ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা লড়াই আজ

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা লড়াই আজ

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে আজ লড়াই হবে। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে এ দুটি দল মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর ১২টায় শুরু হবে। দুই দলই ম্যাচটি জিততে মরিয়া। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা যেমন বলেছেন, ‘ম্যাচটা খেলতে হবে, জিততে হবে। এর বাইরে কোন সুযোগই নাই চিন্তা করার।’ শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবীরা বলেছেন, ‘এখনও তিনটি ম্যাচ আছে। আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি। খুবই কম ব্যবধানে (জিম্বাবুইয়ের কাছে) হেরেছি। যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি তাহলে কাল (আজ) ভাল একটি ম্যাচ হবে। ত্রিদেশীয় সিরিজে যে কোন দলের বিপক্ষে জেতা যেতে পারে। আমরা ভাল রেজাল্ট বের করে আনার বিশ্বাস রাখি।’ বাংলাদেশ যদি ম্যাচটি জিতে তাহলে সিরিজে টানা দ্বিতীয় জয় পাবে। আর শ্রীলঙ্কা যদি জিতে তাহলে প্রথম জয় মিলবে। সিরিজের সমীকরণ জমে উঠবে। তখন বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাসহ সিরিজের আরেক দল জিম্বাবুইয়েরও একটি করে জয় হয়ে যাবে। পরের ম্যাচগুলোতে যে দলগুলো জিতবে তাদেরই ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জেগে উঠবে। তবে আজ যদি বাংলাদেশ জিততে পারে তাহলে ফাইনালে খেলার আশা জেগে যাবে। এ সিরিজের আগে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার গত বছর এপ্রিলে লড়াই হয়। শ্রীলঙ্কার মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে দুই দল। সিরিজটি ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়। বাংলাদেশ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে জিতে। দ্বিতীয় ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়। তৃতীয় ওয়ানডে জিতে শ্রীলঙ্কা। সিরিজ জয়েরই সম্ভাবনা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ ওয়ানডেতে হারায় তা সম্ভব হয়নি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাস সমৃদ্ধ নয়। লঙ্কানদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৪১ ম্যাচে মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ৫টি ওয়ানডে জিতে। ৩৪টি ওয়ানডেতেই হারে। দুটি ম্যাচের রেজাল্ট হয়নি। দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভাল রেজাল্ট আছে। তাও খুব বেশি নয়। ১৪ ম্যাচের মধ্যে ১১টিতেই হারে। ৩টি ম্যাচে জিতে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের মধ্যে ১টি ম্যাচে শুধু জিততে পারে বাংলাদেশ। সর্বশেষ টানা চারটি ম্যাচেই হারে। তবে এই পরিসংখ্যানগুলো ২০১৪ সাল পর্যন্ত। এরপর তো দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডেই খেলেনি বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের শেষদিক থেকে যে বাংলাদেশ এতটা সাফল্য পেয়েছে, সেই পরিস্থিতিতে পড়েনি শ্রীলঙ্কা। পড়লে বুঝতো বাংলাদেশের বিপক্ষে জেতা যে কতটা কঠিন। অবশ্য এখনও বাংলাদেশের সামনে সেই সুযোগ আছে। বাংলাদেশ এখন দেশের মাটিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী দল হয়ে উঠেছে। যে কোন দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে যে খেলা দেখিয়েছে শ্রীলঙ্কা, তাতে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান-বোলাররা যদি নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারে তাহলে শ্রীলঙ্কাকে হারানো কঠিন হওয়ার কথা না। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে জিতেছে বাংলাদেশ। ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ম্যাচটি খেলবে সেই ম্যাচে জেতার তাড়না আরও বেশি। ক্রিকেটারদের মধ্যে ম্যাচটি জেতার ক্ষেত্রে অন্যরকম জেদ থাকার কথা। কারণ শ্রীলঙ্কার কোচ এখন চন্দিকা হাতুরাসিংহে। যিনি এ সিরিজের আগেও বাংলাদেশের প্রধান কোচ ছিলেন। এ সিরিজ থেকে শ্রীলঙ্কার কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন। হাতুরাসিংহে কোচ থাকার সময় যে সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ তা ঈর্ষণীয়। এ সাফল্য যে ক্রিকেটারদের জন্যই সম্ভব হয়েছে তা বুঝিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া শ্রীলঙ্কা যে ২০১৪ সালের পরের বাংলাদেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের মাটিতে খেলেনি, এই বাংলাদেশকে দেখেনি; তাও দেখিয়ে দিতে হবে। ম্যাচটি জিতলে টানা দুই জয় মিলবে। সিরিজের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জোরালো হবে। এসব বিবেচনায় আজকের ম্যাচটি বাংলাদেশের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এখন জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলেই হয়। বাংলাদেশের যে অবস্থা, শ্রীলঙ্কারও একই অবস্থা। বাংলাদেশের জন্য যেমন মর্যাদার লড়াই, শ্রীলঙ্কার জন্য টিকে থাকার লড়াই। হাতুরাসিংহের জন্য মর্যাদার লড়াই। হাতুরাসিংহে যে করে হোক আজকের ম্যাচটি জিততে চাইবে। তাছাড়া জিম্বাবুইয়ের কাছে হারের পর বাংলাদেশের কাছেও যদি হারে শ্রীলঙ্কা তাহলে সিরিজের ফাইনালে ওঠার স্বপ্ন শ্রীলঙ্কার শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। দুই দলের জন্যই ম্যাচটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এখন দেখা যাক, কোন দল ম্যাচটিতে জয় তুলে নিতে পারে।
×