ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গণতন্ত্র, ডিজিটাল এবং তথ্য অধিকারের সঙ্গে তথ্য নিয়ন্ত্রণ সাংঘর্ষিক!

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গণতন্ত্র, ডিজিটাল এবং তথ্য অধিকারের সঙ্গে তথ্য নিয়ন্ত্রণ সাংঘর্ষিক!

সম্প্রতি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারাসহ কিছু ধারা বিলুপ্ত করে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ নামের একটি আইনের খসড়ায় মন্ত্রিপরিষদ চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতে জনগণ স্মরণ করছে, পূর্বের আইন প্রণয়নের পর জনগণ বিমূঢ় হয়ে দেখেছিল, আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় নিরাপত্তাবাহিনী একের পর এক মুক্তমনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাহক, ‘৭১-এর যুদ্ধাপরাধীর বিচার দাবিকারী, গণজাগরণ মঞ্চের আয়োজক, ব্লগার, প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, তরুণদের গ্রেফতার করেছে! অথচ, এদের গ্রেফতারের আগে গণজাগরণমঞ্চের আয়োজক রাজিব হায়দার জঙ্গী মৌলবাদীদের চাপাতির আঘাতে খুন হয় নিজ বাড়ির সামনে! এর পর খুন হয় গণজাগরণ মঞ্চের তরুণদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এক নিরাপত্তাকর্মী পুলিশ! আক্রান্ত হয় আরও দু’জন ব্লগার! গণজাগরণমঞ্চে প্রায় প্রতিদিন মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উজ্জীবিত লাখ লাখ নারী,-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, বৃদ্ধ-যুবক-শিশু উপস্থিত হয়ে জয়বাংলা সেøাগানে, খুনী যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চেয়ে সৃজনশীল নানা স্লোগানে শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরকে প্রকম্পিত করছে। তখন মৌলবাদীরা তাদের অস্তিত্ব লুপ্ত হবার শঙ্কায় ৫ মে (২০১৩) ঢাকায় শাপলাচত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে সমাবেশের আয়োজন করে। ঢাকাবাসী, দেশবাসী, দুনিয়ার মানুষ বিস্মিত হয়ে দেখল- শাহবাগ প্রকম্পিত করছে লাখো মুক্তিযুদ্ধপন্থী উদার, অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বিজ্ঞান মনস্ক নারী-পুরুষ, অপরদিকে জয় বাংলা যাদের মুখে নিষিদ্ধ, যারা ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি কখনও করেনি বরং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের এবং সর্বোচ্চ দ-ের দাবিতে সূচিত গণজাগরণ মঞ্চকে তারা চ্যালেঞ্জ করে শাপলাচত্বরে সমাবেশ করে! শোনা যায় খালেদা জিয়ার নির্দেশে এ সমাবেশকে হেফাজত নেতারা অনির্দিষ্টকালের অবস্থান ধর্মঘটে পরিণত করে! এ রাতেই হেফাজতের এ অবস্থানের সুযোগে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা পুরো মতিঝিল এলাকায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করে! পরে পুলিশ সাউন্ড বোমা ব্যবহার করে এসব তা-বের অবসান ঘটায়। হেফাজতের আনা ছোট ছোট কিশোরদের সুরক্ষা দিয়ে তাদের ফেরত যেতে সহায়তা করেছে পুলিশ-সাংবাদিক! হেফাজত নেতারা আগেই স্থান ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে সরে গিয়েছিল। পরদিন, এদের একটি দল গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলা করে যা বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের কর্মীরা একযোগে প্রতিহত করে! এরপর সরকার পুলিশ দিয়ে গণজাগরণ মঞ্চ বন্ধ করে দেয়! এই হেফাজতী তা-বের পর