ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুরু ২৭ জানুয়ারি

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব শুরু ২৭ জানুয়ারি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিনেমা দেখে কাটবে শিশুদের আনন্দময়। বিনা দর্শনীতে অবলোকন করবে দেশ-বিদেশের বিচিত্র বিষয়ের চলচ্চিত্র। ‘ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন’ প্রতিপ্রাদ্যে রাজধানীর ছয়টি ভেন্যুতে ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে ১১তম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। সেদিন বিকেলে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উৎসব উদ্বোধন করবেন। দুই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলমান উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৫৮টি দেশের দুই শতাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্র। ঢাকায় মূল উৎসব কেন্দ্র সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তন। উৎসবের অন্যান্য ভেন্যুগুলো হবে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, ধানম-ির অলিয়ঁস ফ্রঁসেজ ও গ্যাটে ইনস্টিটিউট, ফুলার রোডের ব্রিটিশ কাউন্সিল ও সেগুন বাগিচার শিল্পকলা একাডেমি। উদ্বোধনী দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ১১টা, দুপুর ২টা, বিকেল ৪টা ও সন্ধ্যা ৬টায় প্রতিটি ভেন্যুতে ৪টি করে চলচ্চিত্র দেখানো হবে। একটি প্রদর্শনীতে একাধিক শিশুতোষ চলচ্চিত্রও দেখানো হবে। উৎসবের সকল প্রদর্শনী শিশু-কিশোরসহ তাদের অভিভাবকদের জন্য উন্মুক্ত। এ উৎসবের আয়োজক চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশ। মঙ্গলবার গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উৎসবের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। উৎসব সূচীসহ নানা তথ্য তুলে ধরেন উৎসব পরিচালক আবীর ফেরদৌস। এতে উপস্থিত ছিলেন উৎসব উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, চিলড্রেন’স ফিল্ম সোসাইটি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইসলাম ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুনীরা মোরশেদ মুন্নী। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৭ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় গণগ্রন্থাগার চত্বর ও শওকত ওসমান মিলনায়তনে বসবে উদ্বেধনী আয়োজন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত উৎসব উদ্বোধন করবেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এছাড়াও অতিথি থাকবেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর বারবারা উইকহ্যাম। এবারও উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় বিভাগ হিসেবে থাকছে বাংলাদেশী শিশু নির্মাতাদের নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রতিযোগিতা বিভাগ। এ বিভাগে জমাকৃত ৬৮টি চলচ্চিত্রের মধ্যে প্রদর্শিত হবে নির্বাচিত ২১টি ছবি । এই ২১টি চলচ্চিত্রের মধ্যে পাঁচটি চলচ্চিত্র পুরস্কার পাবে। পুরস্কার হিসেবে আর্থিক প্রণোদনার সঙ্গে থাকবে স্মারক ও সনদপত্র। পাঁচ সদস্যের জুরি বোর্ডের শিশু-কিশোর সদস্যরাই বাছাই করবে ছোটদের নির্মিত শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রগুলো। এবারও ‘ইয়ং বাংলাদেশী ট্যালেন্ট’ শীর্ষক বিভাগটি রয়েছে যেখানে ১৯ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণ নির্মাতারা অংশ নিবেন। এছাড়াও রয়েছে সোস্যাল ফিল্ম সেকশন। যেখানে ‘নারীর প্রতি সহিংসতা’ বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। একইসঙ্গে থাকবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বিভিন্ন দেশের শিশুদের বানানো চলচ্চিত্র নিয়ে থাকছে প্রতিযোগিতা বিভাগ, যেখান থেকে একটি চলচ্চিত্রকে পুরস্কার দেয়া হবে। এবার উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে সাত জন বিদেশী অতিথি উৎসবে প্রতিনিধি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন। উৎসবে আসা প্রতিনিধিদের জন্য সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও থাকবে বিভিন্ন অন্তরঙ্গ আড্ডা, যেখানে প্রতিনিধিরা বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ পাবে। এছাড়াও কিশোর