ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকা উত্তরের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত

তাবিথই বিএনপির মেয়র প্রার্থী

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

তাবিথই বিএনপির মেয়র প্রার্থী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপ-নির্বাচনে তাবিথ আউয়ালকে মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। সোমবার রাতে দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে মনোনয়ন বোর্ডের সভা শেষে তাবিথকে বেছে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফখরুল বলেন, যে পাঁচজন ‘ধানের শীষের’ প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন, তাদের সবাই যোগ্য। তবে আমরা মনে করি, এই নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য তাবিথ সবচেয়ে যোগ্য ক্যান্ডিডেট। বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মনোনয়ন বোর্ডের সাক্ষাতকারে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে তাবিথও হাজির ছিলেন। দলের সিদ্ধান্ত জানার পর তাবিথ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনী আইন মেনে তিনি এখনও কোন ধরনের প্রচার চালাননি। শীঘ্রই মেনিফেস্টো ঠিক করে গণমাধ্যমের সামনে আসবেন। দলের প্রার্থী হতে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসা অন্য চারজনকে ধন্যবাদও জানান বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ। উল্লেখ্য, দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালকে ডিএনসিসির প্রথম মেয়র নির্বাচনেও মনোয়ন দিয়েছিল বিএনপি। এদিকে নির্বাচনী তৎপরতা থাকলেও ডিএনসিসি উপ-নির্বাচন আদৌ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলেন রিজভী বলেন, উপ-নির্বাচন নিয়ে জনমনে শঙ্কা আছে। শঙ্কার বিষয়টি জেনেও বিএনপি ওই নির্বাচনে অংশ নেবে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন মানে ভোটারদের অধিকার হরণ করা। তারপরও বিএনপি স্থানীয় পর্যায়ের সব নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ সময় তিনি নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনেরও দাবি জানান। আগমী ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদের উপ-নির্বাচন। একই সঙ্গে দুই সিটির ৩৬ ওয়ার্ডে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছে ইসি। দুটি নির্বাচনই একদিনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলে সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় আইনগত জটিলতা দেখা দিয়েছে। মেয়র পদে বাকি মেয়াদের জন্য নির্বাচন হলেও সাধারণ নির্বাচনে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদের মেয়াদ কতদিনের হবে তা নিয়ে আইনে স্পষ্ট নেই। আইনগত এই জটিলতা নিরসন না করেই তফসিল দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। তবে তফসিল ঘোষণা করায় আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতে তৎপরতা বেড়ে গেছে। বড় দুটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগের মতো বিএনপিতেও আগ্রহী প্রার্থীদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করা হয়। দলের ৫ জন প্রার্থী ইতোমধ্যে মেয়র প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে আগহী প্রার্থীদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়। সাক্ষাতকারের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের অধীনে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনসহ কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। কারণ বর্তমান নির্বাচন কমিশন তাদের নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি। তারা সরকারের কর্মচারী হিসেবে হুকুমের দায়িত্ব পালন করেছে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না জেনেও বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে নির্বাচন মানে ভোটারদের ভোটের অধিকার হরণ করা। এই সরকারের অধীনে বিগত স্থানীয় সরকারের নির্বাচনসহ কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তা সত্ত্বেও বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে কারণ, এটা আমাদের আন্দোলন-সংগ্রামের অংশ। ডিএনসিসি উপ-নির্বাচনে ভোটাধিকার নিশ্চিতে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে বলেন, ২০১৫ সালের ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন দেখেছি। সেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এছাড়া ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দানবীয় কায়দায় ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছিল। যা এখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে আছে। শেখ হাসিনার আমলে গণতন্ত্রের কোন স্থান নেই। এই স্বৈরাচারী সরকার লোক দেখানোর জন্য নির্বাচনের আয়োজন করছে। তারপরও আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। এ সময় তিনি বিএনপি মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণকে কাজ করার আহ্বান জানান। এর আগে সকালে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের উপ-নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দেন দলের নির্বাহী পরিষদের সদস্য তাবিথ আউয়াল। তাবিথ আউয়াল ছাড়াও সাবেক এমপি মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, বিএনপি সহ-প্রকাশনা সম্পাদক শাকিল ওয়াহেদ, বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এমএ কাইয়ুম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। সোমবার বিকেল চারটার মধ্যে তারা মনোনয়নপত্র জমা দেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, মনির হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
×