ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞার ৩৫ বছর পর সৌদি আরবে চলচ্চিত্র প্রদর্শন

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

নিষেধাজ্ঞার ৩৫ বছর পর সৌদি আরবে চলচ্চিত্র প্রদর্শন

অনলাইন ডেস্ক ॥ রক্ষণশীল ইসলামী দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে দীর্ঘ ৩৫ বছর সিনেমা প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা ছিল। অবশেষে রবিবার প্রথমবারের মতো শিশুদের জন্য সিনেমা হলে একটি সিনেমা প্রদর্শনের মাধ্যমে সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেল বলে খবর প্রকাশ করেছে আরব নিউজ। গত বছরে কনসার্ট ও কমেডি শোতে অংশগ্রহণ করা, মেয়েদেরকে গাড়ি চালাতে দেয়া এসব আইন পাশ করার পরিপ্রেক্ষিতেই এবছর নতুন করে সিনেমা হলগুলোতে সিনেমা দেখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। তবে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলো যেন সৌদি আরবের নৈতিক মূল্যবোধের বাইরে না যায় সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। আগামী মার্চ মাসের শুরুতেই প্রথম স্থায়ী সিনেমা হলো চালু হবে। বর্তমানে সরকার জেদ্দায় কিছু অস্থায়ী সিনেমা হলে প্রজেক্টর, লাল গালিচা এবং একটি পপকর্ন মেশিন দিয়ে সহযোগীতা করছে। সপ্তাহজুড়ে সিনেমা প্রদর্শন করা ‘সিনেমা ৭০’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক মামদোহ সেলিম বলেন, সিনেমা হল বানানোর জন্য এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে পর্যাপ্ত অবকাঠমো নেই। আমরা চেষ্টা করছি বিকল্প কোনো স্থানে সিনেমা হলের মত করে কোনো অস্থায়ী সিনেমা হল বানানোর জন্য। গত বছরের ১১ ডিসেম্বরে সিনেমা প্রদর্শনের আইন পাশ হওয়ার প্রেক্ষাপটে এবং মূল সিনেমা শুরু করার লক্ষ্যেই প্রথমে শিশুদের জন্য অ্যানিমেটেড সিনেমা মুক্তি দিচ্ছি। ১৯৮০ সালের শুরুর দিকে মুসলিম নেতাদের চাপের কারণে সৌদি আরবে ধর্মকে আরো রক্ষণশীল করতে মূলত জনগণকে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখা এবং পুরুষ ও নারীর সঙ্গে অবাধ মেলামেশাকে ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে নিরুৎসাহিত করা হয়। কিন্তু ৩২ বছর বয়সী সৌদি যুবরাজ মোহাম্মেদ বিন সালমান দেশের অর্থনীতি আরও বড় করতে এবং তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে এসব বিধি মুছে ফেলেছেন। রবিবার ‘দ্য ইমোজি’ সিনেমা প্রদর্শিত হয় এই অস্থায়ী হলে। স্বপরিবারে সিনেমা দেখে আসার পর ২৮ বছর বয়সী সুলতান আল ওতাইবি বলেন, সৌদির নাগরিকরা এখন ঘরে বসে থেকে সিনেমা দেখার চেয়ে সিনেমা হলে গিয়ে দেখতে পেরে অনেক খুশি। এটি আমাদের জন্য খুবই ভালো হবে এবং আমাদের প্রতি সপ্তাহের একঘেয়েমি কাজ থেকে কিছুটা মুক্তি দেবে। হাজারও সৌদি নাগরিক সম্প্রতি ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বাহরাইন, আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ সফর করেছে। ঐ ভ্রমণের জন্য যে ব্যয় হয়েছে সেই টাকাগুলো নিজের দেশের জন্যই ধরে রাখতে চায় সৌদি সরকার। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ২০০০টি পর্দা ও ৩০০টি হল নিয়ে একটি সিনেমা শিল্প গড়ে তুলবে দেশটির সরকার। যা দেশের অর্থনীতিতে ৯০ বিলিয়ন রিয়েল ও ৩০ হাজার লোকের জন্য স্থায়ী কর্মক্ষেত্র তৈরিতে অবদান রাখবে।
×