ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাংবাদিকের সংজ্ঞা নির্ধারণে আইনের খসড়া অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সাংবাদিকের সংজ্ঞা নির্ধারণে আইনের খসড়া অনুমোদন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) নোটিস অমান্য করলে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে নতুন আইন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ লক্ষ্যে সোমবার মন্ত্রিসভা নিয়মিত বৈঠকে ‘বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন আইন-২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া মন্ত্রিসভা সাংবাদিকের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আইন ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ অনুমোদনের কথা জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগে এ বিষয়ে ১৯৬১ সালের একটি অর্ডিন্যান্স ছিল। এটা ১৯৭৫ ও ১৯৭৬ সালে সংশোধন হয়। সামরিক শাসনামলের আইন ও ইংরেজী আইনগুলো বাংলা করে নতুন করে প্রণয়নের সিদ্ধান্ত রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেই প্রেক্ষাপটে আইনটি করা হয়েছে। আগের আইনের সঙ্গে এর যথেষ্ট মিল রয়েছে। কর্পোরেশন এখন যে কাজগুলো করে নতুন আইনেও সেগুলো মোটামুটি তুলে ধরা হয়েছে জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদ হবে চেয়ারম্যানসহ ১৬ সদস্য বিশিষ্ট, আগে ছিল ১৪ সদস্যের। কর্পোরেশন ও বোর্ডের প্রধান হবেন চেয়ারম্যান। সরকার চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে। কর্পোরেশন এ আইনের অধীনে কোন ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন কাজ করতে বা কোন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে নোটিস দিলে এবং ওই ব্যক্তি নোটিস অনুযায়ী কোন কাজ করা বা করা থেকে বিরত থাকতে ব্যর্থ হলে কর্পোরেশন ওই কাজের বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ বা সম্পাদন করতে পারবে। এজন্য ব্যয় হওয়া সব অর্থ ওই ব্যক্তির কাছ থেকে আদায় করতে পারবে। খসড়া আইন অনুযায়ী কেউ বিএডিসির এই নোটিস অমান্য করলে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে জরিমানা দিতে হবে। আগে নোটিস দেয়ার বিষয়টি থাকলেও তা অমান্য করলে কোন দ- ছিল না। কৃষকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যদের বিএডিসি নোটিস দিয়ে থাকে। শফিউল আলম আরও বলেন, কর্পোরেশনের কোন ভূমি বা স্থাপনা রক্ষার সীমানা প্রাচীর ক্ষতিগ্রস্ত করলে, দালান বা দেয়ালের ভার রক্ষার্থে ঠেস দেয়ার জন্য স্থাপিত কোন বস্তু অপসারণ, খনন করা বা ভেঙ্গে ফেলা কোন সড়ক বা ভূমিতে স্থাপিত বাতি নিভিয়ে ফেললে, কর্পোরেশনের আদেশ না মেনে যাতায়াতের পথ বন্ধ করলে, কর্পোরেশনের স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। আগে এক্ষেত্রে শুধু ৫০ টাকা জরিমানা ছিল। কর্পোরেশনের নিয়োগ করা ঠিকাদারকে বাধা এবং কর্পোরেশনের কোন সীমানা বা দিকনির্দেশক চিহ্ন অপসারণ করলেও ছয় মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ- হতে পারে। কর্পোরেশনের লিখিত অনুমোদন ছাড়া কোন ব্যক্তি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন কোন জমিতে চাষবাদ করেন বা চাষাবাদের জন্য প্রস্তুত করেন বা ওই জমিতে কোন ভবন বা স্থাপনা নির্মাণ করেন বা গাছ কাটেন বা ভূমি খনন করেন, তবে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। আগের আইনে এসব অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল ২০০ টাকা জরিমানা। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কেউ কর্পোরেশনের ভূমি দখলে রাখলে কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান বা তার কাছ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি শক্তি প্রয়োগ করে ভূমিতে প্রবেশ করতে পারবেন এবং কর্পোরেশনের পক্ষে ভূমির দখল নিতে পারবেন। কর্পোরেশনের কোন সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হলে আদালত দ- দেয়ার পাশাপাশি কর্পোরেশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের আদেশ দিতে পারবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের কাছে থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোন আদালত এ অপরাধ আমলে নেবে না। বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আইন ॥ মন্ত্রিসভার বৈঠকে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট আইন ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, খসড়ায় সাংবাদিকের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- এমন কোন ব্যক্তি যিনি প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া বা বার্তা সংস্থার একজন সার্বক্ষণিক সাংবাদিক হিসেবে নিয়োজিত আছেন বা ওই মিডিয়া বা সংস্থার সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক, উপ-সম্পাদক, সহকারী সম্পাদক, ফিচার লেখক, রিপোর্টার, সংবাদদাতা, কপিরাইটার, কার্টুনিস্ট, সংবাদ চিত্রগ্রাহক ও সম্পাদনা সহকারী এবং সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পদধারীগণও এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। তিনি বলেন, পিআইবি মূলত ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। এর দায়িত্ব হলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জনসংযোগ কর্মকর্তা, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অধীনে কর্মরত সাংবাদিক, তথ্য ও গণমাধ্যমকর্মী বা উন্নয়ন ও যোগাযোগকর্মী, গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ। সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সনদ দেয়া, সিলেবাস প্রণয়ন, সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য বিশেষ সম্মাননা প্রদান, সরকারকে বিভিন্ন সময় মতামত বা পরামর্শ দেয়াও এর অন্যতম কাজ।’ মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী বিশিষ্ট সাংবাদিক বা শিক্ষাবিদ বা জনসংযোগে দক্ষ ব্যক্তিদের মধ্য থেকে একজনকে চেয়ারম্যান নিয়োগ করবে সরকার।
×