ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবেশ দূষণের আশঙ্কা

পটিয়ায় লোকালয়ে নির্মিত হচ্ছে তিন বিদ্যুত কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

পটিয়ায় লোকালয়ে নির্মিত হচ্ছে তিন বিদ্যুত কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটিয়া, ২১ জানুয়ারি ॥ কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীরে পটিয়া উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়নে একের পর এক বেসরকারীভাবে লোকালয়ে গড়ে উঠছে বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র। বর্তমানে এক সঙ্গে ৩টি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। আনলিমা, আল বারাকা ও এনার্জি প্যাক নামের কোম্পানি কোলাগাঁও ইউনিয়নের ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে এসব বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এর আগে ওই এলাকায় এনার্জি প্যাকের ১০৬ মেগাওয়ার্ডের একটি বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র চালু রয়েছে। বেসরকারীভাবে নির্মাণাধীন বিদ্যুত কেন্দ্র এলাকায় ইতোমধ্যে বেশ কিছু সরকারী খাস জায়গাও দখল হয়েছে। একটি প্রভাবশালী মহল ও ঘুষখোর কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে খাস জায়গা দখল করে নিচ্ছে। সরকারী দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে রয়েছে উপজেলা বিএনপির স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতাও। যার কারণে তাদের ভয়ে এলাকার কেউ প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পর্যন্ত পাচ্ছে না। নতুন করে একটি বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন প্রজাতির বেশকিছু গাছ নির্বিচারে কেটে ফেলেছে। তাছাড়া কর্ণফুলী নদীর শাখা কোলাগাঁও এলাকার একটি ছড়া খাল (খাস) দখল করে ভরাট করা হয়েছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ, লোকালয়ে একের পর এক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের ফলে শব্দ দূষণের পাশাপাশি ধোঁয়ায় এলাকার পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শব্দ দূষণের কারণে রাতে তারা এলাকায় ঘুমাতে পর্যন্ত পারছেন না। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কোলাগাঁও ইউনিয়ন কর্ণফুলী নদীর পূর্ব তীরে। ওই এলাকার নদীর তীরে এনার্জি প্যাক কোম্পানি ১০৬ মেগাওয়াডের একটি বিদ্যুত কেন্দ্র সর্বপ্রথম নির্মাণ করে। যা চালু রয়েছে। বর্তমানে ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে আরও ৩টি বেসরকারী বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। খাস জায়গা ও ছড়া খাল ভরাট করে লোকালয়ে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গ্রামবাসী তাদের প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ক্ষোভের ঝড় তুলেছেন। এক দেড় কিলোমিটারের মধ্যে পুরাতনসহ ৪টি বিদ্যুত কেন্দ্রের ইঞ্জিন ২৪ ঘণ্টা চালু থাকলে শব্দ দূষণ ও ধোঁয়ায় পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া বিদ্যুত কেন্দ্র ও কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কারণে কোলাগাঁও এলাকায় টিউওয়েলের পানি নি¤œস্তরে নেমে পড়েছে। ফলে ওই এলাকার লোকজন টিউবওয়েলের পানি পান করতে না পারায় বিভিন্ন রোগব্যাধিতে তারা আক্রান্ত হচ্ছেন। নির্মাণাধীন ৩টি বিদ্যুত কেন্দ্রের আশপাশে কমপক্ষে ৩ হাজার লোকের বসতি ছাড়াও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য শিক্ষার্থী প্রতিদিন লেখাপড়া করে থাকেন। কোলাগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আহমদ নূর জানিয়েছেন, তাদের এলাকার সীমানায় শিকলবাহা এলাকায় রয়েছে আরও ৩টি বিদ্যুত কেন্দ্র। তাছাড়া কোলাগাঁও এলাকায় শুরু থেকে এনার্জি প্যাকের একটি বিদ্যুত কেন্দ্র থাকলেও নতুন করে আরও ৩টি বেসরকারীভাবে বিদ্যুত কেন্দ্র লোকালয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করায় গ্রামবাসী দিন দিন ক্ষোভে ফুঁসছে। এক শ্রেণীর লোভী কিছু ব্যক্তি সরকারী খাস জায়গা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। বিষয়টি ইতোমধ্যে তিনি উপজেলা প্রশাসন ও সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) অবহিত করেছেন।
×