ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সময় পেলে ফল অন্যরকম হতে পারত ॥ শাস্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

সময় পেলে ফল অন্যরকম হতে পারত ॥ শাস্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক ॥ দক্ষিণ আফ্রিকায় আরও দশ দিন আগে চলে এলে টেস্ট সিরিজের ফল অন্য রকম হতে পারত বলে মনে করছেন রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় দলের হেড কোচের কথায়, ‘‘কোনও অজুহাত দিতে চাই না। আরও দশ দিন সময় যদি পাওয়া যেত প্রস্তুতির জন্য, আমার মনে হয় ফল অন্যরকম হতে পারত।’’ দক্ষিণ আফ্রিকায় আসার আগে দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে লম্বা সিরিজ খেলেছিল ভারত। যেটাকে অর্থহীন বলে বর্ণনা করেছেন অনেকে। অধিনায়ক বিরাট কোহালিও বিদেশ সফরের প্রস্তুতিতে বেশি সময় না থাকার সমালোচনা করেছিলেন। কোহালি বলেছিলেন, অন্তত পনেরো দিন আগে পৌঁছে বিদেশে প্রস্তুতি নিতে না পারলে ভাল ফলের আশা করা উচিত নয়। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্টের আগে সাত দিনেরও কম সময় ছিল। শাস্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যে রকম ইঙ্গিত দিলেন, তাতে মনে হল, ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে এ নিয়ে তিনি কথা বলবেন বোর্ডের সঙ্গে। এবং, নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন যাতে দিন পনেরো আগে পৌঁছে যাওয়া যায়। সিরিজে ০-২ পিছিয়ে পড়ায় কোহালি এবং তাঁর দল নিয়ে সমালোচনার ঝড় চলার মধ্যে সোমবার ওয়ান্ডারার্সে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শাস্ত্রী। সিরিজে ০-২ পিছিয়ে পড়া নিয়ে প্রথমেই বলে দিলেন, ‘‘আমরা প্রতিপক্ষের চল্লিশটা উইকেট নিয়েছি দু’টো টেস্টে। ক্রিকেটে সেটা যখন ঘটে, বুঝতে হবে সেই দলটি জেতার সুযোগ তৈরি করেছিল। আমাদের টপ-অর্ডার ব্যাটিং আশানুরূপ হয়নি। বোকার মতো ভুল করেছি, যে গুলো এই পর্যায়ে করা যায় না।’’ প্রথম একাদশ নির্বাচন নিয়ে সব চেয়ে বেশি সমালোচিত হতে হয়েছে অধিনায়ক কোহালি-কে। এ দিন শাস্ত্রীকেও সেই বাউন্সারের মুখে পড়তে হল। এবং তিনি পাল্টা আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই বলে দিলেন, ‘‘পিছন ফিরে তাকিয়ে অনেক কিছু অনেক রকম ভাবে বলা যায়। যদি আমরা রাহানেকে খেলাতাম আর ও রান না করত, তা হলে আপনারাই তখন প্রশ্ন করতেন, রোহিতকে কেন খেলালেন না?’’ বলে চললেন, ‘‘রোহিতকে খেলানো হয়েছিল সাম্প্রতিক ফর্মের ভিত্তিতে। রোহিত সফল হয়নি। তাই সকলে প্রশ্ন করছে, কেন রাহানেকে খেলানো হল না? ফাস্ট বোলারদের নিয়েও একই কথা বলব আমি। আমরা পরিবেশ বুঝে, ফর্ম দেখে দল নির্বাচন করি। টিম ম্যানেজমেন্ট সমস্ত বিকল্প নিয়ে আলোচনা করে দল নির্বাচন করে।’’ ওয়ান্ডারার্সে দু’দিন ধরে ভারতীয় দলের নেট প্র্যাক্টিস দেখে অবশ্য মনে হচ্ছে, রাহানে তৃতীয় টেস্টের প্রথম একাদশে ফিরবেন। প্লাস্টিক বলে আলাদা করে ব্যাটিং প্র্যাক্টিস করে তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ককে। প্রথম একাদশ বাছা নিয়ে প্রশ্ন অবশ্য এখানেই থামল না। কেন এত পরিবর্তন করা হচ্ছে? শাস্ত্রীর জবাব, ‘‘বিদেশে এলে বেশি পরিবর্তনের সম্ভাবনা থাকে। দেশের মাঠে সেটা দরকার হয় না কারণ, সকলেই জানে কী ধরনের পিচে খেলা হচ্ছে বা কী রকম পরিবেশ থাকবে।’’ তাঁর আরও বিশ্লেষণ, ‘‘বিদেশে এক-একটা জায়গায় এক-এক রকম সমীকরণ আসতে পারে। পরিবেশ দেখে, পিচ দেখে, ফর্ম দেখে টিম গড়তে হয়। কোথাও বাউন্স বেশি থাকা পেসার লাগে, কোথাও সুইং বেশি থাকা বোলার। সব দিক দেখতে হয়।’’ দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রাক্তন ক্রিকেটারেরাও সরব। বীরেন্দ্র সহবাগের মতো প্রাক্তন তারকা টিভি চ্যানেলে বলেছেন, এত রদবদল করা হচ্ছে প্রথম একাদশে। তা হলে কোহালিও নিজেকে বসিয়ে দিন! আপনাদের প্রতিক্রিয়া কী? শাস্ত্রী বললেন, ‘‘বিশেষজ্ঞদের তো তাদের কাজ করতে হবে। তারা যা চায়, বলতে পারে। তাতে আমাদের উপরে কোনও প্রভাব পড়ে না।’’ কোহালিকে নিয়ে সহবাগ মন্তব্যটি করেছিলেন সেঞ্চুরিয়ন টেস্টের আগে যে, রান না পেলে কোহালির উচিত নিজেকে বসিয়ে দেওয়া। সেই টেস্টেই ১৫৩ করেন কোহালি। এই সিরিজের যেটা একমাত্র সেঞ্চুরি। কোহালি নিজে সহবাগ সম্পর্কে সরাসরি মুখ না খুললেও দিল্লির সিনিয়রের মন্তব্যে যে মোটেও প্রসন্ন হননি, বলে দেওয়া যায়। কেউ কেউ কোহালি-শাস্ত্রী-সহবাগ ত্রিমুখী সম্পর্কের কথাও টেনে আনছেন। অনিল কুম্বলের বিদায়ের পরে শাস্ত্রী এবং সহবাগ দু’জনেই ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। এবং, কোহালির ভোটে কোচ হন শাস্ত্রী-ই। তখন সহবাগও কি খুব প্রসন্ন হতে পেরেছিলেন? ওয়ান্ডারার্সে গত দু’দিন ধরে কোহালিদের কাউকে কাউকে একটা কথা বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সচিন পাজি কখনও এটা করবে না। কঠিন সময়ে আক্রমণ নয়, উনি সব সময় পাশে দাঁড়ান।’’ মনে হল, কোহালিদের ভারতীয় ড্রেসিংরুমে অতীতের সুপারহিট ওয়ান ডে ওপেনিং জুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সচিন-সহবাগ। এক জন এখনও একই রকম শ্রদ্ধেয়, অন্য জন নন! সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×