বয়সে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া তিনজন মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গেও আলাপচারিতার সুযোগ থাকছে। উৎসবের প্রতিটি ভেন্যুতে, প্রতিটি প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত থাকার জন্য উৎসব আয়োজকদের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উৎসব এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে। অনুষ্ঠানে সকল প্রতিযোগিতা বিভাগে অংশ নেয়া চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে পুরস্কার প্রাপ্তদের নাম ঘোষণা ও পুরস্কার প্রদান করা হবে। উৎসব আয়োজনে এবারও সরকারের পক্ষ থেকে অনুদান দেয়া হয়েছে। উৎসবে পৃষ্ঠপোষকতা করছে এটুআই ও ব্রিটিশ কাউন্সিল। শিল্পকলায় জাতীয় পিঠা উৎসব ॥ আয়োজনটি ঋতুভিত্তিক শীতকালের। আর বাঙালীর কাছে শীত মানেই পিঠা-পুলির স্বাদে উৎসবে মেতে ওঠা। রসনা মেটানো রকমারি পিঠাকেন্দ্রিক তেমন উৎসবে গানের সুরেও ভেসে বেড়ায় পিঠার প্রতি আকুলতা। ভাওয়াইয়া গানের শিল্পী সফিউল আলম রাজার সুরের আশ্রয়ে সেই বর্ণনাটি হয় এ রকম- কয়সার আলো আলো চাউল পারিয়ে সোনা মোর/ বনিয়ে করো আটা/ কাইল বিয়ানে বানেয়া দেন মোক গামলা কয়েক পিঠা/ ওকি হায়রে হায়/ মনটায় মোর পিঠা খাবার চায়...। আর শিল্পী গানটি গাইছিলেন পিঠা-পুলির ঘ্রাণ ছড়িয়েছে উৎসব আঙ্গিনা শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রান্তরে। মঙ্গলবার থেকে এখানে শুরু হলো জাতীয় পিঠা উৎসব। যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও জাতীয় পিঠা উৎসব উদ্্যাপন পরিষদ। বিকেলে ঢাকের বাদ্যতে বর্ণিল বেলুন আর শান্তির পায়রা উড়িয়ে আট দিনের উৎসব উদ্বোধন করেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, আতাউর রহমান, নৃত্যগুরু জনাব আমানুল হক ও দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী সৈয়দ আব্দুল হাদী। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন জাতীয় পিঠা উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জনাব ম. হামিদ। স্বাগত বক্তৃৃতা দেন পরিষদের সদস্য খন্দকার শাহ্ আলম। উৎসবের ৪৪টি স্টলে প্রায় দুই শ’ পদের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পিঠা শিল্পীরা। সেখানে রয়েছে ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, মালপোয়া, মেড়া পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুরের পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, সুন্দরী পাকান, সরভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জিলাপি, তেজপাতা পিঠা, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, পানতোয়া, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ আরও বাহারি সব নামের পিঠা। আট দিনের এ উৎসব শেষ হবে ৩০ জানুয়ারি। উৎসব চলাকালে প্রতিদিনই উৎসব প্রাঙ্গণের উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থাকছে নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটকসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সমাপনী দিনে সেরা পিঠা শিল্পীদের পুরস্কার প্রদান করবে আয়োজকরা। শিল্পাঙ্গনে ‘কালেক্টরস্ শো’ ॥ শিল্পকর্ম যেন মাটির মায়া। জমির মতো এর মালিকানাও পরিবর্তনশীল। পরিবারের আকার বৃদ্ধির সঙ্গে অনেক সময় ছবিরও স্থানান্তর ঘটে। এই যেমন শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ‘কালেক্টরস্্ শো’-তে ঠাঁই পাওয়া দুইটি ছবি এখান থেকেই সংগ্রহ করা হয়েছিল। এমন অনেক গল্প জড়িয়ে আছে প্রদর্শনীতে ঠাঁই পাওয়া ছবিগুলোর সঙ্গে। সন্ধ্যায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। আরও কথা বলেন চিত্রশিল্পী রশিদ আমিন ও জাভেদ জলিল। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন সংগ্রাহকের সংগ্রহশালা নিয়ে আসা হয়েছে দেশের প্রখ্যাত চিত্রকর আঁকা ছবি। যাদের মধ্যে রয়েছেন- মোহাম্মদ কিবরিয়া, কাইয়ূম চৌধুরী, রফিকুন নবী, আমিনুল ইসলাম, হাশেম খান, মুর্তজা বশীর, মনিরুল ইসলাম, মুস্তাফা মনোয়ার, রোকেয়া সুলতানা, কনকচাপা চাকমা, ফরিদা জামান, রণজিৎ দাস, জামাল আহমেদ, চন্দ্র শেখর দে, সমর মজুমদার, অলোকেশ ঘোষ, শেখ আফজাল প্রমুখ। ভিন্নধর্মী এ প্রদর্শনী ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
×