হেফাজতের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের জন্য যেখানে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার হবার কথা, পরিতাপের বিষয়, সেখানে দেখা গেল আইসিটি আইনে তরুণ মুক্তিযুদ্ধপন্থী ব্লগাররা গ্রেফতার হচ্ছে! হেফাজত এদেরকে শত্রু গণ্য করে তাদের গ্রেফতারের জন্য সরকারকে তালিকা দেবার দুঃসাহস দেখায়। যেখানে ’৭১- সালে তাদের নেতাদের জামায়াতের মতই পাকিস্তানী সেনাদের দালালি করার তথ্য শোনা যায়! উপরন্তু, বাংলাদেশ যেখানে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে, নারী-পুরুষ উভয়ে মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগ করেছে এবং নারী-পুরুষের সমতা বিধানে রাষ্ট্র অঙ্গীকারবদ্ধ, সেখানে হেফাজতের শীর্ষ নেতা নারীদের তেঁতুলের সঙ্গে তুলনা করে, নারী শিক্ষা ক্লাস ফাইভ’র বেশি প্রয়োজন নেই, নারী-পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারবে না- ইত্যাদি আইয়্যামে জাহিলিয়া যুগের অচল নির্দেশ দিয়ে এই দ্রুত উন্নয়নশীল বাংলাদেশ যখন জ্ঞান-বিজ্ঞান-কৃষি-শিল্পে-প্রযুক্তিতে বিকাশ ঘটিয়ে মধ্যম আয়ের স্তরে উন্নীত হতে যাচ্ছে- সে উন্নয়নের পথে বাধাদান করছে! যাই হোক, ভোটের রাজনীতির আলোচনায় আজ যাব না। আজ, ভিন্ন প্রেক্ষিতে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’কে ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা দরকার বলে মনে করি। আজ একটি প্রশ্নই করব, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থায় আমরা বাংলাদেশকে উন্নত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র করতে কি করতে চাই, কি দেখতে চাই এ রাষ্ট্রে? আমরা দেখি নাসিরনগরে, গাইবান্ধায়, সিলেটে ও খুলনায় হিন্দু তরুণের ফেসবুকে কথিত ধর্মীয় অবমাননার প্রেক্ষিতে ঐসব এলাকায় মৌলবাদীদের উসকানিতে আগেই ঠিক করে রাখা স্থানীয় দুর্বৃত্ত-গু-াদের দ্বারা দুর্বল সংখ্যালঘু হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দির ভাঙচুর, জ্বালিয়ে দেয়া হয়, খাদ্যশস্য, অন্য সম্পদ ধ্বংস করা হয়, ধর্ষিতও হয় হিন্দু নারী! জানা গেছে, নাসিরনগরে এ ঘটনা ঘটার দু’দিন আগে থেকে হেফাজতী মোল্লাদের একটি পরিকল্পনার কথা নানা সূত্রে এলাকায় প্রচারিত হয়। দরিদ্র, জেলে সম্প্রদায়ের হিন্দুদের বিরুদ্ধে তারা জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে জনমানুষকে উস্কানি দিয়ে এসব হামলা করায়! ‘ফেসবুকে’ কোন মুসলিম দুর্বৃত্ত এটি হিন্দু তরুণের ফেসবুকে ‘আপলোড’ করে বলে জানা যায়। এর অনেক আগে, রামু উপজেলায় এক বৌদ্ধ তরুণের ফেসবুকে নবী বিরোধী বক্তব্য আপলোড করার ফল হয়- বৌদ্ধদের এলাকায় বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ, বাড়িঘর লুট, অগ্নিসংযোগ, উপাসনালয়ে মূর্তি, প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ ধ্বংস হয়ে যায়। এই ঘটনাগুলো জনগণকে, সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদান, ডিজিটাল প্রযুক্তির নিরাপত্তা, জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টিকে নতুনভাবে বিবেচনা করতে প্রণোদনা দেয়। একটি উপযুক্ত ডিজিটাল আইন প্রণয়নের কথা সবাই গুরুত্ব দিয়ে ভাবেন। কিন্তু আইনটি তো ঘটনা সংঘটিত হবার পর ব্যবহৃত হবে। আমরা জানি, ঘটনা ঘটানোর আগে- একদল ধর্মান্ধ, মৌলবাদী দল, গোষ্ঠী পরিকল্পনা করে, সভা করে, মানববন্ধন করে হিন্দু বা সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে