্বজন শীর্ষক এ সঙ্গীতসন্ধ্যায় গান শোনালেন ভারতের দুই কণ্ঠশিল্পী সাহানা বক্সী ও সৌমী ভট্টাচার্য্য। একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সঙ্গীতসন্ধ্যার শুরুতেই আলোচনা করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি ও একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি সচিব ইব্রাহীম হোসেন খান। বিশ্ব বেতার দিবস উদ্্যাপন ॥ মঙ্গলবার ছিল বিশ্ব বেতার দিবস। এ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় বেতার ভবন প্রাঙ্গণে দিন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠিত হয় শ্রোতা সম্মেলন। এ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক নারায়ণ চন্দ্র শীলের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বেতারের উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) হোসনে আরা তালুকদার। সকালে তথ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় বেতার ভবন থেকে বের হয় বিশ^ বেতার দিবসের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ। একুশের অনুষ্ঠানমালার ষষ্ঠ দিন ॥ ভাষা শহীদদের নিবেদিত গান, কবিতাসহ বহুমাত্রিক পরিবেশনায় প্রাণের প্রবাহ বইছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। একুশের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ো সেøাগানে এখানে চলছে একুশের অনুষ্ঠানমালা। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত দুই সপ্তাহব্যাপী এ অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ দিন ছিল মঙ্গলবার। বসন্ত সমীরণে বর্ণিল পোশাকে অসংখ্য মানুষ বিকেল থেকে রাত অবধি চলা অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন। পরিবেশিত হয় নৃত্য গীত, কবিতা ও পথনাটক। দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে মরমী লোকগীতি শিল্পীগোষ্ঠী।
×