ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

টিম হিসেবে দুর্দান্ত খেলেছি আমরা ॥ ডিভিলিয়ার্স

প্রকাশিত: ২০:৪১, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

টিম হিসেবে দুর্দান্ত খেলেছি আমরা ॥ ডিভিলিয়ার্স

অনলাইন ডেস্ক ॥ কেপ টাউনের পর সেঞ্চুরিয়ন। দু’টি টেস্টেই ব্যাট হাতে মোক্ষম সময়ে অসাধারণ ইনিংস খেলে তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ভারতের কাঁটা। সিরিজ জিতে নেওয়ার পরের দিন এ বি ডিভিলিয়ার্স সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের একটি অনুষ্ঠানে। তুলে দেওয়া হল প্রধান অংশ— দু’টো গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলা: টেস্ট ক্রিকেট সব চেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ। দারুণ একটা সিরিজের অংশ হতে পেরে খুবই ভাল লাগছে। খুবই উপভোগ করছি। আমার একার নয়, টিম হিসেবে দুর্দান্ত খেলেছি আমরা। ব্যাটিংয়ে পার্টনারশিপ হওয়া থেকে শুরু করে ক্যাচিং— সমস্ত কিছুই দারুণ হয়েছে। খুব ভাল দু’টো টেস্ট ম্যাচ খেলেছি আমরা এবং ছেলেদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটাচ্ছি। তাঁর এবং বিরাটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা: আমাদের দিকে আরও অনেকেই কিন্তু ব্যাট হাতে অবদান রেখেছে। ফ্যাফ রান করেছে। ডিন এলগারের কথাও না বললে অন্যায় হবে। প্রথম ইনিংসে বিরাট দারুণ খেলেছে। আমি ওকে মাঠেই অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। আমরা এখন ওয়ান্ডারার্স টেস্টের দিকে তাকিয়ে আছি। ওখানে কিন্তু সেঞ্চুরিয়নের চেয়ে বেশি পেস এবং বাউন্স থাকবে। ওয়ান্ডারার্সে সেঞ্চুরি হবে কি না: করতে পারলে খুবই ভাল হবে। আমরা সব সময়ই দেশের হয়ে খেলতে নেমে বড় রান করার চেষ্টা করেছি। গত দু’টি টেস্টে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি কারণ উইকেট অন্য রকম ছিল। ভারতীয় বোলারদেরও কৃতিত্ব দিতে হবে, ওরা ভাল বল করেছে। আমি সেঞ্চুরি করতে পারলে নিশ্চয়ই আনন্দ পেতাম কিন্তু আমি ও রকম মানসিকতা নিয়ে খেলতে নামি না। সেঞ্চুরিটা লক্ষ্য থাকে না। লক্ষ্য থাকে দলের হয়ে অবদান রাখা। যদি ৫০-৬০ করলে সেটা দলকে সাহায্য করে, তাতেই আমি খুশি। যদি সেঞ্চুরি করতে পারি, সেটা হবে বোনাস। দুই টেস্টে ইতিবাচক ব্যাটিং: কোনও কিছু ঠিক করে নামিনি যে, আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করব। আমি বল অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করি। বরাবরই বলে এসেছি, তিনটে ফর্ম্যাটে খুব তফাত আছে বলে আমি মনে করি না। এটা একটা মানসিক ব্যাপার ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রজন্ম বদল হচ্ছে: আমি কয়েকটি যুগ বদল দেখেছি ক্রিকেটে। গত ১৩ বছর ধরে নানা পরিবর্তনের সাক্ষী থেকেছি। তরুণদের দেখে আমি মুগ্ধ। লুঙ্গি এনগিডি যে রকম পরিণতি বোধ দেখিয়েছে, তাতে আমি বিস্মিত হয়ে গিয়েছি। কাগিসো রাবাডার কথাও বলতে চাই। এই সে দিন শুরু করল ক্রিকেট যাত্রা, অথচ বোলিং দেখে মনে হবে দশ মরসুম খেলা হয়ে গিয়েছে। এত দ্রুত পরিণত হয়ে উঠেছে