জ্বালাময়ী ভাষায় বক্তব্য দিয়ে মানুষকে হিংস্র পশুতে পরিণত করে! এমনকি, মসজিদের মাইক ব্যবহার করে হিন্দুদের বাড়িতে হামলার নির্দেশ দিয়ে ইন্ধন জোগায়। প্রায় প্রত্যেকটি স্থানে দেখা গেছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্থানীয় আওয়ামী লীগ বা অন্য রাজনৈতিক নেতাদের এবং থানা-পুলিশকে এমন হামলার আশঙ্কার কথা আগে জানানো হলেও, তারা ঘটনাটি ঘটতে দিয়েছেন! অথচ আগেই পরিকল্পক ও দুর্বৃত্তদের আটক করা গেলে, সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ হতো, যা ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ গঠনের একটি মূল ভিত্তি হিসেবে সরকারের সব স্তরের, ক্ষেত্রের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব এবং অবশ্য কর্তব্য। তাছাড়া- এ অপরাধগুলো বিচারের জন্য ফৌজদারি আইন অবশ্যই আছে যা ত্বরিত ব্যবহার করে কঠোর দন্ড দেয়া হলে এসব হামলা হ্রাস পেতো- এ কথা অনস্বীকার্য। স্মরণ করাতে হচ্ছে, বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, অসাম্প্রদায়িক, ডিজিটাল এবং অবাধ বাক-স্বাধীনতার অনুশীলনে সক্ষম, একটি উন্নত দেশ হিসেবে আমরা দেখতে চাই, প্রধানমন্ত্রীও চান। প্রধানমন্ত্রী জানেন, আমরা জানি গণতন্ত্রের প্রথম শর্ত- বাক-স্বাধীনতা এবং তথ্যের অধিকার। তথ্য অধিকার বা রাষ্ট্রের যে কোন অঙ্গ থেকে নাগরিক তার প্রয়োজনীয় তথ্য, নিজের জন্য, অপরের জন্য, গবেষণার জন্য, কোন সত্যানুসন্ধানের জন্য যে কোন তথ্য চাইতেও পেতে পারে। এটি তার নাগরিক অধিকার। তাছাড়া, বর্তমান সরকার, শেখ হাসিনা সরকার উন্নয়নশীল দেশটিতে উন্নয়নের একটি সূচক তথ্য অধিকারকে নিশ্চিত করে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। এখন কথা হচ্ছে, জনপ্রতিনিধিরা যখন জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সংসদে বসেন, তখন শেখ হাসিনার কথা মতো তারা জনগণের সেবক হয়ে আসেন, মালিক বা প্রভু নন। প্রশাসকও সেবক, পুলিশ, সেনা, ডাক্তার, শিক্ষক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী- সবাই জনগণের সেবক, যদিও বাস্তবে শুধু কৃষককেই সেবক হিসেবে দেখতে পাচ্ছি, অন্যেরা জনগণের করে বেতন নিয়ে তাদের পকেট কাটায় ব্যস্ত, সেবা লাভে উন্মুখ, দিতে নয়! এই বেশির ভাগ লোভী, অর্থগৃধ, অর্থপাচারকারী, জনগণের প্রভু হয়ে বসা জনপ্রতিনিধি বা অন্যান্য পেশাজীবীদের সব রকম কর্মকান্ড স্বচ্ছভাবে দেখার অধিকার রয়েছে সব নাগরিকের। কিছুকাল আগে সাংসদ সেলিম ওসমানের দ্বারা আমাদের মতো একজন শিক্ষককে যে অন্যায় কারণে অন্যায় শাস্তি দেয়ার ছবিটি প্রকাশ পেল তা কি ঐ সাংসদের প্রাচীন সামন্ত রাজার প্রভুত্বমূলক চরিত্রকে উন্মুক্ত করেনি? যদি সেটি আমরা দেখতে না পেতাম, তাহলে ঐ নিরীহ হিন্দু শিক্ষকের প্রতি জাতি ন্যায়বিচার করার দাবি কি জানাতে পারত? ত্বকী হত্যার প্রক্রিয়াটি যদি অনুসন্ধানী সাংবাদিক ছবিসহ তুলে আনত, তাহলে আমরা আসামির বিচার ও দ- দিয়ে কিছুটা তো শান্তি পেতাম। এগুলো চরম অস্বচ্ছতার প্রমাণÑ যা সরকারের গণতান্ত্রিক আচরণ ও সুশাসনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে আছে। তনু, মিতু হত্যাও তাই। এগুলো সুশাসনের সূচকে সরকারকে পেছনে টেনে ধরেছে অথচ সুশাসন, বাক-স্বাধীনতা- এ দুটোই নিশ্চিত না করে উন্নত রাষ্ট্র হওয়া কখনোই সম্ভব হবে না। বহুকাল আগে, সেনা কর্তৃক পাহাড়ে কল্পনা চাকমা গুম হয় যার কোন বিচার এখনো হয়নি! সম্প্রতি রাঙামাটিতে দু’বোনের ওপরও