ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিএনসিসি নির্বাচনে পদে একক প্রার্থী ১৪ দল ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০১:১৪, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

ডিএনসিসি নির্বাচনে পদে একক প্রার্থী ১৪ দল ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র পদের উপ-নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট একক প্রার্থী দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থী ঘোষণা করবেন, ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁকে সমর্থন জানাবে এবং বিজয়ী নিশ্চিত করতে ব্যাপক গণসংযোগ করবে। এছাড়া আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শীঘ্রই সারাদেশেই জোটগতভাবে নির্বাচনী প্রচার ও গণসংযোগ চালাবেন ১৪ দলের নেতারা। সোমবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় ১৪ দলের বৈঠক শেষে গৃহীত এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান জোটের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। আগামী নির্বাচনকে ১৪ দল ’গণভোট’ মনে করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের শক্তির চূড়ান্ত বিজয়ের জন্য এ নির্বাচন হবে। বারবার এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে পরাভূত করার জন্য সামরিক আইন জারি করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে রক্তাক্ত করেছে। তাই আগামী নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে ১৪ দল মাঠে নামবে, মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আগামী নির্বাচনে পুনরায় বিজয় নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালাবে। মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ১৪ দলের বৈঠকে দেশে বর্তমান চলমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে উস্মা প্রকাশ করেন জোটের শরিক দলের নেতারা। একইসঙ্গে একলা চলো নীতি পরিহার করে আগামী নির্বাচনসহ সবকিছুতে জোটগতভাবে পদক্ষেপ গ্রহণেরও তাগিদ দেন তাঁরা। বৈঠক সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহীদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ নিদারুন কষ্টে আছে। বিশেষ করে চাল ও পিঁয়াজের দাম ক্রমশঃ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তিকে বিজয়ী করতে যেকোনে মূল্যে দ্রব্যমূল্যে স্বাভাবিক করতে হবে। বৈঠকে জোটের অনেক নেতাই তাঁর বক্তব্যেকে সমর্থন করেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন নির্বাচনসহ সবকিছুতে আওয়ামী লীগের ’একলা চলো’ নীতির সমালোচনা করে বলেন, আমরা ১৪ দল যে একসঙ্গে আছি তা জনগণের সামনে দৃশ্যমান হওয়া প্রয়োজন। সামনে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদের নির্বাচন। সামনে চলে এসেছে জাতীয় নির্বাচন। আর বসে থাকার সময় নেই, ১৪ দলগতভাবে সবকিছু ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী মাঠে নামতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগ কেন, ১৪ দলগতভাবে আমরাও তো বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে নির্বাচনী প্রচারে নামতে পারি। এছাড়া তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের বৈঠকের দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিমকে অনুরোধ জানান। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ডিএনসিসি নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রার্থী ঘোষণা করবে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাঁকে সমর্থন করবে এবং বিজয়কে নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অর্জন আকাশচুম্বী। সরকারের কিছু ভুল থাকতে পারে কিন্তু শেখ হাসিনার সরকারের সফলতা হলো হিমালয় তুল্য। সরকার অর্থনৈতিক, সামাজিক, জঙ্গীদমনসহ সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন করেছি। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি দেশের উন্নয়ন মেনে নিতে পারেনি। তাঁরা বারবার চক্রান্ত করেছে, এখনও করছে। তাদের নেত্রী হলো খালেদা জিয়া। তিনি ও তাঁর দলের নেতারা প্রকাশ্য বলছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচন তারা প্রতিহত করবেন। আমরা ২০১৪ সালের নির্বাচনেও সফল হয়েছি। ২০১৪ সালে আমরা ব্যর্থ হলে দেশে অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় আসতো, দেশের উন্নয়ন হতো না। আমরা তাদের (খালেদা জিয়া) আগামীতেও পরাজিত করবো। জোটের মুখপাত্র বলেন, সরকারের চার বছর পূর্তিতে দেয়া ভাষণের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। তিনি এ ভাষণের মাধ্যমে বিগত চার বছরের সাফল্য, উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড দেশবাসীর সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় আসার জন্য একটি মহল অনেক আগ থেকেই চক্রান্ত করছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে সুষ্পষ্ট ভাষায় বলেছেন সাংবিধানিকভাবেই এ নির্বাচন হবে। বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ শক্তির পক্ষে জনমত তৈরি করতে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে দেশব্যাপী সফর করবে। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি কর্মীসভা ও প্রয়োজনে জনসভাও করার কথা জানান তিনি। বৈঠকে সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়–য়া, জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাৎ হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, ডা. অসীত বরণ রায়, ওয়ার্কার্স পার্টির আনিসুল ইসলাম মল্লিক, কামরুল আহসান, আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ডা. দীপু মণি, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, অসীম কুমার উকিল, এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, এ্যাডভোকেট রিয়াজুল কবীর কাওছার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
×