ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চম বাংলাদেশী বোলার হিসেবে ওয়ানডেতে রুবেলের ১০০ উইকেট

বাংলাদেশের বোলিং দাপট

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশের বোলিং দাপট

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ম্যাচের আগেরদিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের কথাতেই আভাস পাওয়া গিয়েছিল পেস বোলিং দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ফন্দি আঁটছেন তিনি। সোমবার জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে সেই পেসাররাই ঝলসে উঠলেন। তবে শুরুটা প্রথম ওভারেই করেছিলেন বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান। তিনি ৩ উইকেট শিকার করেন। আর শেষদিকে রুবেল হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের দাপটে দিশেহারা হয়ে যায় জিম্বাবুইয়ে। দুটি করে উইকেট নেন তারা। রুবেল ম্যাচে ২ উইকেট দখলের মাধ্যমে দেশের পঞ্চম বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন। রোদ ঝলমলে পরিবেশ সকাল থেকেই। ব্যাটিংয়ের জন্য আদর্শ হয়ে উঠেছিল উইকেট। কিন্তু ভেন্যুটা মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম, যেখানে ইতিহাস সবসময় পক্ষ নিয়েছে স্পিনারদের। এ কারণে টস জিতে ফিল্ডিং নেয়ার পর বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা উভয় প্রান্ত থেকে স্পিন আক্রমণ শুরু করেন জিম্বাবুইয়ানদের চাপে ফেলতে। সাকিব প্রথম ওভারেই জোড়া আঘাত হানেন। ইনিংসের প্রথম বলে ১ রান দিলেও পরের বলটি ওয়াইড করেন তিনি, তবে সেই বলটিকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে সলোমন মিরে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন। ইনিংসের তৃতীয় বলে আবারও সাকিবের আঘাত, এবার তুলে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানের তালুবন্দী হয়ে সাজঘরের পথ দেখেন ক্রেইগ আরভিন। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। ওয়ানডে ইতিহাসের এবার নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বার দুই প্রান্ত থেকে দুই স্পিনার বোলিং শুরু করেন। প্রথমবার ঘটেছিল নিউজিল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে, হ্যামিল্টনে। যেখানে কিউইদের হয়ে বোলিং শুরু করেছিলেন জিতান প্যাটেল ও মিচেল স্যান্টনার। প্রথম স্পেলে ৫ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেয়া সাকিবের জায়গায় বোলিংয়ে আসেন মুস্তাফিজ- জুটি বাঁধেন মাশরাফির সঙ্গে। তাদের নিখুঁত লাইন-লেন্থের বোলিংয়ে রান করতে বেশ হিমশিম খেয়েছে জিম্বাবুইয়ের ব্যাটসম্যানরা। মাশরাফি তার প্রথম স্পেলে ৬ ওভারে মাত্র ১৩ রান দেন, শিকার করেন ১ উইকেট। মুস্তাফিজ ৫ ওভারে এক মেডেনসহ ১৩ রানে ১ উইকেট। এরপর রুবেল আসেন আক্রমণে। অনুশীলনে বাঁ হাতের আঙ্গুলে আঘাত পেয়েছিলেন। তবে ডানহাতি পেসার হওয়ার কারণে বোলিংয়ে কোন সমস্যাই হয়নি তার। বিপর্যস্ত জিম্বাবুইয়ের ব্যাটিং লাইনআপের বিরুদ্ধে যেন আরও দুরন্ত হয়ে ওঠেন এ অভিজ্ঞ পেসার। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই তিনি ম্যালকম ওয়ালারের উইকেটটা নিতে পারতেন। কিন্তু প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো নাসির হোসেন তা ধরতে পারেননি বলে ৪ রানে থাকা ওয়ালার বেঁচে যান। এরপর তেমন ভাল যায়নি পুরনো বলে দেশের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এ বোলারের, প্রথম স্পেলের ৪ ওভার শেষ করেন ২২ রান দিয়ে। ইনিংসের ৪৮তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ফেরার পরই তার ক্যারিশমা দেখান রুবেল। ওই ওভারের তৃতীয় বলে পিটার মুরকে এবং চতুর্থ বলে তেন্ডাই চাতারাকে বোল্ড করে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সেই ম্যাজিকের কৃতিত্ব তার নামের সঙ্গে যোগ হয়নি। কিন্তু একটি গৌরবের মালিক ঠিকই হয়েছেন। মাশরাফির পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী পেসার হিসেবে ওয়ানডেতে ১০০ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি। এটি দেশের পক্ষে মোহাম্মদ রফিক, আব্দুর রাজ্জাক, মাশরাফি, সাকিবের পর পঞ্চম বোলার হিসেবে এক শ’ উইকেট শিকারের কৃতিত্ব। ৫ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে শেষ করেছেন রুবেল। মাশরাফি ৯ ওভারে ২৫, মুস্তাফিজ ১০ ওভারে ২৯, সানজামুল ১০ ওভারে ২৯ রান দিয়ে বাংলাদেশের বোলিং দাপটটাকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন।
×