ধর্ষণ, পরিবারের ওপর অন্যায় চাপ- এর কি কোন বিচার হবে? চাকমা রাজা পর্যন্ত তাদের যথোপযুক্ত সময়ে সাহায্য করতে পারেননি! এ ঘটনা কিন্তু সুশাসনের চরম ঘাটতি প্রকাশ করছে যা অবশ্যই সরকারকে নির্বাচনের আগে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে! প্রধানমন্ত্রীকে বলব, দেশকে ডিজিটাল করতে হলে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা যাবে না। গোপন ক্যামেরায় ঘটনার ভিডিও, চিত্র ধারণ, কথোপকথন রেকর্ড করেই তো ডিজিটাল যুগের সাংবাদিক তার সংবাদ ও প্রতিবেদন তৈরি করবেন। কিন্তু এ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩০ ধারায় বলা হয়েছে, না জানিয়ে কেউ যদি কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে, ব্যাংক-বীমায় ই-ট্রানজেকশন করে, তাহলে পাঁচ বছরের জেল ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ইত্যাদি। ২৮ ধারায় বলা হয়েছে কেউ যদি ধর্মীয় বোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে, তাহলে ১০ বছরের জেল ও ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড। এই ধর্মীয় বোধ-অনুভূতি হেফাজত-এর একরকম হবে, বিজ্ঞানমনস্ক, ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের অন্যরকম হবে। সে ক্ষেত্রে বিচার কি হবে? সংখ্যালঘুদের ‘ফেসবুকে’ যখন সংখ্যাগুরুরা বানানো তথ্য, চিত্র ‘ডাউনলোড’ করে, সেই ‘ডাউনলোড’ করাদের বিচার ও দন্ডের ধারা কই? মন্দির, দেবীমূর্তি ভাঙ্গার দন্ড কি? আমরা চাই, যে কোন সময়, যে কোন স্থানে, যে কোন ব্যক্তির সে জনগণের সেবক বা জনপ্রতিনিধি হোক, সেনা কর্মকর্তা বা অন্য পেশাজীবী হোক, তার সব কর্মকান্ড তুলে আনবে আজকের অনুসন্ধানী সাংবাদিক। যাদের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়, বেতন পায়, গাড়ি, বাড়ি, নানা সুবিধা পায়, তাদেরকে সারাক্ষণ থাকতে হবে উজ্জ্বল আলোর নিচে। যাতে জনগণ তাদের প্রতি মুহূর্তের কর্মকা- দেখতে পায় এবং তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। একই সঙ্গে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা যায়। বলাবাহুল্য, ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর পাশে তথ্য নিয়ন্ত্রণ আইন চলতে পারে না। অনেকে এ আইনটির বিষয়ে গণশুনানি করার প্রস্তাব করেছেন, আমার মনে হয়, এটি উত্তম প্রস্তাব। এটি করা প্রয়োজন হবে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের সংজ্ঞাও সুনির্দিষ্ট করে- জনগণকে জানাতে হবে। সবশেষে বলব, এটি নির্বাচনের বছর। অতীতে দেখা গেছে প্রত্যেক নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা-নির্যাতন-ধর্ষণ, দেশত্যাগে বাধ্য করার ঘটনা ঘটে। আমার প্রস্তাব, নির্বাচনের তিনমাস আগে থেকে হিন্দু-অধ্যুষিত পাড়া-গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, এসব অপরাধমূলক কাজের সম্ভাব্য পরিকল্পক ও দুর্বৃত্তদের আটক করার কাজটি অগ্রাধিকার গণ্য করে করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন শৈথিল্য মেনে নেয়া যায় না। ওরা কি জাতির নির্বাচন-পূজার নিয়মিত বলি? এ হতে দেয়া যায় না। ধর্মনিরপেক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের শত্রুরা হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের বার বার আঘাত করে এ দেশের মূল ভিতকেই আঘাত করছে- এটি বোঝার জন্য তো দার্শনিক হবার দরকার নেই। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক
×