ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নাটোরে সওজ’র অবৈধ দখল উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদ

প্রকাশিত: ০০:২০, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

নাটোরে সওজ’র অবৈধ দখল উচ্ছেদের নামে বৈধ মালিকদের উচ্ছেদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর ॥ নাটোরে সড়ক ও জনপদ বিভাগ মহাসড়কের দু’ধারে অবৈধভাবে গড়ে উঠা অসংখ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন তাদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনরুপ নোটিশ না দিয়েই তাদের অনেকগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেকু মেশিন দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসময় তাদের দোকানে থাকা পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়নি। একারণে তাদের ক্ষতি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, এঘটনার প্রতিবাদে তারা মানব বন্ধন করতে চাইলেও পুলিশি বাধার কারণে মানব বন্ধন করতে পারেননি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানায়, গত ১৬ জানুয়ারী থেকে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ নাটোর থেকে সিংড়া ও নাটোর-বনপাড়া পর্যন্ত মহাসড়কের দু’ধারেসহ নাটোর শহরের বড়হরিশপুর ও মাদরাসা মোড় ও কানাইখালী এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এসময় অসংখ্য স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। কানাইখালী এলাকার সিটি মেডিক্যাল স্টোরের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহীম হোসেন, রানা ওয়াচ এন্ড ইলেকট্রনিক্স এর মালিক প্রমোদ ধর, মাস্টার ফার্মেসীর মালিক বাবু, ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল হলের মালিক আলহাজ্ব আব্দুল হালিম, চিত্ত মেডিক্যাল স্টোরের মালিক চপল সরকার এবং মামুন ষ্টোরের মালিক আককাস আলী জানান, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পৌরসভার কাছ থেকে বৈধ ভাবে দোকানের পজেশান নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। নিয়মিতভাবে তারা ভাড়া পরিশোধ করে আসছেন। কিন্তু গতকাল বুধবার সন্ধার দিকে কোনরুপ নোটিশ না দিয়েই তাদের ছয়টি দোকান গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এসময় তাদের দোকানে রক্ষিত পণ্য সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার কোন সুযোগ দেয়া হয়নি। ফলে তাদের লক্ষ লক্ষ টাকার ঔষধ সহ অন্যান্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যায়। তারা অভিযোগ করেন, দোকান ভাঙ্গার পূর্বে সড়ক ও জনপথ বিভাগ তাদের কোনরুপ নোটিশ বা সড়ক ও জনপথ বিভাগের বলে ল্যান্ড মার্ক দেয়া হয়নি। ফলে তারা নিশ্চিন্ত মনে ব্যবসা করার সময় এই ঘটনা ঘটানো হয়। ব্যবসায়ীরা জানান, এঘটনার প্রতিবাদে এবং এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার সময় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা মানব বন্ধন করার কর্মসূচী গ্রহণ করেন এবং নাটোর শহরে মাইকিং করেন। কিন্তু পুলিশি বাধার মুখে তারা মানব বন্ধন করতে পারেন নি। তারা বলেন, অনেক দিনের পরিশ্রমে গড়ে তোলা সম্পদ নির্মম ভাবে গুড়িয়ে দেয়ায় তারা পথে বসেছেন। কি করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। এখন বাধ্য হয়ে তাদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরন চেয়ে জেলা প্রশাসক, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং নাটোর পৌরসভার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এ বিষয়ে নাটোর পৌর সভার মেয়র উমা চৌধুরী বলেন, এই ৬টি দোকান পৌরসভাকে নিয়মিতভাবে ভাড়া প্রদান করে। এই দোকানগুলোর মালিকানা পৌরসভার । তাছাড়া এ জায়গাটি পৌরসভার রেকর্র্ডিং সম্পত্তি। কিন্তু পৌরসভাকে না জানিয়ে এরুপ ভাংচুরে তিনি হতবাক হয়েছেন। এছাড়া একই দিন শহরের হরিশপুর এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ২৬টি দোকান ঘর গুড়িয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এসমস্ত দোকানের মালিকেরা অভিযোগ করেন এসমস্ত দোকান গুলির মালিকের বৈধ দলিল ও কাগজ পেয়েছে। এখানেও কোনরুপ পূর্ব নোটিশ ছাড়াই ভাংচুর করা হয়েছে। এ বিষয়ে নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম জানান, উচ্ছেদ অভিযান চালোনোর পূর্বে অবৈধ স্থাপনা গুলি সরিয়ে নেয়ার জন্য মাইকং করাসহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গার বাইরে কোন উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়নি। অপরদিকে, মানববন্ধনে বাধা প্রসঙ্গে নাটোর থানার ওসি মশিউন রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিকরা স্মরকলিপি প্রদানসহ ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেন করতে পারে। কিন্তু সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধা হয় এমন কোন কাজ করতে দেয়া হবে না।
×