ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ শুরু সোমবার

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকায় ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ শুরু সোমবার

মিথুন আশরাফ ॥ হাতে আছে আর একদিন। এরপরই আট বছর পর আবার দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশসহ শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেট দল এবার ত্রিদেশীয় সিরিজে আছে। এই ত্রিদেশীয় সিরিজ সোমবার শুরু হবে। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের বল মাঠে গড়াবে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ত্রিদেশীয় সিরিজের সবকটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ম্যাচ দুপুর ১২টায় শুরু হবে। এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারিতে সর্বশেষ দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই সিরিজে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিপক্ষ দুই দল ছিল ভারত ও শ্রীলঙ্কা। চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এর আগে অবশ্য ২০০৯ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়েকে নিয়ে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ হয়েছিল। সেই সিরিজেও শিরোপা জিতে শ্রীলঙ্কা। তবে বাংলাদেশ ফাইনালে খেলেছিল। এবার যে অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল, তাতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশাই করা হচ্ছে। গত বছর দেশের মাটিতে বাংলাদেশ কোন ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ১৫ মাস পর দেশের মাটিতে ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। এ বছরটি শুরুই হচ্ছে দেশের মাটিতে খেলা দিয়ে। দেশের মাটিতেই বছরের শুরুতে ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের অক্টোবরের পর আবার দেশের মাটিতে ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। অবশ্য সিরিজটি হচ্ছে ত্রিদেশীয়। বাংলাদেশ ত্রিদেশীয় সিরিজই খেলেছে কম। ১১টি তিনজাতি সিরিজ খেলে। সর্বশেষ ২০১০ সালে দেশের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছে। কোন কোন টুর্নামেন্টেও তিন দেশকে নিয়ে খেলা হয়। ১৯৯০ সালে ভারতে যেমন ভারত, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এশিয়া কাপে বাংলাদেশও ছিল। সেটিই বাংলাদেশের প্রথম ত্রিদেশীয় সিরিজ। পাকিস্তান না খেলাতেই চার দেশের এশিয়া কাপ হয়নি। তিনজাতির এশিয়া কাপ হয়ে গেছে। এরপর ১৯৯৭ সালে কেনিয়ায় জিম্বাবুইয়ে ও কেনিয়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্টস কাপ, ১৯৯৮ সালে দেশের মাটিতে ভারত, পাকিস্তানের সঙ্গে সিলভার জুবিলি ইন্ডিপেন্ডেন্স কাপ, একই বছর ভারতে ভারত ও কেনিয়ার সঙ্গে কোকাকোলা ট্রায়াঙ্গুলার সিরিজ, ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশে কেনিয়া, জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে মেরিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট, ২০০৩ সালে বাংলাদেশে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টিভিএস কাপ, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সঙ্গে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজ, ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বারমুডা ও কানাডার সঙ্গে এ্যাসোসিয়েটস ট্রাই-সিরিজ, ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে কিটপ্লাই কাপ, ২০০৯ সালে বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে ট্রাই-নেশন টুর্নামেন্ট, গত বছর আয়ারল্যান্ডে নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ট্রাই-নেশন সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। ২০০৭ সালে বারমুডা ও কানাডার সঙ্গে খেলা তিনজাতি সিরিজটি ছাড়া আর কোন সিরিজেই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। তবে ২০০৯ সালে যে দেশের মাটিতে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ের সঙ্গে তিনজাতি সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ, সেটিতে লঙ্কানদের বিপক্ষে ফাইনাল খেলেছিল। ২০১০ সালে আবারও ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলে। এবার আর ফাইনালে খেলতে পারেনি। এবার জেতার আশা করছে বাংলাদেশ। এবার যে বাংলাদেশ দলটি অনেক শক্তিশালী। দেশের মাটিতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী দলেও পরিণত হয়ে উঠেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে এবার অবশ্য বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। প্রতিপক্ষ দুইদলই শক্তিশালী। আবার দেশের মাটিতে বহুদিন পর ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ। যে দলটি দেশের মাটিতে ২০১৫ সালে পাকিস্তান, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজে হারিয়ে নিজেদের অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠা করার দিকে এগিয়ে গেছে। এরপর যে দলই বাংলাদেশে খেলতে এসেছে, ম্যাচ জিতেছে। সেই বাংলাদেশ দলটি এবার শুধু শিরোপা জেতার লক্ষ্যেই নামবে না, প্রতিপক্ষ কোচদের একটা জবাবও দিতে হবে। বাংলাদেশের সাবেক কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহে এখন শ্রীলঙ্কার কোচ। এই সিরিজের আগেই বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব ছেড়ে শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিয়েছেন হাতুরাসিংহে। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর সঙ্গে শিরোপা জিতে হাতুরাসিংহেকে ভালভাবেই জবাব দিতে হবে। জিম্বাবুইয়ের কোচ এখন হিথ স্ট্রিক। তিনিও বাংলাদেশের সাবেক বোলিং কোচ ছিলেন। জিম্বাবুইয়েকে হারিয়ে স্ট্রিককেও জবাব দেয়ার আছে। এ দুই কোচকে এ জন্যই জবাব দিতে হবে, তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালভাবেই জানেন। বাংলাদেশ দলের সবলতা-দুর্বলতা সম্পর্কে ভালই জানা আছে। বাংলাদেশকে বিপদেও ফেলতে চাইবে এ দুই দল। দুই দলকেই হারিয়ে কোচদের বুঝিয়ে দিতে হবে তারা না থাকলেও বাংলাদেশ এখনও দেশের মাটিতে সেরা দলই আছে। বাংলাদেশের এই চ্যালেঞ্জই সোমবার শুরু হয়ে যাবে। এদিন বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ে মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজও শুরু হবে, দুই দলের মিশনও শুরু হবে। এরপর ১৭ জানুয়ারি লঙ্কানদের ত্রিদেশীয় সিরিজের মিশন শুরু হবে। ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে সিরিজ। প্রতিটি দল সিরিজে পরস্পরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। পয়েন্ট তালিকায় যে দুটি দল সবার ওপরে থাকবে তারাই ২৭ জানুয়ারি ফাইনালে খেলবে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে প্রথম ম্যাচের পর ১৭ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ে, ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা, ২১ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ে, ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে ও ২৫ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ের মধ্যকার সিরিজের শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২৭ জানুয়ারি ফাইনাল হবে। সেই ফাইনালেই চোখ রয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের। সোমবার ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু হওয়া দিয়ে বাংলাদেশের সেই মিশনই শুরু হবে।
×