ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত রক্ষণাত্মক হলে ম্যাচ জিতবে দক্ষিণ আফ্রিক ॥ সম্বরণ

প্রকাশিত: ২০:০৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

ভারত রক্ষণাত্মক হলে ম্যাচ জিতবে দক্ষিণ আফ্রিক ॥ সম্বরণ

অনলাইন ডেস্ক ॥ নাটকীয় জায়গায় দ্বিতীয় টেস্ট। শেষ দিনে জিততে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার চাই সাতটা উইকেট। আর ভারতের জিততে গেলে প্রয়োজন ২৫২ রান। ড্র-এর কোনও সম্ভাবনাই নেই। ম্যাচটা হয় বিরাট কোহালিরা জিতবে। নয় হারবে। ভারতকে বুধবার ২৮৭ তাড়া করে জিততে হয়, তা হলে কিন্তু রক্ষণাত্মক মানসিকতার খোলস ছেড়ে বেরোতে হবে। বুধবার সকালে যদি চেতেশ্বর পূজারা এবং পার্থিব পটেল অতি রক্ষণাত্মক খাঁচায় ঢুকে পড়ে, তা হলে কিন্তু ম্যাচ নিয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেমন এ দিন কেএল রাহুল-কে দেখলাম। বল দেখে খেলা মানে তো আর স্কোরবোর্ডকে নিশ্চল রাখা নয়। রাহুল সেখানে ৫০ টি বল খেলে যখন ভুল শট মেরে আউট হল তখন ওর নামের পাশে চার রান! পঞ্চম দিনে পিচ আরও খারাপ হবে। চতুর্থ দিনেই কোন বলটা নিচু হবে আর কোন বলটা উঠবে তা আন্দাজ করা যাচ্ছে না। মুরলী বিজয় এটা সামলাতে না পেরেই আউট হল। সঙ্গে কাগিসো রাবাডা, এনগিডি লুঙ্গিদের গতিও সামলাতে হবে। খেলতে হবে কেশব মহারাজের স্পিনও। প্রশ্ন হচ্ছে তা হলে এই ধরনের পরিস্থিতিতে ম্যাচ জেতার দাওয়াই কী? রক্ষণটা জমাট রেখে পূজারাদের বুধবার প্রথম দু’ঘণ্টায় ক্রিকেট ম্যানুয়াল থেকে বের করে আনতে হবে ধৈর্য আর টেকনিক। বলের ওপর থেকে চোখ যেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত না সরে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসে ওদের অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি বলের বাউন্স বুঝে ঠিক এই ভাবেই ৪৮ রান করে গিয়েছে। ওটাই মডেল হোক ভারতীয়দের। সঙ্গে দরকার একটু সাহসী ব্যাটিং। ফ্রন্টফুটে হাফভলি পেলে মারতে হবে। রাবাডা, লুঙ্গি-রা যদি শর্ট বল করে, তা হলে ফিল্ডার দেখে হুক বা পুল মারতে হবে। কিন্তু ভুলেও চতুর্থ বা পঞ্চম উইকেটের বল খেলা চলবে না। ম্যাচটা এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার দিকেই পঁয়ষট্টি শতাংশ ঢলে পড়েছে। এই জায়গা থেকে বিপক্ষ শিবিরে চাপটা ঠেলে দিতে গেলে আক্রমণটাই সেরা রক্ষণ হতে পারে ভারতের। এই জায়গায় ভারতের তুরুপের তাস হতে পারে হার্দিক পাণ্ড্য (যদিও সে সম্ভাবনা খুবই কম)। দক্ষিণ আফ্রিকার চাপ সামলে যদি একটা একশো রানের পার্টনারশিপ তৈরি করা যায়, তা হলে কিন্তু ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা বাড়বে ভারতের। দুর্ভাগ্য বিরাটের। লুঙ্গির গতির উপর ইনসুইং-টা সামলাতে না পেরে আউট হল। কিন্তু ওটা নিচু হয়েছে বলব না। বিরাট আউট হতেই নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল পার্থিব পটেলকে। আসলে পূজারা এবং পার্থিবের ডান হাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের লাইন ও লেংথে গড়বড় করতেই এই সিদ্ধান্ত। এটা আরও বাড়বে সিঙ্গলস নিয়ে যদি ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই স্কোরবোর্ড সচল রাখে। সেঞ্চুরিয়ন পার্কে গত তিন দিন নির্বিষ বোলিং করলেও ভারত কিন্তু এ দিন ম্যাচে ফিরেছিল মহম্মদ শামির জন্যই। ১৬ ওভার বল করে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে দিয়েছিল ডিন এলগার, এবি ডিভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি’কক এবং কাগিসো রাবাডা-কে। এর মধ্যে সেরা বলটা ও করেছে এবি ডিভিলিয়ার্সকে। বাউন্সের উপর বলটাকে ও আউটসুইং করিয়েছিল অফস্টাম্পের বাইরে। এবি স্টিয়ার করতে গিয়ে ঠকে যায়। এলগারকেও ও ডিপ স্কোয়ার লেগে ফিল্ডার রেখে পরিকল্পনা মাফিক শর্ট বল দিয়ে আউট করেছে। বিরাট বরং এই সময় অশ্বিনের বদলে শামিকে একটু বেশি বল করালে দক্ষিণ আফ্রিকার রানটা কিছুটা কমতেও পারত। সবশেষে একজনের কথা বলতে হবে। সে হল দক্ষিণ আফ্রিকার বোলার লুঙ্গি এনগিডি। সুঠাম চেহারা। রান আপটা পুরনো দিনের ক্যারিবিয়ান পেসারদের মতো। বলের গতি দেড়শোর কাছাকাছি। দু’দিকেই সুইং করায়। এই ছেলেটা কিন্তু আগামী দিনে বিশ্ব ক্রিকেটে অনেক ব্যাটসম্যানের রাতের ঘুম কাড়বে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×