ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দিনাজপুরে ঋণ ও অনুদান নিয়ে এনজিও কর্মহীন

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

দিনাজপুরে ঋণ ও অনুদান নিয়ে এনজিও কর্মহীন

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নের প্রকল্প দেখিয়ে এক এনজিও অর্ধ কোটি টাকার ঋণ ও অনুদান নিলেও তাদের নেই কোন কার্যক্রম। অস্তিত্বহীন হতে বসেছে হায় হায় এনজিওটি। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় বহুমুখী পল্লী উন্নয়ন সংস্থা নামক এক বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্প দেখিয়ে অর্ধ কোটি টাকার ঋণ ও অনুদান নিলেও তাদের নেই কোন কার্যক্রম। উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বলেন, বহুমুখী পল্লী উন্নয়ন সংস্থার ফুলবাড়ী রাজারামপুর অফিসের বাড়ীটিতে এখন বসবাস করছেন নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম। ২০০৬ সালে ৩ বছরের জন্য সংস্থার নির্বাহী কমিটি অনুমোদন হলেও ২০০৯ সালের ২৫ জুলাই মাসে মেয়াদ শেষ হলেও এখন পর্যন্ত কোন কমিটি গঠন করা হয় নি। সংস্থার ঋণ বিতরনের কাগজপত্র দেখতে চাইলে তা দেখাতে ব্যর্থ হন। খোজ নিয়ে জানা যায়, সংস্থার নামে ফুলবাড়ী পৌর এলাকার গৌরীপাড়া মৌজার ১২০/৪৫৭ নং দাগের লিজ নেয়া ৪ শতক জমির উপর নির্মিত দ্বিতল বাড়ীটি ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর জয় চৌধুরী নামে এক জনের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। উপজেলা ভুমি অফিস সুত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালে রফিকুল ইসলাম নিজেকে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিয়ে ৪ শতক জমি লিজ নেন। অথচ রফিকুল ইসলাম একজন সাবেক বিডিআর সদস্য। পরিচয় গোপন করে লিজ গ্রহন করায় ২০১০ সালের ২৭ আগষ্ট লিজটি বাতিল করে উপজেলা ভুমি অফিস। অথচ নিজের জমির উপর নির্মিত দ্বিতল বাড়ীটি বন্ধক রেখে সংস্থার নামে অর্ধকোটি টাকা ঋণ গ্রহন করেন রফিকুল ইসলাম। লিজ বাতিল হওয়ার পরেও বাড়ীটি ১৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এলাকাবাসী জানায়, রফিকুল ইসলাম এনজিও’র নামে ফুলবাড়ী হেলথ কেয়ার নামে একটি ক্লিনিক খোলেন। ক্লিনিকটি স্বাস্থ্য সেবা মুলক প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা গ্রহন করেন। অপরদিকে ব্যাংকে বন্ধক রাখা জমি প্রতারনার মাধ্যমে বিক্রি করায় বিপাকে পড়েছে জমির ক্রেতা। ১৪ লাখ টাকা দিয়ে জমি কিনে ৫০ লাখ টাকার দেনা এখন জমির গ্রাহকের মাথায়। জমির ক্রেতা জয় চৌধুরী বলেন, বর্তমানে রাজারামপুর বিজিবি ক্যাম্প পাড়ায় বসবাসরত মোঃ রফিকুল ইসলাম ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর তার নিকট ১৪ লাখ টাকায় পশ্চিম গৌরীপাড়া মৌজার বাড়ীসহ ৪ শতক জমি বিক্রি করেন। ওই বাড়ীতে ডক্টরস পয়েন্ট নামে একটি ডায়গনষ্টিক সেন্টার চালু করেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ও সমাজ কল্যান অধিদপ্তর থেকে চিঠি আসছে। ওই বাড়ীটি বন্ধক রেখে বাড়ীর পুর্বের মালিক রফিকুল ইসলাম প্রায় ৫০ লাখ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক ও সমাজ কল্যান থেকে গ্রহন করেছে। ওই টাকা পরিশোধ না করা হলে তাকে ব্যাংকের নিকট বাড়ীর দখল ছাড়তে হবে। এই কারনে বাড়ীটির পুর্বের মালিক রফিকুল ইসলামকে ব্যাংক ও সমাজ কল্যানের ঋণ পরিশোধ করার কথা বললে, রফিকুল ইসলাম তাকে হুমকি দিচ্ছে। রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাড়ী বিক্রি ও বন্ধক রাখার কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা না হলে সরকার কি দেখে জায়গা দিলো।
×