ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশী হেফাজতে টাঙ্গাইল ডিসি অফিসের কর্মচারীর মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ১৪ জানুয়ারি ২০১৮

পুলিশী হেফাজতে টাঙ্গাইল ডিসি অফিসের কর্মচারীর মৃত্যুর অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ১৩ জানুয়ারি ॥ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নাজিম উদ্দিন শিকদার নামে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন কর্মচারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ দাবি করছে নির্যাতন নয়, আটক করে আনার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তি মারা গেছে। তবে নিহতের ছোট ভাই আব্দুল কাদের শিকদার দাবি করেছেন, পুলিশী নির্যাতনে নাজিম উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ শুক্রবার গভীর রাতে সরিষাবাড়ী উপজেলার বয়ড়া বাজার এলাকায় জুয়ার আসর থেকে নাজিম উদ্দিন শিকদারসহ ১২ জন জুয়াড়িকে আটক করে। জানা গেছে, মৃত নাজিম উদ্দিন শিকাদার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার শালিনা গ্রামের মৃত আজিমউদ্দিন শিকদারের ছেলে। তিনি টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রসেস সার্ভার হিসেবে চাকরি করতেন। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার বয়ড়া বাজার এলাকায় জুয়া খেলা চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে জামালপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়। গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে জুয়াড়িরা দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ১২ জনকে আটক করা হয়। এ সময় নাজিম উদ্দিন শিকদার দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে আহত হন। স্থানীয়দের সহায়তায় গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে শনিবার ভোর চারটা ৪৫ মিনিটে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানুল বারী শিশির তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ তার লাশের ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মৃত নাজিমউদ্দিন শিকদারের সহোদর ছোট ভাই আব্দুল কাদের জানান, তার বড় ভাই নাজিমউদ্দিন শিকদার শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে টাঙ্গাইলের বাসা থেকে জামালপুরে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। শনিবার সকালে তাদের এক চাচাতো ভাই সায়েমের কাছ থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে জামালপুরে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে বড় ভাই নাজিম উদ্দিন শিকদারের আটক হওয়ার খবর পেয়ে জামালপুরে যান তিনি। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তার ভাইয়ের সন্ধান চাইলে আটকের কথা অস্বীকার করেন কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে সন্দেহবশতঃ জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে ভাইকে শনাক্ত করেন। আব্দুল কাদের শিকদার তার মৃত ভাইয়ের গালে আঘাতের চিহ্ন দেখে গোয়েন্দা পুলিশের নির্যাতনে নাজিমউদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে বলেন, তার ভাই আগে কোনদিন জুয়া খেলে নাই। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ সালেমুজ্জামান বলেন, আমাদের অভিযানের সময় অন্যদের সঙ্গে নাজিম উদ্দিন শিকদার দৌড়ে পালানোর সময় পড়ে গিয়ে শরীরে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আটক করার পর শুধু তাকেই নয়, তাকেসহ আটক ১২ জনের কাউকেই কোনরূপ নির্যাতন করা হয়নি। নিহতের পরিবারের অভিযোগ সঠিক নয়। তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
×