ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মেয়র আইভী হত্যা চেষ্টায় থানায় লিখিত অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৬:০০, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

মেয়র আইভী হত্যা চেষ্টায় থানায় লিখিত অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, নারায়ণগঞ্জ ॥ নগরীর ফুটপাথে হকার বসানোর ঘটনা কেন্দ্র করে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান ও সিটি মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়াজুল ইসলামসহ ৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত এক হাজার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। সোমবার রাতে সদর থানায় সিটি নারায়ণগঞ্জ কর্পোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএমএ সাত্তার বাদী হয়ে এ অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার সাতদিন পর এ অভিযোগ করা হলো। এদিকে মঙ্গলবার দুপুর দেড়টায় মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে নারায়ণগঞ্জ আসেন। নারায়ণগঞ্জে এসে তিনি কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার বাবা আলী আহম্মদ চুনকার কবর জিয়ারত করেন। জানা গেছে, সোমবার রাতে সিটি কর্পোরেশনের আইন কর্মকর্তা জিএমএ সাত্তার বাদী হয়ে মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ আনেন। এতে অস্ত্রধারী নিয়াজুল ইসলাম ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন সাজনু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জুয়েল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাকিরুল আলম হেলাল, জানে আলম বিপ্লব, মিজানুর রহমান সুজন, টুন্ডা নাসির ও চঞ্চল মাহমুদের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ৯০০ থেকে ১০০০ জনকে আাসামি করা হয়। অভিযোগে নাম উল্লেখ করা সবাই সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের একনিষ্ঠ সমর্থক। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগটির তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসায় ফিরেছেন আইভী ॥ সিটি মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভী বাসায় ফিরেছেন। পাঁচ দিন ঢাকায় চিকিৎসা নেয়ার পর মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে তিনি শহরের দেওভোগের নিজ বাসভবনে যান। এর আগে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে সরাসরি তিনি মাসদাইর কবরস্থানে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান তার বাবা আলী আহাম্মদ চুনকার কবর জিয়ারত করেন। মেয়র আইভীর আসার খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন তাকে দেখার জন্য ভিড় জমান। গাড়ি থেকে নেমে নেতাকর্মী ও স্বজনদের ভিড় ঠেলে বড় ছেলে কাজী সাদমান হায়াত সীমান্তকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরেন তিনি। এই সময় আবেগঘন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় তিনি আত্মীয়-স্বজনদের বলেন, চিকিৎসকরা হাই এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট দিয়েছে। যার কারণে শরীর এখনও কিছুটা দুর্বল লাগছে। পরে ১৫-২০ মিনিট কথা বলে তিনি বাসার ভেতরে চলে যান। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য মেয়র আইভীকে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আই এ্যাম এ ফাইটার এ লিডার ॥ ‘নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র আমি। আমার সিটির লিডার আমি, আমার কথায় নারায়ণগঞ্জ চলবে। কারণ নগর ও নারায়ণগঞ্জবাসীর দায়িত্ব আমার, অন্য কারও নয়। নারায়ণগঞ্জ সিটির ভেতরের কোন সিদ্ধান্ত নিয়ে বাইরে কেউ কথা বললে মেনে নেয়া হবে না। সিটির সব সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার একমাত্র নারায়ণগঞ্জবাসীর। কেউ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে এটা নিয়ে কমেন্ট করবে- সেটা আমার নগরবাসী মেনে নেবে না। অতীতে মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না। আমার নগর কীভাবে চলবে সে সিদ্ধান্ত আমার নগরবাসী নেবে বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। এ সময় তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। আই অ্যাম এ ফাইটার, এ লিডার।’ তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ শহরকে শান্তিময় হতেই হবে। এ বিষয়ে আমাকে সার্বিক সহযোগিতা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমার কোন অভিযোগ নেই। রাজনীতিতে এ রকম হবেই। আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বিশ্বাসী না। এই কয়েক দিনে অনেক কিছু হয়েছে। আমার সঙ্গে রাজনৈতিক ও পারিবারিক কোন বিরোধ নাই। বিরোধ যদি থেকে থাকে সেটা আদর্শগত, নীতিগত। কিন্তু সেখানেও আমি নমনীয়, কারণ নগরবাসীর উন্নয়ন আমি চাই। মঙ্গলবার সকালে ল্যাবএইড হাসপাতালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। ৫ দিন চিকিৎসা নেয়ার পর তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়। পরে নারায়ণগঞ্জে ফিরে যান মেয়র আইভী।
×