ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রামসাগর চিড়িয়াখানার ৪৭টি চিত্রা হরিণের জীবন ঠান্ডা ও খাদ্যাভাবে চরম দুর্ভোগে

প্রকাশিত: ০১:১৩, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

রামসাগর চিড়িয়াখানার ৪৭টি চিত্রা হরিণের জীবন ঠান্ডা ও খাদ্যাভাবে চরম দুর্ভোগে

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় শীতের কারণে ৪৭টি চিত্রা হরিণের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া না হলে হরিণগুলোর মৃত্যুও হতে পারে। এছাড়া ১২টি মা হরিণ যেকোনো সময় নতুন শাবকের জন্ম দিতে পারে। জানা যায়, প্রায় এক বছর থেকে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ না আসায় হরিণগুলো খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছে। খাদ্য ও পুষ্টির অভাবে রোগাক্রান্ত ও দুর্বল হরিণগুলোর পাঁজরের হাড় ভেসে উঠেছে। অপরদিকে প্রচন্ড শীতে থাকার সেট না থাকায় হরিণগুলো খুবই কষ্ট পাচ্ছে। রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, খাবারের অভাবে এক সময়ের চঞ্চল ও দূরন্ত হরিণগুলো এখন অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। দর্শনার্থীরা এলেই খাঁচার সামনে এসে অসহায়ের মতো বাড়িয়ে দেয় মুখ। দর্শনার্থীরা বাদাম-কলাসহ সামান্য যা দেয় তাতে ওদের পেট ভরে না। বর্তমানে পুরাতন আলুর দাম কম হওয়ায় হরিণগুলোকে আলু খাওয়ানো হচ্ছে। চিড়িয়াখানার পরিচর্যাকারী বাবুল রায় জানান, চিত্রা হরিণগুলোর জন্য খাদ্যের সর্বশেষ বরাদ্দটি এসেছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। এরপর আর কোনো বরাদ্দ আসেনি। তখন থেকেই পাতা-লতা আর দর্শনার্থীদের দেয়া খাবার খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছে ওরা। ৪৭টি হরিণের মধ্যে ১২টি হরিণ গর্ভবতী। গর্ভবতী হরিণগুলোও ঠিকমতো খাবার পাচ্ছে না। এছাড়া তীব্র শীতে হরিণগুলো কাহিল হয়ে পড়েছে। দিনাজপুর বন বিভাগের কর্মকর্তা ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুস সালাম তুহিন জানান, রোদ-বৃষ্টিতে হরিণের কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু হরিণ শীত সহ্য করতে পারে না। শীতে তারা কাহিল হয়ে যায়। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রামসাগর জাতীয় উদ্যানের চিড়িয়াখানায় এই শীতে হরিণগুলোর থাকার জন্য স্থায়ী সেট নির্মাণ করা জরুরি। তুহিন বলেন, চিড়িয়াখানায় সরকারিভাবে ৬টি চিত্রা হরিণ আনা হয়। সঠিক পর্যবেক্ষণের ফলে হরিণগুলো দ্রুত বংশবিস্তার করতে থাকে। বাড়তে বাড়তে এদের সংখ্যা এখন ৪৭। এই ৪৭টি চিত্রা হরিণের জন্য সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে খাদ্যের বাজেট এসেছিল। যা দিয়ে এক মাসও খাবার সরবরাহ করা যায়নি।
×