ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁকড়া শিকার করে সংসার চলে চার শতাধিক জেলে পরিবারের

প্রকাশিত: ০১:০৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

কাঁকড়া শিকার করে সংসার চলে চার শতাধিক জেলে পরিবারের

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার তালতলী উপজেলার ট্যাংরাগিরি বনাঞ্চলে কাকঁড়া শিকার করে সংসার চলে চার শতাধিক জেলে পরিবারের। প্রতিদিন এ সকল জেলেরা জীবিকার তাগিদে বনের গভীনে ঢুকে কাকঁড়া শিকার করে। এদের মূল পেশা কাকঁড়া শিকার করা। বন বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, তালতলী উপজেলার ট্যাংরাগিরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আয়তন ৯ হাজার ৯’শ ৭৫.০৭ একর। এ বনের মধ্যে নয়টি খাল রয়েছে। খালগুলো হলো বান্দ্রা খাল, মেরজেআলীর খাল,সিলভারতলীর খাল,ফেচুয়ার খাল, গৌয়মতলার খাল, কেন্দুয়ার খাল,সুদিরের খাল, বগীর দোন খাল ও চরের খাল। বর্ষার মৌসুমে এ বনাঞ্চলে পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। এ খাল গুলোর মধ্যে জোয়ার ভাটার পানি প্রবাহমান। এ খালের বিভিন্ন স্থানে কাকড়া গর্ত তৈরি করে বসবাস করে। কাকঁড়া শিকারীরা কাকঁড়া শিকারীরা বনের গভীনে ঢুকে খালের ওই কাঁকড়ার গর্তে লোহার রড দিয়ে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে কাঁকড়া শিকার করে। এ বনে চার শতাধিক কাঁকড়া শিকারী রয়েছে। তালতলী, কলাপাড়া ও বরগুনার বিভিন্ন এলাকা থেকে এ শিকারীরা এসে কাকঁড়া শিকার করে। কাকঁড়া শিকার করে তারা প্রতিদিন ৫ থেকে ১ হাজার টাকা আয় করে। এ দিয়েই চলে তাদের সংসার। প্রকার ভেদে এ সকল কাকঁড়া ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে আড়ৎদারের কাছে বিক্রি করে। আড়ৎদাররা এ কাঁকড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী করে থাকেন। কাকঁড়া শিকারী নিজামুর রহমান ও মোঃ জলিল হাওলাদার জানান, কাকঁড়া শিকার করে দৈনিক ৫ থেকে ৬শ’ টাকা আয় করি। এ দিয়েই চলে সংসার। তারা আরো জানান গহীন অরন্যের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁকড়া শিকার করতে হচ্ছে। এ জঙ্গলে বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ও বন্যপ্রাণী রয়েছে। ওইগুলোর সাথে মোকাবেলা করে কাকঁড়া শিকার করতে হয়। শিকারী আবদুল রাজ্জাক “মোগো কোন জায়গা জমি নাই কারহা শিহার করইয়্যা খাই”। সোহেল জানান,কাকঁড়া শিকার করতে ফরেষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলে কাকঁড়া শিকার করতে দেয় না। মোঃ শহীদুল ইসলাম বলেন “ মোগো আর কোন কাম নাই কাড়হা ধইর্যা সোংসার চালাই। প্রতিদিন কাড়হা ধরলে ৫ থেকে ৬ শ টাহা পাই”। ফকির হাট মৎস্য সমিতির সহ-সভাপতি মোঃ আবদুস সালাম হাওলাদার জানান, কাঁকড়া শিকারীরা কাকড়া শিকার করে তাদের জীবন জিবিকা নির্বাহ করে থাকে। তিনি আরো জানান কাঁকড়া শিকারীরা গহীন অরন্যে কাকড়া শিকার করায় বন দস্যূদের হাত থেকে গাছপালা রক্ষা পায়। তালতলী সকিনা বীট কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ প্রামানিক বলেন, জানুয়ারী ফেব্রুয়ারী দু’মাস প্রজনন মৌসুম এ সময়ে কাকঁড়া ধরা নিষিদ্ধ। এ ছাড়া বাকী সময়ে কাকড়া ধরে জীবন জিবিকা নির্বাহ করে থাকে।
×