ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মাওলানা সাদ ছাড়াই তুরাগ তীরে বিশ্ব এজতেমা শুরু আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১২ জানুয়ারি ২০১৮

মাওলানা সাদ ছাড়াই তুরাগ তীরে বিশ্ব এজতেমা শুরু আজ

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু/নুরুল ইসলাম, টঙ্গী থেকে ॥ বিশ্ব এজতেমার ময়দানে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুপস্থিতিতেই শুক্রবার বাদ ফজর টঙ্গীতে শুরু হচ্ছে এবারের বিশ্ব এজতেমা। বিশ্ব এজতেমায় মাওলানা সাদ’র যোগ দেয়া না দেয়া নিয়ে যে অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল তার অবসান ঘটিয়েছেন মাওলানা সাদ নিজেই। এবারের বিশ্ব এজতেমায় মাওলানা সাদসহ দু’পক্ষের প্রধান দুই মুরব্বি যোগ দিচ্ছেন না। তবে তাদের প্রতিনিধিগণ এজতেমায় অংশ নিচ্ছেন। টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে মাওলানা সাদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে কাকরাইল মসজিদ ও ঢাকার ডিএমপি কমিশনার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তবে মাওলানা সাদকে নিয়ে এজতেমা ময়দানের বাইরে বিতর্ক থাকলেও এজতেমা ময়দানে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এর কোন প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। এদিকে কনকনে শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে বাস-ট্রাক, কার-পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে দলে দলে মুসল্লিরা ইতোমধ্যে টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমা স্থলে আসছেন। তারা কাঁধে-পিঠে প্রয়োজনীয় মালামাল নিয়ে এজতেমা স্থলে এসে নিজ জেলার খিত্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। অবশ্য গত কয়েকদিন থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জামাতবদ্ধ মুসল্লিরা এসে ময়দানের খিত্তায় খিত্তায় অবস্থান নিয়েছেন। টঙ্গীর এজতেমা স্থল এখন মুসল্লিদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠছে। হজের পর মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হলো বিশ্ব এজতেমা। আগত মুসল্লিদের জন্য বৃহস্পতিবার বাদ ফজর প্রস্তুতিমূলক বয়ান শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের মাওলানা মোশারফ হোসেন ওই বয়ান করেন। মাগরিবের পর মূল বয়ান শুরু হবে। টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমা ময়দানের সরকারী বেসরকারী সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব নিয়োজিত স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল জানান, সম্প্রতি মাওলানা সাদ’র দেয়া বয়ানকে ঘিরে তাবলিগ জামাতের সৃষ্ট দু’পক্ষের অভ্যন্তরীণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা সাদ এবারের বিশ্ব এজতেমায় যোগ দিচ্ছেন না। মাওলানা সাদ চান বিশ্ব এজতেমা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হউক। তাই এবারের বিশ্ব এজতেমায় মাওলানা সাদসহ উভয় পক্ষের প্রধান দু’মুরব্বি যোগ দিচ্ছেন না। তবে তাদের প্রতিনিধিগণ এজতেমায় অংশ নিবেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাবলিগ অনুসারী শীর্ষ পর্যায়ের মুরব্বিদের দু’পক্ষের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে তাবলিগ জামাতের আমির এবং আখেরি মোনাজাত কে পরিচালনা করবেন। এদিকে এবারও দুই দফায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা। প্রথম দফা ১২ জানুয়ারি থেকে ১৪ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় দফা ১৯ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি এজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। দুই দফারই শেষ দিন অনুষ্ঠিত হবে তাবলিগ জামাতের প্রধান আকর্ষণ আখেরি মোনাজাত। তবে এবার আখেরি মোনাজাত কে পরিচালনা করবেন তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। গত কয়েক বছর ধরে ভারতের মাওলানা সাদ বিশ্ব এজতেমায় বয়ান ছাড়াও আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করে আসছেন। কিন্তু এবার তাকে নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় বিশ্ব এজতেমায় বয়ান ও মোনাজাত পরিচালনা নিয়ে অনেকটা অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। তাবলিগ জামাতের মুরব্বি ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, বুধবার