ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

আজ জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ ১৯ জানুয়ারি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি মরহুম জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালন করতে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এরই অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরে বাংলানগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেবেন। কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র নেতারা। এদিকে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাভূত করতে হবে। উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর নিভৃত পল্লী বাগবাড়ীতে কমল নামে যে শিশুর জন্ম হয়েছিল তিনিই জিয়াউর রহমান। মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তৎকালীন সেনাবাহিনীর মেজর জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধকালে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে মেজর জিয়া ছিলেন সম্মুখসমরে। এর স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর ১৯ দফা কর্মসূচী সামনে রেখে জিয়াউর রহমান গঠন করেন জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। একদল সেনা সদস্যের হাতে ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নিহত হন জিয়াউর রহমান। জিয়ার জন্মবার্ষিকীতে ৭ দিনের কর্মসূচী ॥ এবার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৭ দিনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। ৮ জানুয়ারি নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। কর্মসূচী অনুসারে আজ ১৯ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী জিয়ার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের সকল কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হচ্ছে এবং সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও পোস্টার প্রকাশ হচ্ছে। এ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও শনিবার থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও নিজ নিজ উদ্যোগে আলোচনা সভার আয়োজন করবে। জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবার দরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবনের ওপর আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করছে। শ্রমিক দল দিবসটি উপলক্ষে শনিবার র‌্যালির আয়োজন করবে। মুক্তিযোদ্ধা দল আলোচনা সভা ও বুকলেট প্রকাশ করবে। মহিলা দল দুঃস্থদের মাঝে শাড়ি কাপড় বিতরণ করবে। ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের আয়োজন করছে। জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাভূত করতে হবে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, মুক্তিযুদ্ধে জেড ফোর্সের অধিনায়ক, জাতীয়তাবাদী দর্শনের দিশারী’ জিয়াউর রহমানের ৮২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের এক চরম নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ১৯৭৫ সালের ৭ নবেম্বর জাতীয় রাজনীতির পাদপ্রদীপের আলোয় উদ্ভাসিত হন জিয়াউর রহমান। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন। স্বাধীনতাত্তোর চরম হতাশায় দেশ যখন নিপাতিত, জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া যখন বাধাগ্রস্থ ঠিক তখনই জিয়াউর রহমান জনগণের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই মানুষের হারানো অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনর্প্রতিষ্ঠা করেন, নিশ্চিত করেন মানুষের বাক, ব্যক্তি ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। উৎপাদনের রাজনীতি প্রবর্তন করে তিনি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করে গড়ে তুলতে সক্ষম হন। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন দেশে উন্নীত করেন। তাঁর বহুমত এবং পথের লালন ও পরিচর্যা এবং দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে মর্যাদার আসনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, জিয়া ছিলেন আধিপত্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এক আপোসহীন দেশপ্রেমক রাষ্ট্রনায়ক। তাই সকল ধরনের বৈদেশিক চাপ ও অশুভ প্রভাব বিস্তারের অপচেষ্টাকে অগ্রাহ্য করে স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ জিয়ার এক অবিস্মরণীয় অবদান। যার কারণে দেশের সার্বভৌমত্ব শক্তিশালী হয় এবং স্বাধীন জাতি হিসেবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ভূমিকা বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে। তাই দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা নিজেদের নীলনক্সা বাস্তবায়নের কাঁটাভেবে জিয়াকে নির্মমভাবে হত্যা করে। কিন্তু তার এই আত্মত্যাগে জনগণের মধ্যে গড়ে উঠেছে দেশবিরোধী চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে এক ইস্পাত কঠিন গণঐক্য।
×