ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠক

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের কাছে রোহিঙ্গা সঙ্কটের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি। নিরাপত্তা পরিষদের তিন স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ছাড়াও অস্থায়ী পাঁচ সদস্য সুইডেন, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, কাজাখস্তান ও গিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে এ বৈঠক ডাকে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে এই বৈঠক শুরু হয়। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৈঠক চলছিল। নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতি দেয়ার প্রায় তিন মাসের মাথায় এই বৈঠক ডাকা হয়েছে। এর আগে একই ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে বেশ কয়েক দফা রুদ্ধদ্বার ও প্রকাশ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে জাতিসংঘের অপর দুই স্থায়ী সদস্য চীন ও রাশিয়ার বিরোধিতার কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। এছাড়া জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) উত্থাপিত প্রস্তাব আলোচনার পর বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। এতে মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের একজন বিশেষ দূত নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়। এই বিশেষ দূত নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেটও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর আগের একটি বৈঠকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর লাগাম টেনে ধরে রোহিঙ্গাদের তাদের আবাসে ফেরার পথ সুগম করার আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছিল জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবের নৈতিক প্রভাব থাকলেও আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ যে কোন পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে। আর এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন দুই সদস্য চীন ও রাশিয়া। সম্প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের এক আলোচনায় বাংলাদেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভেটো প্রদানে বিরত থাকার জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। চীন ও রাশিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিকীকরণের পরিবর্তে মিয়ানমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের জন্য বাংলাদেশকে উৎসাহিত করে আসছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করলেও বাংলাদেশ বারবার বলে আসছে, আন্তর্জাতিক চাপ সরে গেলে মিয়ানমার তা বাস্তবায়নে গড়িমসি করবে। এ কারণে বাংলাদেশ জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সব ফোরামেই মিয়ানমারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাবাসনের সার্বিক প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরের সম্পৃক্ততা চায় সরকার। তবে ইউএনএইচসিআরকে এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার ক্ষেত্রে মিয়ানমারের আপত্তি রয়েছে।
×