ধনকুবের থেকে মার্কিন মুলুকের প্রেসিডেন্ট বনে যাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতার এক বছর পার করছেন কিন্তু আজও অন্তরালে রহস্যাবৃত্ত হয়ে আছেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া।
মেলানিয়ার জীবন প্রণালী, তার কর্মকাণ্ড, ট্রাম্পের সঙ্গে তার বিয়ে ও তার লক্ষ্য সম্পর্কে এখনও আমেরিকার লাখ লাখ মানুষ কিছুই জানে না। ফার্স্ট লেডি হিসেবে তিনি কারও কারও কাছে ‘অনন্যা’। তবে তাকে নিয়ে বিতর্কের ডালপালা এতদূর প্রসারিত যে, আসলেই তিনি কেমন তা নিয়ে মানুষের কৌতূহল রয়েই গেছে। মেলানিয়া একবার তার স্বামী ট্রাম্পের ব্যক্তিগত বিমানে নগ্ন হয়ে ছবি তুলেছিলেন। গত দুই শ’ বছরের ইতিহাসে তিনিই কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম অন্য দেশে জন্ম গ্রহণকারী বধূ এবং একই সময়ের ইতিহাসে তিনিই সেই ফার্স্ট লেডি, ইংরেজী যার দ্বিতীয় ভাষা।
স্বামী ট্রাম্পের অভিষেকে তাকে দেখা গেলেও এরপর এক বছরে কোন বিশেষ কাজ নিয়ে তিনি জনসমক্ষে আসেননি। সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও লরা বুশ স্থূলতার বিরুদ্ধে ও শিক্ষার প্রসারে প্রচারাভিযান চালিয়ে জনগণের দৃষ্টি কাড়লেও মেলানিয়াকে সুস্পষ্ট কোন কাজে এখনও সম্পৃক্ত হতে দেখা যায়নি। ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে থাকলেও মেলানিয়া তাদের ছোট ছেলে ব্যারনের পড়াশোনার জন্য নিউইয়র্কে থেকে যান। ব্যারনের স্কুল পর্যায় শেষ করার জন্যই তিনি ওয়াশিংটনে স্থায়ী হননি। তবে প্রায়ই তিনি হোয়াইট হাউসে যান এবং তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে দিনে হাজার হাজার ডলার খরচ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডিদের নিয়ে গবেষণা করেন ওহাইও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যাথেরিন জেলিসন। তিনি বলেছেন, ‘এক বছর পর আজও তিনি রহস্যময়ী।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি না, আমেরিকার লোকজন আজও প্রকৃত মানুষটিকে (মেলানিয়া) জানতে পেরেছে।’
নির্বাচনী প্রচারের সময় সাইবার-হাঙ্গামার বিরুদ্ধে তিনি প্রচারাভিযান চালাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আজও সে বিষয়ে তাকে কোনও কাজ করতে দেখা যায়নি। উপরন্তু তার স্বামী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাইবার-হাঙ্গামার মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। ট্রাম্পের বর্তমান বয়স ৭১ বছর। মেলানিয়ার ৪৭। নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সমালোচনা কম হয়নি। তার ওপর এর আগে দুই স্ত্রীর সঙ্গে ট্রাম্পের ছাড়াছাড়ি হয়েছে। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে অনেক লেখালেখি হয়েছে। এত সবের পরও মেলানিয়া ট্রাম্পের দাম্পত্যজীবন নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে। অনেকে বলে থাকেন, ট্রাম্পের কাছ থেকে আলাদাই থাকতে পছন্দ করেন মেলানিয়া।
সম্প্রতি একটি নতুন বইয়ে দাবি করা হয়েছে, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার রাতে কেঁদেছিলেন মেলানিয়া। আরও দাবি উঠেছে, ট্রাম্প টাওয়ারে থাকা অবস্থায় বেশ কিছু দিন তাদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল না। জেলিসন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির মধ্যে কি ধরনের সম্পর্ক, তা জনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে মানুষ এবং এসব নিয়ে মানুষের প্রশ্ন তাদের নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত করছে। তবে অনেকে মনে করেন, হয়ত প্রিন্সেস ডায়ানার মতো এক সময় তিনিও কণ্ঠ তুলবেন, রহস্যের চাদর সরিয়ে আসবেন সবার সামনে। ওয়েবসাইট অবলম্বনে।
