ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

৭ কলেজ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার দায় কার

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

৭ কলেজ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার দায় কার

সংসদ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত রাজধানীর ৭ ঐতিহ্যবাহী কলেজ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার দায় কার এমন প্রশ্ন করেছেন জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ। সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ৭ কলেজের ছাত্ররা তাদের ফল প্রকাশের দাবিতে আন্দোলন করছে। এ আন্দোলন করতে গিয়ে সিদ্দিকুর রহমান নামে তিতুমীর কলেজের এক ছাত্র তার ২ চোখ হারিয়েছে। কেন এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। এর দায় কি আন্দোলনরত ছাত্রদের, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নাকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের? শিক্ষামন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, অবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান করুন। এ নিয়ে দয়া করে আপনি সংসদে ৩০০ বিধিতে একটি বিবৃতি দিন। কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, দেশের যে কোন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্র সমাজ। এখানে আমাদের সামনে বসে আছেন, ষাটের দশক থেকে শুরু করে প্রতিটি গৌরবোজ্জ্বল আন্দোলনে অংশ নেয়া ছাত্র নেতা মতিয়া চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ ও নুরুল ইসলাম নাহিদ। এর মধ্যে নুরুল ইসলাম নাহিদ এখন শিক্ষামন্ত্রী। আরেক গৌরবোজ্জ্বল ছাত্রনেতা মোহাম্মদ নাসিমও এখানে আছেন। কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, গতবছর ৭ কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার পর থেকেই ছাত্ররা আন্দোলন করছে। এই ৭টি কলেজ দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাল ছাত্ররাই এখানে পড়াশোনা করে। কিন্তু কেন তাদের এই ৭ কলেজ বেআইনীভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত করা হলো আর নেয়াই যখন হলো তাহলে তাদের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন। তাদের অপরাধ কী? ছাত্ররা দেশের ভবিষ্যত, তাই অবিলম্বে এ সমস্যার সমাধান করা হোক। শুধু প্রশাসন ক্যাডার নয়, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও কৃষিবিদদেরও সমানভাবে প্রমোশনের সুযোগ দেয়া হোকÑ সংসদে রুস্তম আলী ফরাজী ॥ শুধু প্রশাসন ক্যাডারের কর্মীদের নয়, দেশের বিভিন্ন পেশার যোগ্যকর্মী বিশেষ করে চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ এদের যোগ্যতা অনুযায়ী সমান সুযোগ দিয়ে প্রমোশন দেয়াার জন্য একটি আলাদা কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী। সোমবার ৭১ বিধিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদ কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, আমরা কোন মন্ত্রীকে কোন কাজের জন্য ডিও লেটার দিলে বা সংসদে কোন মন্ত্রী কোন কাজের প্রতিশ্রুতি দিলে তা এত বিলম্বে পাস করা হয় যে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কাজ তো মন্ত্রীরা করেন না, করেন তার সচিব বা উর্ধতন কর্মকর্তারা। কিন্তু তারা সঠিকভাবে কাজ করতে চান না। দেখা যাবে বহুদিন অতিবাহিত হলেও অনেক ফাইল আছে তাতে কোন কাজই হয়নি। কিন্তু আগে কর্মকর্তারা ডেডিকেটেটভাবে কাজ করতেন। এখন শত শত সচিব-সিনিয়র সচিব রয়েছেন, তারা অনেকেই কাজ করেন না আবার অনেকেই কাজ জানেনও না। সচিবালয়ে নিচের দিকের কর্মকর্তা কম কিন্তু ওপরে বেশি। অনেকে তদ্বিরের ঠেলায় ওপরের দিকে গিয়ে কাজ করেন না অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে। সে কারণে বর্তমানে প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়েছে। বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দেয়ার পরেও তাদের কাজের গতি বাড়েনি। এরা বুয়েট বা মেডিক্যালে চান্স না পেয়েও তদ্বিরের জোরে আজ সচিব অথচ তাদেরই বন্ধু যারা মেডিক্যাল পড়ে ডাক্তার হয়েছেন তারা হয় সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার বা বড়জোর আরএমও পর্যন্ত যেতে পেরেছেন। তারা যোগ্যতা অনুযায়ী সেখানে যেতে পারছেন না। প্রকৌশলীদের ক্ষেত্রেও এক রকম। তারা এখন কোন কাজের জন্য তাদেরও সম-সাময়িক বন্ধুদের অফিসে এসে জো হুজুর বলে দাঁড়িয়ে থাকেন। এটা হতে পারে না। এটা খুবই দৃষ্টিকটু। ফরাজী বলেন, প্রকৌশলী, ডাক্তার, কৃষিবিদদের যোগ্যতা অনুযায়ী প্রমোশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তাদেরও একটা পর্যায়ে সচিব, সিনিয়র সচিব পর্যায়ে প্রমোশনের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তা না হলে তারা কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলবে। প্রশাসনে বৈষম্য সৃষ্টি হচ্ছে। তারা আজ হতাশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বিশেষ করে দেশের এসব মেধাবী সন্তান, প্রকৌশলী, ডাক্তার, কৃষিবিদদের জন্য একটা আলাদা কমিটি করে কিভাবে তাদের যোগ্য প্রমোশন দেয়া যায় তার একটি রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন। এসব বৈষম্যের একটি অবসান হওয়া প্রয়োজন। এটা কিভাবে করা যায় তার জন্য জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
×