ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাল্টা ও বরই চাষে সফল সখীপুরের মোসলেম

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

মাল্টা ও বরই চাষে সফল সখীপুরের মোসলেম

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কীর্র্তনখোলা গ্রামের জয়েন উদ্দিনের ছেলে মোসলেম উদ্দিন চার বছর ধরে ৯ একর জমিতে বিচিবিহীন লেবু চাষ করে পুরো টাঙ্গাইল জেলায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। বিগত ২০১৬ সালে জেলার সেরা লেবুচাষী হিসেবে তিনি স্বীকৃতি পান। এরপর থেকে তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি সাড়ে ৪ একর উঁচু জমিতে বছর দুয়েক আগে ৮৫০টি টক বরই এবং ৮৫০টি মাল্টার কলমের চারা লাগিয়েছেন। প্রতি সারিতে একটি করে টক বরই আর একটি করে মাল্টা গাছ লাগানো হয়েছে। মাল্টার ফলনের সময় ফুরিয়েছে মাস তিনেক আগেই। এবার ওই বাগানের ৩০টি মাল্টা গাছে প্রথম ফল ধরেছিল। এখন ওই বাগানের ৮৫০টি গাছে টক বরই ধরেছে। তাও আবার আগাম। চাষী মোসলেম দুই সপ্তাহ ধরে টক বরই বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন। তাঁর বাগানের ৮০% টক বরই বিক্রি হয়ে গেছে। আগাম হওয়ায় এখন বাজারে এক কেজি টক বরই বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। এক মাস পরই এক কেজির দাম হবে ১০ থেকে ১৫ টাকা। সফল চাষী মোসলেম এবার আগাম টক বরই বিক্রি করবেন প্রায় দুই টন। এবার বরই বিক্রি করে প্রায় দুই লাখ টাকা পাবেন তিনি। একসঙ্গে দুটি ফলের বাগান করে উপজেলার অন্যান্য চাষিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মোসলেম। সফল চাষি মোসলেম বললেন, মাল্টাই হবে এ বাগানের প্রধান ফলের গাছ। আগাম টক বরই থাকবে মাত্র পাঁচ বছর। পাঁচ বছর পর মাল্টাগাছ প্রসারিত হবে। তখন বরই গাছ সমূলে কেটে ফেলা হবে। মোসলেমের বিশ্বাস আগামী পাঁচ বছরে শুধু আগাম টক বরই বিক্রি করে ৫০ লাখ টাকা আয় করবেন। আমি প্রথমে বিগত ২০১৬ সালে লেবু চাষ করে সফলতা পাই তাঁর পরে মাল্টা এবার টক বরই করে সফলতার মুখ দেখছি। এই বাগানের ৮০% টক বরই বিক্রি করেছি। এই টক বরই বাগানের এর জন্য আমি ৯ একর জমি ১২ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আমি পহেলা বৈশাখ থেকে টক বরই কলমের চারা লাগানো শুরু করব। প্রতিটি কলমের চারা লাগানো ৬ মাসের মধ্যে পর প্রতিটি গাছে ফুল আসবে এবং প্রতিটি গাছ থেকে ৭ থেকে ৮ কেজি করে টক বরই পাওয়া যাবে। মোসলেমের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাল্টাগাছের ফাঁকে ফাঁকে লাগানো টক বরই গাছে প্রচুর বরই ধরেছে। চার কর্মচারী বাগানের পরিচর্যা করছেন। বাগানে বসে আগাম টক বরই চাষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই টক বরই দিন যাচ্ছে আর হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু টক বরই আমাদের সবার প্রিয়। আমার এক আত্মীয়ের একটি টক বরইগাছ আছে। অন্যান্য বরইয়ের আগে এই বরই গাছে ধরে। ভাবলাম ওই গাছ থেকে কলম করে বড় একটা বাগান করব। এভাবে দুই বছর চেষ্টা করে ৮৫০টি কলমের চারা তৈরি করেছি। এ বছরই আমার কলম করা বরই গাছে প্রথম ফলন এলো। এ বরই আমারই সৃষ্টি। এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফায়জুল ইসলাম ভুঁইয়া জানান, কৃষি বিভাগের বড় কর্মকর্তারা সখীপুরে এলেই আমরা মোসলেমের লেবু বাগানে নিয়ে যাই। এবার মোসলেম বাণিজ্যিক ভিত্তিতে আগাম টক বরই চাষ করেছেন। ওই বাগানে আবার বারি-১ জাতের মাল্টার চাষও করেছেন। প্রকৃত অর্থেই মোসলেম একজন সফল চাষী। -ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল থেকে
×