ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার কারামুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খালেদার কারামুক্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদ- পাওয়া বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়টি এখন সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। কারাবাস প্রলম্বিত হবে কি না, সেটা আদালত সিদ্ধান্ত দেবে। এ বিষয়ে সরকার কোন হস্তক্ষেপ করবে না। মঙ্গলবার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের জোয়ার সাহারা এলাকায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে গেলে আমরা খুব খুশি হবো, আমাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক কিছু হবে- এটা ঠিক না। আমরা একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন চাই। সেজন্য বিএনপির থাকা দরকার। আমি চাই না বিএনপি ভাঙ্গুক। বিএনপি প্রধানের মামলার আপীলের সুযোগ আছে। হাইকোর্ট আছে, আপীল বিভাগ আছে, রিভিউ আছে। বিচারিক আদালতে যে রায় হয়েছে সেটা তো নাও থাকতে পারে। আদালত যদি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন, সেখানে আমাদের তো কোন অসুবিধা নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, হাইকোর্টে আপীল করলে জামিন দিলে তো তিনি বাহিরে থাকবেন। এখন সেটা তো আদালতের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে। তবে সরকার এ ব্যাপারে আগেও কোন হস্তক্ষেপ করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। ‘সরকারের কারণে রায়ের কপি পেতে বিলম্ব হওয়ায় আপীলেও দেরি হচ্ছে’ মর্মে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের এমন অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এর জবাব তো আদালতই দেবে, সরকার এ জবাব দেবে কেন? খালেদা জিয়ার রায়ের বিরুদ্ধে বিএনপি দুর্বার আন্দোলনের হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি সেটা পারবে না। কারণ মানুষ এখন নির্বাচনে মুডে চলে গেছেন। এখন আর আন্দোলনের মুডে জনগণ নেই। তিনি বলেন, বিএনপির আন্দোলনের হাঁকডাক যেভাবে দেয়, সেখানে জনগণ সাড়া না দিলে তো কোন আন্দোলন হবে না। তাদের নেতারাই তো মাঠে আসেন না। বেগম জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে তাদের কয়জন নেতা মিছিল মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন, তা খবর নিয়ে দেখুন। তিনি বলেন, বিএনপি নেতারা আন্দোলন ডেকে এয়ার কন্ডিশন্ড রুমে বসে থাকেন, আরাম আয়েশে দিন কাটান, মাঝে মধ্যে পুলিশের গতিবিধির খবর নেন। তাহলে আন্দোলন কীভাবে সম্ভব। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি বিএনপির সময়ে, আমাদের নেতারা রাজপথে ছিলেন। এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র, হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কেউ নেই। বিএনপি নেতারা ভেবেছিলেন বেগম জিয়া কারাগারে গেলে লাখ লাখ লোক রাস্তায় নেমে আসবে। ওই আগে সিপাহী জনতা জেগে উঠো, তারা মনে করেছিল এখনও দেশে সেই অবস্থা আছে। কিন্তু শত শত লোকও রাস্তায় নামেনি। তারা আন্দোলন করবে কী করে। নয় বছর তারা বারবার ডাক দিয়েছে, জনগণ সাড়া দেয়নি। আগামীতেও দেবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় সহজ জয় পাওয়া আওয়ামী লীগ এবার আর সেই পরিস্থিতি চায় না উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বিএনপির মতো একটা প্রতিদ্বন্দ্বী দল চাই। নির্বাচন তো অনেকেই করবে। বিএনপি একটি বড় দল। আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুক এবং নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হোক। আর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মজা না থাকলে নির্বাচনে মজা নেই। খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি নেতাদের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি একবার বলছে যে কোন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে যাবে। আবার বলছে বেগম জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এখন তারাই বলতে পারে কোনটা সঠিক। বিএনপির ভাঙ্গার আশঙ্কা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি চাই না বিএনপির মতো একটা বড় দল ভেঙ্গে যাবে এবং সেই চেষ্টাও আমরা করি না। তবে বিএনপি ভাঙ্গার জন্য বিএনপি নিজেরাই দায়ী। বিএনপির সঙ্কট আমরা কেন ঘনীভূত করব? বিএনপির অভ্যন্তরীণ সঙ্কট ঘনীভূত করার জন্য তারেক রহমানই যথেষ্ট। আরেক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে হামলাকারী বিএনপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করছে।
×