রাবাডা। এখন বিশ্বের এক নম্বর বোলার ও। তরুণদের আগমনে ড্রেসিংরুমে নতুন এনার্জি আসছে। লক্ষ্য কি ৩-০: (মজা করে) আমি তো মনে করতে পারছি না ২০১৫-তে ভারতে কী হয়েছিল। ওহ্ হ্যাঁ, আমরা একদিনের সিরিজে জিতেছিলাম। এখানে ৩-০ জিততে পারলে দারুণ ব্যাপার হবে, কিন্তু ক্রিকেটে কোনও কিছুর গ্যারান্টি হয় না। এই ভারতীয় দল আমাকে সত্যিই ওদের বোলিং বিভাগ দিয়ে অবাক এবং মুগ্ধ করেছে। অনেক বেশি স্কিল নিয়ে এ বারের বোলাররা এসেছে এবং অবশ্যই অনেক বেশি গতিসম্পন্ন বোলার ওরা। আমরা এতটা গতি ওদের থেকে আশা করিনি। তাই আমরা জানি, তৃতীয় টেস্টেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কাজটা মোটেও সহজ হবে না। ওরা লড়াই করবে, ভাল ভাবে টেস্ট সিরিজ শেষ করে সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে একদিনের সিরিজে যেতে চাইবে। কিন্তু নিশ্চয়ই ওদের ৩-০ হারাতে চাইব। গত দু’টি টেস্টের মতোই আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। কতটা ফিট লাগছে: মনে হচ্ছে, শুরুর সেই দিন যেন ফিরে পেয়েছি। গত কয়েক মাসে আমি অনেক বার বলেছি, মাঠে ফিরে টেস্ট ক্রিকেটে ভাল করার জন্য ছটফট করছি। একটা লম্বা বিরতির পর এটাই হয়ে থাকে। সামান্য কিছু চোট-আঘাত রয়েছে কিন্তু সেটা টেস্ট ক্রিকেটের অঙ্গ। সকালে উঠে কখনওই একশো শতাংশ মনে হবে না। কোমর, গোড়ালি, হাঁটু— সব জায়গাতেই কিছু না কিছু ব্যথা রয়েছে। কিন্তু ক্রিকেটের সেরা ফর্ম্যাটে খেলার চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছিলাম। দুর্দান্ত ক্যাচ নেওয়া: আমি এ ভাবেই সব সময় ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেছি। যখন ব্যাট হাতে নামি, অবদান রাখার চেষ্টা করি। তেমনই আমাকে যখন কোনও একটা পজিশনে দাঁড় করানো হয়, সেখানেও সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি ক্যাচ নিতে ভালবাসি। হয়তো ক্যাচ মিসও করি, আমিও মানুষ। কিন্তু শরীরের অবস্থা যে রকমই থাকুক, আমি বলের কাছে পৌঁছতে চাই। বিরাটের সঙ্গে আইপিএল কথা: এ বার আমরা নিশ্চয়ই আইপিএল জিততে চাইব। আমি নিশ্চিত, টেস্ট সিরিজটা হয়ে যাওয়ার পরে বিরাটের সঙ্গে কথা হবে। যাদের সঙ্গেই খেলি না কেন, সিরিজ শেষে আমরা প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে দেখা করি, সময় কাটাই। আমি নিশ্চিত, সিরিজ শেষে ভারতীয় দলও আমাদের ড্রেসিংরুমে আসবে। তখন নিশ্চয়ই বিরাটের সঙ্গে অনেক কিছু নিয়েই কথা হবে। এ বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে আইপিএল জিততে পারলে দারুণ লাগবে, তবে এখনও কিছুটা সময় আছে হাতে। তাই এখনই পুরোপুরি আইপিএলের ভাবনা মাথায় আসেনি। অতীতের তুলনায় এখনকার ফর্ম: আমার মনে হচ্ছে, জীবনের সেরা ফর্মে রয়েছি। আবার বলছি, ক্রিকেটে কোনও কিছুই নিশ্চিত নয়। পর-পর পাঁচটা সেঞ্চুরি পেতে পারো, পাঁচটা শূন্যও আসতে পারে। তাই আগাম কোনও কিছু বলতে চাই না। শুধু বলব, আমার প্রস্তুতি নিয়ে খুশি। ব্যাটে-বলে ভাল সংযোগ হচ্ছে দেখে খুশি। জীবনের সেরা সময়ে আছি বলেই আমার মনে হচ্ছে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×