ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শেখ হাসিনার শিক্ষা উন্নয়ন চিন্তা-চেতনা

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শেখ হাসিনার শিক্ষা উন্নয়ন চিন্তা-চেতনা

দেশের বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শিক্ষা সমাবেশ’ গত ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ২০৪০টি কলেজের অধ্যক্ষ এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে তার অধিকতর গুরুত্ব আরোপের কথা ব্যক্ত করে ১৯৯৬ সালে তিনি যখন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ও তৃতীয়বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে যে গুরুত্বের সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সে বিষয়ে আলোকপাত করেন। শেখ হাসিনার শিক্ষা ভাবনায় এদেশে বৈশ্বিক মানদ-ে দক্ষ ছাত্রছাত্রী তৈরি আর কর্ম উপযোগী শিক্ষা প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোকপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, শিক্ষকরা আওয়ামী লীগের ওপর তাদের আস্থা ও ভরসা অক্ষুণœ রাখতে পারে কেননা এটি বাংলাদেশের বৃহত্তর অথচ একমাত্র জনকল্যাণমুখী রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের দর্শনে মাননীয় গুণাবলীর সমাবেশ ঘটিয়ে চলেছে। উন্নতমানের শিক্ষাব্যবস্থা যেটি কিনা বর্তমান সরকারের মৌলিক ইচ্ছা সে কথা বলে, প্রধানমন্ত্রী জানান যে, শিক্ষার উন্নয়ন এটি ক্রমাগত বিবর্তনের মাধ্যমে ঘটে থাকে। বস্তুত পরিবর্তনশীলতার মাধ্যমের সঙ্গে যুগোপযোগী ও বৈশ্বিক মানদ-ে এদেশের গ্রহণযোগ্য একটি শিক্ষার মডেল গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। সরকারপ্রধানের দিক থেকে এ ব্যাপারে নানা উৎসাহ ও দিকনির্দেশনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হচ্ছে। তবে এখনও প্রদেশের উপযোগী ন্যাশনাল এডুকেশনাল ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবিদরা কোন এক অজ্ঞাত কারণে কিংবা আমলতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ঘূর্ণাবর্তে রয়ে গেছেন। সরকারের ইচ্ছাকে যারা বাস্তবায়নে ট্রাফিক জামের সৃষ্টি করে ভাবছে আমরা বর্তমানে কমফোর্ট জোনে (ঈড়সভড়ৎঃ তড়হব) আছি- তারা আসলে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের মহাসড়কের যাত্রাপথে বাধা দিচ্ছে বলে অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়। শিক্ষকদের উন্নয়নের কারিগর হিসেবে চিহ্নিত করে জননেত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন যে, মানবিক গুণাবলী সমৃদ্ধ, দেশের প্রতি মমত্ববোধসম্পন্ন ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িকতার আদর্শে ভরপুর শিক্ষা বৈশ্বিক মানদ-ে উন্নয়নের পথকে প্রশস্ত করে থাকে। তার এ বক্তব্য অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত। আধুনিক শিক্ষাকে কার্যকরী করতে গেলে অবশ্যই মানবিক গুণাবলী সমৃদ্ধ শিক্ষা পদ্ধতি ও পাঠ-প্রদানের ব্যবস্থা শিক্ষকরা করতে পারেন। বস্তুত শিক্ষা ক্ষেত্রে যদি ন্যায়, সত্য ও সুন্দরের উপযোগী শিক্ষা পরিবেশ গড়ে তোলা না যায় তার সিংহভাগ দায়ভার কিন্তু গুটিকয়েক শিক্ষকের কারণেই ঘটে থাকে। এ গুটিকয়েক শিক্ষকের জন্য সমাজ জাতির কেবল ক্ষতি হয় না বরং দেশের ইমেজ বিদেশে নষ্ট হয়। ইতোপূর্বে পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, এদেশের একশ্রেণীর কুলাঙ্গার যারা আসলে ভুলক্রমে শিক্ষা পেশায় এসেছে তারা বীজ বপন করেছিল জঙ্গীবাদের। এ ধরনের ঘৃণিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী ছিল। ধামাচাপা দিলে সেটি হয় বিচারহীনতার সংস্কৃতি কেবল নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে। দু’জন অথচ মুষ্টিমেয় শিক্ষকের কারণে দেশের সম্মানহানি ঘটে এবং বর্তমান সরকারের সদিচ্ছাকে তারা বিভিন্নভাবে অপপ্রয়োগ করে থাকে। শেখ হাসিনা তার সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতায় উল্লেখ করেন যে, বর্তমানে তার সরকারের প্রচেষ্টায় বহু কারিগরি ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে যার মধ্যে রয়েছে মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়, ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল ও ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়। বস্তুত উন্নততর শিক্ষার প্রয়োগ, প্রায়োগিক কৌশল, বিস্তার সাধন