ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ম্যাচে ফিরতে দ্রুত আউট করতে হবে ডিভিলিয়ার্সকে ॥ সম্ভরণ

প্রকাশিত: ২০:০৮, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

ম্যাচে ফিরতে দ্রুত আউট করতে হবে ডিভিলিয়ার্সকে ॥ সম্ভরণ

অনলাইন ডেস্ক ॥ টেস্ট ক্রিকেটের মজাটা হল, সুযোগ আপনার দিকে আসবে। আর তা এলে ধরতে হবে। যেটা বিরাট কোহালির এই ভারতীয় দলে ঠিকঠাক হচ্ছে না। তৃতীয় দিন বিরাট কোহালি ও রকম একটা লড়াকু শতরান করল। তার পরে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তিন রানে দুই উইকেট চলে গেল। ভারত কিন্তু সেই সুবিধা নিতে পারল না। ডিন এলগারকে নিয়ে এবি ডিভিলিয়ার্স ৮৭ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটায় ঠিক চালকের আসনে রেখে দিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এ রকম পরিস্থিতিতে দরকার ছিল ডিভিলিয়ার্সকে দ্রুত আউট করা। যদি তা না সম্ভব হয়, তা হলে উল্টো দিকের ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরানো। যে থিওরি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এ দিন বিরাটকে আউট করা কষ্টকর হচ্ছে দেখে আক্রমণ করেছিল অন্য প্রান্তের ব্যাটসম্যানদের। সেখানে ভারতের উইকেটকিপার পার্থিব পটেল এ দিন বৃষ্টির পরে খেলা শুরু হতেই যশপ্রীত বুমরার বলে ডিন এলগারের সহজ ক্যাচ ধরতে পারল না। উল্টে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো চেতেশ্বর পূজারাকে দেখিয়ে অজুহাত খাড়া করছিল। অথচ কিপারদের কাছে ওটা ‘ব্রেকফাস্ট ক্যাচ’। যা দেখে উইকেটের পিছনে ঋদ্ধিমানের অভাবটা বুঝতে পারছিলাম। ওই সময় এলগার চলে গেলে চাপে পড়ত ডিভিলিয়ার্সরা। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটসম্যান এই মুহূর্তে উইকেটে জমে গিয়েছে। এখনও ব্যাট করবে ফ্যাফ ডুপ্লেসি, কুইন্টন ডি’কক-রা। শেষের দিকে চালিয়ে খেলে স্কোরবোর্ডে অনেক সময় বড় রান যোগ করে দিয়ে যায় ভার্নান ফিল্যান্ডার, কেশব মহারাজও। ভারত এখন ১১৮ রানে পিছিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে রয়েছে আট উইকেট। এই পরিস্থিতিতে যদি ২৫০-৩০০ রান ভারতকে তাড়া করতে হয় চতুর্থ ইনিংসে, তা হলে কিন্তু এই পিচে চাপটা ভারতেরই। কারণ, রোজ রোজ বিরাট কোহালি শতরান করবে না। কাজেই চতুর্থ দিনে যত দ্রুত সম্ভব ওদের প্যাভিলিয়নে ফেরাতে হবে এ বি ডিভিলিয়ার্সকে। ও যত বেশি সময় ক্রিজে থাকবে, ততই কিন্তু দূরে সরে যাবে ভারতের এই টেস্ট জেতার সম্ভাবনা। তবে তৃতীয় দিনের সেরা আকর্ষণ কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বের দুই সেরা ব্যাটসম্যানের বিক্রম প্রদর্শন। দিনের শুরুটা যদি বিরাট কোহালির হয়, তা হলে কিন্তু শেষ দিকটা এবি ডিভিলিয়ার্স-এর। ৮৫ রানে খেলতে নেমে এ দিন বিরাট শুধু তার ২১ তম শতরানটাই করল না, একই সঙ্গে ভারত এই টেস্টে লড়ার মতো জায়গায় থাকতে পেরেছে অধিনায়কের জন্যই। ভারতের করা ৩০৭ রানের অর্ধেক রানই এল বিরাটের ব্যাট থেকে। বিদেশের মাঠে আমার মতে এটা বিরাটের অন্যতম সেরা টেস্ট ইনিংস। হার্দিক পাণ্ড্য-র সঙ্গে খেলতে নেমে পুরনো বলটা যেমন খেলল, তেমনই অশ্বিন উইকেটে আসার পরে ৭১ রানের একটা জুটি তৈরি করল। যে বল ছাড়তে হবে সেটা ছাড়ল। কিন্তু স্কোর বোর্ড সচল রেখেছে। মারার বল ঠিক মেরেছে। সব চেয়ে যেটা দেখার তা হল ওর পায়ের মুভমেন্ট। প্রতিটা বল খেলার সময় সঠিক ফুটওয়ার্ক চোখে পড়ছিল। ফ্রন্টফুটেও যেমন সাবলীল ভাবে খেলল, তেমনই ব্যাটফুটেও স্ট্রোক নিতে ওর কোনও অসুবিধা হয়নি। আর প্রতিটা শটের সময় দেখছিলাম মাথা ঠিক বলের উপরে রয়েছে। শিক্ষার্থী ক্রিকেটাররা বিরাটের এই ইনিংসটা দেখলে অনেক কিছু শিখতে পারবে। বিরাটের ১৫৩ রানের সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত ভারত ২৮ রানে পিছিয়ে থেকে প্রথম ইনিংস শেষ করেছিল। আমার মনে পড়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড এক বার মাইকেল হোল্ডিংয়ের বদলে নতুন বল তুলে দিয়েছিলেন তরুণ বোলার ম্যালকম মার্শালের হাতে। যা ইগোতে লাগে হোল্ডিং-এর। এর পরে ও বলে আগুন ঝরিয়েছিল। এ দিন তরুণ যশপ্রীত বুমরার সঙ্গে বোলিং ওপেন করল রবিচন্দ্রন অশ্বিন। মহম্মদ শামির দেখলাম তাতেও আঁতে ঘা লাগেনি। নির্বিষ বোলিং করে গেল। মঙ্গলবার ডিভিলিয়ার্সদের দুর্বলতা খুঁজে সেই জায়গায় বল করতে হবে বুমরাদের। আটকাতে হবে সিঙ্গলস। সঙ্গে হাফ চান্সকেও ক্যাচে পরিণত করতে হবে। পার্থিবের মতো সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিয়ে সতীর্থের উপর দোষ চাপাতে গেলে চলবে না। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
×