ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় গর্ভেই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রসূতির স্বজনরা হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষ ঘেরাও ও বিক্ষোভ করেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ স্বজনরা হাসপাতালের দরজা-জানালা ভাংচুরও করে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর আসাম কলোনী এলাকার নাজমুল হাসান টগরের প্রসূতি স্ত্রী জুলিয়া বেগম প্রসব বেদনা নিয়ে গত শনিবার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিন থেকেই তিনি হাসপাতালের ৪০৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। জুলিয়ার স্বামী নাজমুল হাসান টগর জানান, শনিবার রাত ১২ টার দিকে তার স্ত্রীকে নগরীর নওদাপাড়ায় রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জুলিয়াকে চিকিৎসক আবেদা বেগমের তত্বাবধানে দেন। রাতেই চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মা ও সন্তান ভাল আছে বলে জানায়। এরপর ভোর ৬টার দিকে অপারেশনের (সিজার) সময় দেন। কিন্তু তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। নয় ঘন্টা পর বিকেল ৩টার দিকে তার স্ত্রীর সিজার করা হয়। সময়মত সিজার না করায় গর্ভে তার সন্তানের মৃত্যু হয় বলে দাবি করেন তিনি। এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে চিকিৎসক আবেদা বেগমকে পাওয়া যায়নি। তবে তার সহকারি সাবিনা বলেন, শাশুড়ির মৃত্যুর খবর পেয়ে ভোরেই ম্যাডাম (ডা. আবেদা বেগম) কুষ্টিয়া চলে যান। সকাল ৮টার দিকে ফোন করে ম্যাডাম বিষয়টি জানান। ম্যাডাম বলেন, আমি দুইদিন কোন রোগি দেখবো না তা কর্তৃপক্ষেকে জানিয়ে দিও। এরপর সকাল নয়টার দিকে তিনি (সাবিনা) পরিচালকে বিষয়টি অবগত করান। প্রসূতি জুলিয়ার চাচা ইমন শেখ জানান, নির্ধারিত চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে আরেকজন চিকিৎসককে দায়িত্ব দেয়ার কথা। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেটি করেননি। তাদের অবহেলায় গর্ভে সন্তান মারা যায়। এ নিয়ে কথা বলতে গেলে পরিচালক মামুনুর রশিদ বলেন এটি একটি দুর্ঘটনা বলে তাদের জানিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রসূতির স্বজনরা পরিচালকের অফিস ঘেরাও করে। যোগাযোগ করা হলে ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মামুনুর রশিদ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নগরীর শাহমুখদুম থানার ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, হাসপাতালের ভিতরে রোগির সজনদের উত্তেজনার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে উত্তেজিত লোকজনকে হাসপাতাল থেকে বের করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এসময় রোগীর উত্তেজিত স্বজনরা বের হওয়ার সময় গেটের কাছে তারা দরজা ও জানালার কাজ ও টপ ভাংচুর করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
×