ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অরিন্দম শীল সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবসে স্মৃতিচারণ করলেন

প্রকাশিত: ২০:১৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

অরিন্দম শীল সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবসে স্মৃতিচারণ করলেন

অনলাইন ডেস্ক ॥ গোপনচারিণীর সঙ্গে হঠাৎ দেখা! এক দিনই দেখেছিলাম গোপনচারিণীকে। মুনদির (মুনমুন সেন) ফ্ল্যাটে আড্ডা দিতে গিয়ে। দুই ফ্ল্যাটের মাঝে রহস্যময় দরজা। দরজা না কি লাইব্রেরি? রহস্যের মায়াজাল! আমরা হাসছি, গল্প করছি। তিনি হয়তো পাশেই কিন্তু দেখতে তো পাচ্ছি না! এক ঝলক দেখেছিলাম সুচিত্রা সেনকে। ভুল করে দুই বাড়ির দরজা একটু খোলা ছিল সে দিন। আমার বেল বাজানোর শব্দে তিনি এক ঝটকায় উঠে চলে যান। ওই মূহূর্তই আমার তারা দর্শন! অথচ ছোটবেলায় রুমা কাকির (রুমা গুহঠাকুরতা) বাড়িতে যখন বালিগঞ্জ প্লেস চত্বরে আড্ডা মারতাম তখন উত্তম-সৌমিত্র তর্কে আমি সৌমিত্র, সত্যজিৎ-মৃণালে আমি সত্যজিৎ, মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলে আমি মোহনবাগান, সুচিত্রা-সুপ্রিয়ায় আমি অবশ্যই সুপ্রিয়ার পক্ষে। যখন ছবি করতে এলাম, তখন বুঝলাম সুচিত্রা সেনের ম্যাজিক আর অসম্ভব মানসিক শক্তি। নয়তো যে মহিলা তাঁর জীবনের প্রথম দিকে শাড়িটাও হাঁটুর ওপর পরতেন তিনি আজ অক্ষয় ঐশ্বর্য নিয়ে সেলুলয়েডের মহারানি। এ-ও কি সম্ভব! মানুষ চাইলে কী না পারে? অরুণ চট্টোপাধ্যায় থেকে উত্তম কুমার। কাননবালা থেকে কাননদেবী। আর সুচিত্রা সেন— মানুষের অসাধ্য সাধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সুচিত্রা সেনকে নিয়ে দেবী চৌধুরানি করতে চেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়। সত্যজিৎ রায়, যিনি মুখের অবয়ব দেখে চরিত্র নির্বাচন করতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিনতা নন এমন মানুষ সত্যজিতের ছবিতে নিজের অভিনয় সত্তা খুঁজে পেয়েছেন। আমি নাম বলব না, পরিচালক হিসেবে আজ মনে হয়, এমন অনেক অভিনেতাই আছেন যাঁরা সত্যজিতের পরিচালনার বাইরে গিয়ে তেমন অভিনয় করতে পারেননি। সুচিত্রা ছিলেন এ সবের উর্ধ্বে। নিজেকে গড়েছিলেন তিনি সাফল্য আর বেদনায়। মনস্থির করে নিয়েছিলেন নিজেকে ‘মিথ’ হিসেবে লালন করবেন। নিজের জন্য এই দুঃসহ চাওয়াই তাঁকে অনন্য করেছে। ইন্ডাস্ট্রিও যেন আজও তাঁর অভিপ্রায়ে আর কোনও সুচিত্রা সেনের জন্ম দিতে পারেনি। পারবেও না! সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×