ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

-অপর্ণা সেন

প্রত্যেকটি চলচ্চিত্রই সন্তানতুল্য

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

প্রত্যেকটি চলচ্চিত্রই সন্তানতুল্য

ষোড়শ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থ দিনে (সোমবার) বিকেল চারটায় কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের সেমিনার কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার অপর্ণা সেন। এ সময় চলচ্চিত্র নির্মাণ নিয়ে নিজ ভাবনা, বর্তমানে চলচ্চিত্রের অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন অপর্ণা। বলেন, চৌদ্দ বছর বয়সে অভিনয় শুরু করলেও চার বছর পড়াশোনার জন্য বিরতি দিয়ে পুনরায় চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। এরপর ‘অপরিচিত’, ‘বাক্স বদল’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। কিন্তু বরাবরই তিনি চাইতেন ব্যতিক্রম চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে যার কারণে তিনি এক সময় মনমতো চরিত্র খুঁজে পাচ্ছিলেন না বলে অভিনয় থেকে খানিকটা বিরতি নেন বলে জানান তিনি। সে সময়টাতে শুরু“করলেন লেখালেখি; তখনই তিনি লিখতে শুরু“করলেন তাঁর প্রথম ছবির গল্প ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’। কিন্তু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অপর্ণা সেন বলনে, প্রথম ছবির গল্প লেখার সময় তিনি মোটেও ভাবেননি এই গল্প থেকেই নিজের প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। বরং প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় যখন গল্প দেখে বললেন ‘ইট হ্যাজ লটস অফ হার্ট, তুমি এই গল্প নিয়ে ছবি নির্মাণ কেন করছ না?’ তখন তিনি প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ করার ভাবনা মাথায় আনেন বলে ব্রিফিং এ উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, এই উৎসবে আমি আমার পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘সোনাটা’ নিয়ে এসেছি প্রদর্শনের জন্য তবে আমি উৎসব পরিচালকদের একটা কথা বলব, প্রজেকশনের দিকটা তাঁদের আরেকটু খেয়াল করা উচিত। প্রত্যেকটা চলচ্চিত্রই তো একজন পরিচালকের কাছে সন্তানতুল্য; সেক্ষেত্রে তিনি নিশ্চয়ই চাইবেন তাঁর ছবি প্রদর্শনের সময় যেন সাউন্ড, ভিডিও কোয়ালিটি ঠিক থাকে। এ সময় প্রেস ব্রিফিং এ অপর্ণা সেনের পাশে উপস্থিত ছিলেন উৎসব পরিচালক আহমেদ মুজতবা জামাল। তিনি এ বিষয়ে সীমাবদ্ধতার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করেন। সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন অপর্ণা সেন। নারী নির্মাতা হিসেবে তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হন কিনা এ মন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নারী নির্মাতা হিসেবে নয়, বরং ছবির গল্পের বিষয়বস্তু না বোঝার কারণে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে কেমন লাগছে তাঁর এবং যদি নম্বর দিতে হয় তাহলে কত নম্বর দেবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে আমি গিয়েছি কিন্তু এই উৎসবে এসে যে একটা উষ্ণতা আমি পেয়েছি তেমনটি আর কোথাও পাইনি। তাই নিশ্চয়ই এই উৎসবকে আমি বেশ উঁটু দরের একটা নম্বর আমি দেব। অপর্ণা সেন কি ফেমিনিজম এ বিশ্বাসী? এর জবাবে তিনি বলেন, আমি মনে করি মানব সমাজের একটি অংশ নারী সমাজ। তাই আমার কাছে ফেমিনিজম হিউমেনিজম এর অংশ। আরেক প্রশ্নের জবাবে, ইংলিশে চিত্রনাট্য করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে তিনি চাচ্ছেন কিন্তু বাজেট পাচ্ছেন না বলে জানান অপর্ণা সেন। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর পরিচালিত জনপ্রিয় ছবি ‘মিস্টার এ্যান্ড মিসেস আয়ার’ এর সিক্যুয়েল নির্মাণ করতে কিন্তু ভারতে ইংলিশ চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্যের জন্য তিনি বাজেট পান না বলে কাজটি করতে পারছেন না। ব্রিফিংয়ের একপর্যায়ে তিনি উৎসব পরিচালকের সঙ্গে কথা বলেন, বাংলাদেশ আর পশ্চিমবঙ্গের ভাষা যেহেতু এক; সেই জন্য দুই দেশের চলচ্চিত্রের আদান প্রদান আরও বেশি হওয়া উচিত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য আর বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র তাই এ বিষয়টিতে কিছু সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ এজন্য তেমন পদক্ষেপ নিতে সক্ষম নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। ব্রিফিংয়ের শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘২০০০ সালের পর তিনি ঢাকা এসেছেন। সেবার এসেছিলাম আমার পরিচালিত ‘পারমিতার একদিন’ চলচ্চিত্র নিয়ে, আর এবারও এসেছি নিজের পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘সোনাটা’ নিয়ে। আনন্দকণ্ঠ ডেস্ক
×