ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলের উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে সেতু

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

টাঙ্গাইলের উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে সেতু

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলের বাসাইলে উদ্বোধনের আগেই হেলে পড়েছে প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দীর্ঘ একটি সেতু। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অভিযোগ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সেতুটি উদ্বোধনের আগেই ধ্বসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। আর এর জন্যে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তাকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। জানা গেছে, গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে টাঙ্গাইল জেলার ১২টি উপজেলায় মোট ১২৮টি সেতু নির্মাণের দরপত্র আহবান করা হয়। এর মধ্যে বাসাইল উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সাতটি ব্রীজ রয়েছে। সাতটি সেতুর মধ্যে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। বাকি তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান আছে। বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের ফুলকি-ফুলবাড়ি রাস্তার নিকরাইল টেরাখালী সেতুর কাজ পায় মেসার্স আব্দুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি প্রায় তিন মাস আগে সমাপ্ত হয়। সেতুটি নির্মাণের সময়েই রড, সিমেন্ট ও বালুসহ খুবই নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা মৌখিকভাবে বেশ কয়েকবার অভিযোগ জানায় বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেনের কাছে। কিন্তু ওই কর্মকর্তা এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় বাবুল মিয়ার অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণের সময় ঠিকাদারকে দেখা যায়নি। সে সময় ধান কাটা শ্রমিকদের দিয়ে সেতুর কাজ করতে দেখা যায়। এসব অনিয়মের ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তাকে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। একই অভিযোগ স্থানীয় অনেকের। তাদের অভিযোগ, প্রকল্প কর্মকর্তার উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণেই সেতুটির উদ্বোধনের আগেই এই অবস্থা। স্থানীয় ১০/১৫ গ্রামের সাথে উপজেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ চলে আসছে। সেতুটি হেলে গিয়ে ধ্বসে পড়ার আশংকায় ওই সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয়রা। তাদেরকে এখন প্রায় ১৫ কিলোমিটার ঘুরে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে বাসাইল উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতের কারণে ব্রীজটি হেলে পড়েছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। উদ্বোধনের আগেই প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি হেলে পড়ার বিষয়ে বাসাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল ইসলাম জানান, সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই প্রকল্প অফিসের প্রকৌশলীরা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্নধার জাহিদের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামছুন নাহার সম্পা তদন্তপূর্বক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
×