ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ-চাষীরা

প্রকাশিত: ০০:০৩, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

নওগাঁয় সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ-চাষীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। যতদুর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙের ছড়াছড়ি। সরিষা ফুলের হলুদ রংয়ে সেজেছে নওগাঁর ফসলের মাঠ। সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে ভ্রাম্যমান মৌয়ালরা কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ শুরু করেছে। সচেতনতা বৃদ্ধি, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং ঋণের সুবিধা দিলে আগামীতে বাণিজ্যিক ভাবে মধু সংগ্রহ সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এবারের তীব্র শীত আর ঘনকুয়াশা মৌমাছির জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। জেলার মান্দা উপজেলায় প্রায় ২ হাজার মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছে মধু মংগ্রহের জন্য। গত বছর জেলায় ২৩ হাজার কেজি মধু আহরণ করা হয়েছিল। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার কেজি মুধ আহরণ করা হয়েছে। জেলার মান্দা উপজেলার ভারশোঁ, বাঁকাপুর, কৈইকুড়িসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ফসলের মাঠে সরিষা ফুল থেকে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছেন মৌয়ালরা (মৌচাষিরা)। তবে স্থানীয় ভাবে মধু সংগ্রহ না হলেও রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার দর্শনপাড়া থেকে এসে মধু সংগ্রহ করছেন দুই মৌচাষি। সরিষা ক্ষেত এলাকায় অভিনব পন্থায় ইউরোপিয়ান মেলিফেরা জাতের মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। ক্ষেতের পাশে ৬০ টি মধুবাক্স স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি বাক্সে ৮টি করে ফ্রেম সাজানো আছে। সপ্তাহ পর পর ফ্রেম থেকে সংগ্রহ করা হয় মধু। গত ২০দিনে প্রায় ১০ মণ মধু সংগ্রহ হয়েছে। সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি বসায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে এমন ভ্রান্ত ধারনা আছে কৃষকদের মাঝে। ফলে অনেক স্থানে মৌচাষীদের বসতে দেয়া হয়নি। এছাড়া সরিষা ক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। ফুলে মৌমাছি বসায় মৌমাছি মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটে। আগামীতে নওগাঁ জেলাকে মধু উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিতি পাবে। তিনি বলেন, স্থানীয় ভাবে যারা বেকার এবং যুব সমাজ আছে তারা এখনো মৌচাষে উদ্বুদ্ধ হতে পারেনি। উদ্যোক্তা তৈরী হলে আমরা কৃষি বিভাগের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারব। বিশেষ করে বেদে জাতি (ভ্রাম্যমান বসবাস) যদি প্রশিক্ষন নিতে চায় তাদেরও প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। একটি প্রকল্প আছে প্রশিক্ষণের জন্য এবং স্থায়ী ঠিকানা হলে স্বল্পকালীন ঋণের ব্যবস্থাও করা হবে।
×