তার সরকারের আন্তরিকতার ফসল। এ সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে কেবল জিডিপি বরাদ্দ দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি বরং বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প বিশ্বব্যাংক ও এডিবির আওতায় দেশে এনেছেন-শিক্ষা নানামাত্রিকভাবে উন্নত করার প্রয়াস নিয়েছে। তবে কিছু কিছু নৈতিকতাবিহীন শিক্ষক রয়েছেন যারা গিরগিটির মতো রং পাল্টান-সত্যকে অবলীলায় মিথ্যা বলে চালান করে নিজের আখের গোছান। এদের দ্বারা আর যাই হোক বর্তমান সরকারের সাধারণ প্রয়াস ক্ষুণœ হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। অন্যায়কারী শিক্ষকরা পার পেয়ে বরং এক ধরনের অন্যায্য জোট গ্রহণ করে ছোবল দেয়ার প্রয়াসে আপাতত নির্বিষ হিসেবে বসে থাকেন। এদের শিক্ষক বলতে ঘৃণা হয়- বরং এরা ধর্ম ব্যবসায়ীদের চেয়েও অনেক ভয়ঙ্কর শিক্ষক ব্যবসায়ী। আর যেহেতু কিছু কিছু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ এ বেনিয়ারা লুণ্ঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত আর সঙ্গে রয়েছে তথাকথিত সুশীল সমাজের একটি কুশীল গোত্র এদের সঙ্গে আঁতাত করে ওই শিক্ষা ব্যবসায়ীরা বহাল তবিয়তে বিদ্যমান। এদের সঙ্গে আবার প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যুক্ত হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করে। অথচ উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নে বর্তমান সরকারের যে বহুবিধ পন্থা রয়েছে তা প্রশংসনীয়। জননেত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন সেশনজ্যাম নেই এবং ২০২১ সাল পর্যন্ত তারা তাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে। এটি একটি শুভ লক্ষণ। এককালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ভয়ঙ্কর সেশনজ্যাম তথা ট্রাফিক জ্যাম ছিল তা বর্তমান উপাচার্যের আমলে বিদূরিত হয়েছে জেনে ভাল লাগল। বর্তমান দেশে ডিজিটালাইজেশনের এ যুগে সর্বত্র যখন তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে শিক্ষা ক্ষেত্রেও তা আরও দৃঢ়ভাবে কার্যকরী হচ্ছে। এটি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। গুগল ক্লাস রুম ও মডিউলের ব্যবহারের মাধ্যমে পাঠদান, এ্যাসেইনমেন্ট গ্রহণে শিক্ষকদের উদ্যোগী হতে হবে। আবার পরীক্ষা কার্যক্রমে এ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতিতে আধুনিক যুগোপযোগী পদ্ধতি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় ফরমেটিভ এবং সামিটিভ এ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি প্রায়োগিক কৌশল গ্রহণ করতে হবে। লেসেন প্ল্যান এমনভাবে তৈরি করা বাঞ্ছনীয় যাতে তা স্টুডেন্ট সেন্ট্রিক লার্নিং হয়। এদেশে এখন ইংরেজী ও গণিতের ভাল শিক্ষক পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে। দেশে-বিদেশে উচ্চতর শিক্ষা-প্রশিক্ষণের ওপর প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় পদার্থ বিজ্ঞানে এ ধরনের সমস্যা প্রায় একযুগ আগে ছিল বলে তারা জানান। এ সমস্যার সমাধান তারা করেন তাদের দেশের পদার্থ বিজ্ঞানের যে ভাল শিক্ষক আছেন তাদের দ্বারা অডিও-ভিডিও করে বিভিন্ন পর্যায়ে সেটি ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে। ফলে এখন আর দক্ষিণ কোরিয়ায় পদার্থ বিজ্ঞানে শিক্ষকের ঘাটতি নেই। বর্তমান সরকারের আন্তরিকতার কারণে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পগুলো সরকারের সদিচ্ছার ফসল। তবে ফসল ঘরে ওঠার আগেই যাতে বিনষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে হেকাপের অধীনস্থ আইকিউসি প্রকল্পের কথা বলা যায়। চলতি বছর এটির মেয়াদ শেষ হবে। অথচ তাড়াহুড়ো করে যেভাবে কাজ করা হচ্ছে এটি যদি ধীরে-সুস্থে ভিশন-২০২১ এর আওতায় সময় বর্ধিত করে করা যেত তবে সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভাল হতো। প্রকল্প মেয়াদ শেষ হলে কিভাবে আইকিউসি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকার এবং এর অর্থের যোগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেবে কিনা তার জন্য সুস্পষ্ট আইন জাতীয় সংসদ থেকে পাস করা দরকার। দেশে মাত্র ৬৯টি সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইকিউসির আওতায় এসেছে। অথচ সিংহভাগই কিন্তু আইকিউসির আওতায় আসেনি। যারা আসেনি তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকা দরকার। দুঃখ লাগে সরকারপ্রধানের ঐকান্তিক আগ্রহে দেশে মানসম্পন্ন উচ্চ শিক্ষার বিস্তারে আইকিউসি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন আইনগত বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে পারা যায় এটিকে কর্মসূচীতে রূপান্তর করা। জননেত্রীর কাছে অনুরোধ জানাব, আইকিউসিকে নিয়মিত কর্মসূচী হিসেবে গ্রহণের জন্য দিকনির্দেশনা দেয়া। নচেত এদেশে ভাল কাজের কদর মাঝ পথে ঝরে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকতে পারে। যারা ন্যাশনাল প্রসেসর হয়েছেন তারা যেন দেশের শিক্ষার উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা সততার সঙ্গে পালন করেন। ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজসমূহের মান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১,০৪০ কোটি টাকার প্রকল্প উদ্বোধন করেন। দেশে বর্তমানে উপযুক্ত শিক্ষক তৈরি, শিক্ষা কাঠামো গঠন, গবেষণামূলক শিক্ষার বিস্তার ঘটানো এবং শিক্ষায় আন্তর্জাতিক ও কমিউনিটি উন্নয়ন দরকার। এ জন্য সরকারের সাধুবাদ যোগ্য। এটি বাস্তবায়ন করতে হলে শিক্ষকদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সুন্দরভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করতে হবে। তবে আশা ছিল চট্টগ্রাম কলেজ পুরস্কার পাবে। কিন্তু তারা হয়ত যোগ্যতার কারণে এবার পায়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের শিক্ষা-প্রগতি ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠভাবে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। তাঁর এ নেতৃত্বগুণে দেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় মান নির্ভর করে বাজারের চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে। শিক্ষাকে যদি উন্নত দেশের পর্যায়ে নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে হয় তবে শর্ট-কাট কোন পদ্ধতি নেই। এক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে সাধনার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সরকারী-বেসরকারী উদ্যোক্তা যারাই থাকুক না কেন শিক্ষাকে কখনও ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করা ঠিক নয়। শিক্ষা গ্রহণান্তে যদি কর্ম উপযোগী মানব সম্পদ তৈরি না করা যায় তবে সমাজে তা বোঝা হিসেবে পরিগণিত হবে। বঙ্গবন্ধু দেশের মঙ্গলাকা-খায় সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শিক্ষাকে আত্মনির্ভরশীল করতে সচেষ্ট রয়েছেন। যদি এদেশে শিক্ষা ক্ষেত্রে এটি ভারসাম্যপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং করা যায় তবে তা দেশের মানব সম্পদ উন্নয়নে যাতে কাজ করে সে জন্য ন্যূনতমপক্ষে পাঁচ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা দরকার। এ পরিকল্পনাটি প্রণয়ন ও কার্যকর করা গেলে তা জননেত্রীর শিক্ষা দর্শনের বহির্প্রকাশ হবে। অনুঘটক হিসেবে শিক্ষকদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ক’দিন আগে দেখলাম পরিসংখ্যানের এক ডক্টরেট শিক্ষক ডধষফ টেস্ট সম্পর্কে জানেন না। তাকে শুদ্ধতা জানাতে গেলে দুর্ব্যবহার করলেন। সমস্যা হলো আমাদের অনেকেই একদা ভাল ছাত্র ছিলাম এ দোহাই দিয়ে যা পেয়েছি তার ওপর নির্ভর করে চলি, নিজেদের অতুলনীয় মনে করি। ভুল শিক্ষা দিলে তা কুশিক্ষার চেয়েও অধম। শিক্ষার বিস্তারের সঙ্গে মান উন্নয়ন এবং এটি পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে এগুতে হবে। তাই প্রধানমন্ত্রী যথার্থই মন্তব্য করেছেন উন্নত শিক্ষা ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। ২০০৯ থেকে যে পথ চলা তাতে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় ২০১০ সালে শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হয়। এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২০১৬ সাল থেকে শিক্ষা আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলেও এখন পর্যন্ত আর তা করা যায়নি। এদিক সরকারপ্রধানের ইচ্ছায় এ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে। তবে এটির সার্বিক কার্যক্রম এখন পর্যন্ত প্রায় এক বছর হতে চলল শুরু করা যায়নি। এদিকে ইউজিসির মর্যাদা বৃদ্ধির কথা সরকারপ্রধান ও শিক্ষামন্ত্রী ইতোপূর্বে বলেছিলেন। শিক্ষা যেমন মানুষের জীবনব্যাপী বেঁচে থাকার অবলম্বন, তেমনি দেশ ও জাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি। এ জন্যই এসডিজি-৪ এ শিক্ষা খরভব ষড়হম লার্নিংয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের মান মর্যাদা বৃদ্ধি, বেতন-ভাতাদি বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বপূর্ণ আরোপ করা হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ ও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একাদিকে যেমন বিশাল ক্যাম্পাস রয়েছে আবার তেমনি এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যা শপিংমলের ওপর স্থাপিত। প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো না থাকলে শিক্ষা দেয়া কষ্টকর। আর এ কারণেই যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো নেই তাদের ব্যাপারে উদ্যোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এদিকে ৪ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠানটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ হিসেবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ধন্যবাদার্হ। আশা করব, দেশের সর্ববৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়টি স্নাতকোত্তর ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রদানে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কেননা শিক্ষার উন্নয়ন প্রয়াসের যে ধারাবাহিকতা সেটি ধরে রাখতে হলে অবশ্যই ওহঃবমৎধঃবফ পদ্ধতিতে গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। কুশিক্ষা, অশিক্ষার বিকাশ রোধ করে সুশিক্ষার সম্প্রসারণ ঘটাতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়ন কল্পে যে সমস্ত কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে সেগুলোকে আরও সামনের দিকে বেগবান করতে হবে। শিক্ষক প্রশিক্ষণে ব্যাপকভাবে কর্মসূচী গ্রহণ বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। তবে আশার কথা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় যে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করেছে, তা কর্ম উপযোগী শিক্ষার্থী তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। শিক্ষা মানুষের জীবনে উন্নয়নের হাতিয়ার হোক- যা জননেত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষা দর্শনের বহির্প্রকাশ। তার ইচ্ছায় রাষ্ট্রের শিক্ষার মান আন্তর্জাতিকীকরণে অস্ট্রেলিয়ান কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্ক বিবেচনায় আনা দরকার এবং এটিকে বাংলাদেশের উপযোগী করে টেইলর মেইড করা দরকার। ঢাকার যে সাতটি কলেজ নিয়ে কিছু সমস্যা- তা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। এ ধরনের ক্ষেত্রে অধিক সময় ও ব্যাপ্তি প্রয়োজন। আর দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধকল্পে একটি টাস্কফোর্স গঠন করে উবপবহঃৎরষরংব পদ্ধতিতে বিভিন্ন সেটের মাধ্যমে দৈনিক ভিত্তিতে একক দায়িত্বে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা জেলাভিত্তিক করা যেতে পারে, যাতে প্রশ্নপত্র ফাঁস হলে ওই দিনের দায়িত্বে জেলায় যিনি থাকবেন তাকে বিচারের আওতায় আনা যায়। পাল্টা প্রস্তাব রাখতে পারি- ঙঢ়বহ নড়ড়শ ঊীধস-এর চালুকরণের কথা চিন্তা-ভাবনা করা। এদিকে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের র‌্যাঙ্কিংয়ের ব্যাপারে ইউজিসিকে এগিয়ে আসতে হবে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে যেহেতু গবেষণা একটি মৌলিক কর্মকা- সেহেতু জার্নাল র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বেসরকারী র‌্যাঙ্কিং নয়, বরং ইউজিসি পারে এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করতে। শেখ হাসিনা বাংলার মানুষকে ভালবেসে তাদের জীবনের মান উন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছেন। তিনি দেশকে এগিয়ে নিতে সম্ভাব্য সকল ধরনের সুযোগ সুবিধা শিক্ষা ক্ষেত্রে দিচ্ছেন। তাঁর এ সদিচ্ছাকে কাজে লাগাতে হবে- তাঁর মানবিক গুণাবলী বাংলার মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে সহায়ক শক্তি। সূর্যের আলোর মতো শেখ হাসিনা আলো ছড়াচ্ছেন তাতে দ্যুতিময় হয়ে উঠুক এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। আর যারা শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করতে চান, তারা যেন সতর্ক হয়ে যান। লেখক : অধ্যাপক [email protected]
×