ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ময়লার দুর্গন্ধে মানুষের দুর্ভোগ

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ময়লার দুর্গন্ধে মানুষের দুর্ভোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর ৩নং ওয়ার্ড কাউনিয়া এলাকার কলেজ, মাদ্রাসা, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং আটটি এলাকার ২৫ হাজার মানুষ বরিশাল সিটি কর্পেরেশনের ডাম্পিং স্টেশনের ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে দীর্ঘদিন থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সূত্রমতে, নির্ধারিতস্থান ভরাট হয়ে যাওয়ার পর গত ছয় মাস ধরে পাকা সড়কের ওপর ময়লা ফেলায় জনসাধারণের পাঁকা সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি যেন দেখার কেহ নেই। উপায়অন্তুর না পেয়ে নগরীর কাউনিয়া ৩নং ওয়ার্ডের পূর্ব পুরানপাড়া, মহাবাজ, সাপানিয়া, হোসনাবাদ ও গাউয়াসর এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে বিসিসির ময়লার গাড়ি আটকে দিয়ে গাড়ি ঢোকার সকল রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। রবিবার বেলা ১১টায় নগরীর পূর্ব পুরানপাড়ার ডাম্পিং স্টেশনে (ময়লার ভাগাড়) গিয়ে দেখা গেছে, ময়লা বহনকারী গাড়িগুলো ময়লা ফেলার সড়কে প্রবেশের সব পথে গাছের বড় বড় গুড়ি ফেলে ও বাঁশ বেঁধে বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসী। এরপূর্বে শনিবার ভূক্তভোগীরা বিসিসির ময়লা বহনকারী একটি গাড়ি আটক করে বিক্ষোভ করেছেন। স্থানীয়রা জানান, নগরীর বিভিন্নস্থানের ময়লা এনে এখানে ফেলার কারনে বিসিসির নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশনের জমি ভরাট হয়ে যাওয়ায় গত ছয় মাস থেকে আশপাশের জমি, খালসহ চলাচলের রাস্তার ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। রাস্তার ওপর ময়লা ফেলায় এলাকাবাসীর চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি ময়লার দুর্গন্ধে স্থানীয়দের ওই এলাকায় বসবাস করা অযোগ্য হয়ে পরেছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, ময়লার দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ দূষিত হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পরেছেন এলাকাবাসী। সাপানিয়া এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি আনোয়ার হোসেন ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ডাম্পিং স্টেশনটি ময়লায় ভর্তি হয়ে যাওয়ায় গত ছয় মাস থেকে বর্জ্য পার্শ্ববতী জমিতে ফেলা হচ্ছে। ফলে দুর্গন্ধে গত ছয় মাসে আশপাশের অনেক বাসিন্দারা ওই এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। বর্তমানে চলাচলের রাস্তাসহ কৃষি জমিতে বর্জ্য ফেলে পরিবেশ দূষিত করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা অনিক আহমেদ জানান, ডাম্পিং স্টেশনে বিসিসির জমি পরিপূর্ণ হওয়ায় এখন তাদের (অনিক) জমিতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। যেকারণে তাদের গাছপালা বিনষ্ট হয়ে এখন আর জমির আশপাশে কোনো ফসল উৎপাদন হয়না। এছাড়া সন্ধ্যার পর বর্জ্যে আগুন দেয়া হলে পুরো এলাকা ধোয়া এবং দুর্গন্ধে দূষিত হয়ে পরে। জনসাধারণের জন্য চলাচলের একমাত্র রাস্তার ওপর বর্জ্য ফেলে ভরে ফেলায় পার্শ্ববর্তী চরবাড়িয়া এলাকার সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরেছে। সাপানিয়া স্কুল ও মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলর আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান খান ফারুক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সম্প্রতি সময়ে ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে জনসাধারনের চলাচলের জন্য পাকা সড়ক নির্মান করা হয়েছে। গত ছয় মাস ধরে রাস্তার ওপর ময়লা ফেলায় পুরো রাস্তাটি এখন ময়লার নিচে চাঁপা পরে গেছে। এ ব্যাপারে বিসিসি’র পরিস্কার পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা আক্ষেপ করে বলেন, দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মেয়রকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, ময়লা-আবর্জনার কারনে মানুষের চলাচলের ক্ষেত্রে যেন কোন ধরনের অসুবিধা না হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মেয়রকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
×