দুপুরে মাওলানা সাদ বিশ্ব এজতেমায় যোগ দেয়ার উদ্দেশে বিমানযোগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। কিন্তু হেফাজতপন্থী তাবলিগ জামাতের অপর একটি অংশ তাকে বিশ্ব এজতেমায় যোগদানে বাধা দিতে বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেয় এবং সাদ বিরোধী স্লোগান দেয়। পরে পুলিশ সাদের নিরাত্তাহীনতার জন্য তাকে বিমানবন্দর থেকে স্কট দিয়ে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে নিয়ে যায়। এ সময় সাদ বিরোধীদের একাংশ কাকরাইলের উদ্দেশে এবং অপর অংশ বিশ্ব এজতেমার ময়দানের দিকে রওনা হন। কাকরাইল মসজিদে যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সেজন্য পুলিশ ওই মসজিদের প্রধান ফটকসহ আশপাশের এলাকায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। বিমানবন্দর থেকে মাওলানা সাদের টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমায় যাওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে তিনি খুব শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সাদ বিতর্ক নিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে তেমন কোন প্রভাব নেই ॥ বিশ্ব এজতেমার বাইরে সাদ বিতর্ক থাকলেও এজতেমা ময়দানে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এর কোন প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। দেশী-বিদেশী মুসল্লিরা ইতোমধ্যে বুধবার ভোর থেকেই কনকনে শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে এজতেমা ময়দানে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। মাওলানা সাদকে কেন্দ্র করে বাইরের সৃষ্ট বিতর্ক ও উত্তেজনা এজতেমা ময়দানের ভেতরে মুসল্লিদের মধ্যে কোন প্রভাব ফেলেনি। আগত মুসল্লিদের যার যার মত নামাজ আদায় বয়ান শোনা ও ধর্মীয় ধ্যানে মগ্ন থাকতে দেখা গেছে। আখেরি মোনাজাতের আগ পর্যন্ত মুসল্লিদের ওই আগমন অব্যাহত থাকবে। ভোলা থেকে আগত নজির উদ্দিন জানান, আমরা মাঠে আমরা ধর্মের কাজে এসেছি। মুরব্বিদের ধর্মীয় বয়ান শুনছি। আল্লাহকে রাজি-খুশি করে চলব। কোন নেতার উদ্দেশ্য হাসিল করতে এজতেমায় আসিনি। প্রথম দফায় ১৪ জেলার মুসল্লিরা ২৮ খিত্তায় ॥ বিশ্ব এজতেমার মাঠে প্রতিজেলার মুসল্লিদের অবস্থানের জন্য আলাদা স্থান নির্ধারিত থাকে। এ স্থানকে খিত্তা বলে। প্রথম দফায় অংশগ্রহণকারী জেলাগুলোর মধ্যে হল- ঢাকা (১-৮নং, ১৬নং, ১৮নং, ২০নং ও ২১নং খিত্তা), নারায়ণগঞ্জ (১২নং ও ১৯নং খিত্তা), মাদারীপুর (১৫নং খিত্তা), গাইবান্ধা (১৩নং খিত্তা), শেরপুর (১১নং খিত্তা), লক্ষ্মীপুর (২২-২৩নং খিত্তা), ভোলা (২৫-২৬নং খিত্তা), ঝালকাঠি (২৪নং খিত্তা), পটুয়াখালী (২৮নং খিত্তা), নড়াইল (১৭নং খিত্তা), মাগুরা (২৭নং খিত্তা), পঞ্চগড় (৯নং খিত্তা), নীলফামারী (১০নং খিত্তা) ও নাটোর (১৪নং খিত্তা)। গাজীপুরে মুসল্লিদের গাড়ি পার্কিং ॥ গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর-রশিদ এবং ট্রাফিক বিভাগের এএসপি মোঃ সালেহ উদ্দিন আহমদ জানান, এজতেমা চলাকালীন সময় জয়দেবপুর চান্দনা-চৌরাস্তা হয়ে আগত মুসল্লিদের বহনকারী যানবাহনের জন্য টঙ্গীস্থ কাদেরিয়া টেক্সটাইল মিলস কম্পাউন্ড, মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনের রাস্তার উভয় পাশে, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি মাঠ প্রাঙ্গণ, সফিউদ্দিন সরকার একাডেমির মাঠের উত্তরে টিআইসি মাঠ, জয়দেবপুর থানাধীন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ মাঠ, চান্দনা-চৌরাস্তা হাইস্কুল মাঠ, জয়দেবপুর চান্দনা-চৌরাস্তা ট্রাক স্ট্যান্ড এবং নরসিংদী-কালীগঞ্জ হয়ে আগত মুসল্লি বহনকারী যানবাহন টঙ্গীস্থ কে-টু (নেভি) সিগারেট ফ্যাক্টরি সংলগ্ন খোলা জায়গায় গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজতেমাকালে গাজীপুরে যানচলাচল নির্দেশনা ॥ এজতেমায় আগত মুসল্লিদের যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য ১১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা হতে উত্তরবঙ্গ হতে আসা টঙ্গী-ঢাকাগামী যানবাহন চান্দনা-চৌরাস্তা হয়ে কোনাবাড়ি, চন্দ্রা-ত্রিমোড়, বাইমাইল, নবীনগর, আমিনবাজার হয়ে চলাচল করবে। এছাড়া ১১-১৩ জানুয়ারি ও ১৮-২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাস্তুহারা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত মহাসড়ক, স্টেশন রোড ওভারব্রিজ হতে টঙ্গী রেলগেট ও মন্নু টেক্সটাইল মিল হতে কামারপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে মোটরযান ব্যতিত রিক্সা, ভ্যান ইত্যাদি চলাচল বন্ধ থাকবে। আখেরি মোনাজাতের দিন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা-চৌরাস্তা হতে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত কালীগঞ্জ-টঙ্গী সড়কের মাজুখান ব্রিজ হতে স্টেশন রোড ওভারব্রিজ পর্যন্ত এবং কামারপাড়া ব্রিজ হতে মন্নু টেক্সটাইল মিলগেট পর্যন্ত সড়কপথ বন্ধ থাকবে। এর আগে ১৩ জানুয়ারি এবং ২০ জানুয়ারি রাত ১০টা হতে টঙ্গীর নিমতলী রেলক্রসিং, কামারপাড়া ব্রিজ ও ভোগড়া বাইপাস দিয়ে এজতেমাস্থলের দিকে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে ভোগড়া বাইপাস মোড় থেকে মুসল্লিদের নিয়ে এজতেমাস্থলের দিকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত শ্যাটল বাস চলাচল করবে। তবে বিকল্প হিসেবে ভোগড়া বাইপাস দিয়ে কোনাবাড়ি ও চন্দ্রা হয়ে এবং বিপরীত দিকে ৩০০ ফুটের রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলাচল করবে। নৌযান চলাচল নির্দেশনা ॥ এছাড়া ৯ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত কামারপাড়া সেতু থেকে টঙ্গী সেতু পর্যন্ত তুরাগ নদীতে সকল প্রকার নৌযান চলাচল ও নোঙ্গর বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে নৌযানসমূহ টঙ্গী সেতুর পূর্ব পাশে এবং কামারপাড়া ব্রিজের উত্তর পাশে নোঙ্গর করতে পারবে। নারায়ণগঞ্জ ছাড়াও সদরঘাট থেকে ৬টি ওয়াটার বাস টঙ্গী পর্যন্ত মুসল্লি বহন করবে। পুলিশের ব্রিফিং ॥ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে পুলিশের ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মইনুর রেজা চৌধুরী, অতিরিক্ত ডিআইজি (ঢাকা রেঞ্জ) আবু কালাম সিদ্দিকী, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ব্রিফিংকালে জানানো হয়, এজতেমাস্থলে সাদ বিতর্ক নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে কোন প্রভাব পড়েনি। মুসল্লিদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘœতা বিধানের জন্য টঙ্গী বিশ্ব এজতেমা এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা আট ভাগে ভাগ হয়ে পাঁচ স্তরে মুসল্লিদের নিরাপত্তা রক্ষার কাজ করবে। মুসল্লিদের প্রবেশ পথে সন্দেহভাজনদের মেটাল ডিটেক্টর, ১৫টি ওয়াচ টাওয়ার ও ৪১টি সিসি ক্যামেরা থেকে পুরো এজতেমাস্থল পর্যবেক্ষণ করা হবে। সাদা পোশাকে প্রতি খিত্তায় ৬ জন করে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদেরও নজরদারি করা হবে। বিশ্ব এজতেমা এলাকায় হকার ও ভিক্ষুক মুক্ত রাখা হবে। এজন্য গত রোববার থেকে এজতেমার শেষ না হওয়া পর্যন্ত গাজীপুরের পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে এজতেমা ময়দানগামী সড়কগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের ১৮শ সদস্য দায়িত্বপালন করবেন। এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য আলাদাভাবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র‌্যাব, ও ফায়ার সার্ভিসের কন্টোল রুম স্থাপন করা হবে। র‌্যাবের ব্রিফিং ॥ র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্মকর্তা মোঃ আনোয়ার লতিফ খান বলেন, আপনারা জানেন ১২ জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব এবং ১৯ জানুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে। এজতেমার কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এজন্য অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে র‌্যাব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্ভাব্য সকল ঝুঁকি পর্যালোচনা করে আমরা এ নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বিশ্ব এজতেমা ও আশপাশের এলাকায় জল, স্থল ও আকাশ পথ ত্রিমাত্রিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। পুরো এলাকায় ওয়াচ টাওয়ার থেকে নাইট ভিশন বাইনুকুলার ব্যবহার করা হবে। এজতেমাস্থল ও আশপাশের এলাকায় আমাদের পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল ভেতরে ও বাইরে পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিয়োজিত থাকবে। বিশেষ করে বিদেশ থেকে যে সকল অতিথিরা আসছেন তাদের এলাকার উপর বিশেষ নজরদারি রাখা হবে। তিনি আরও বলেন, মাওলানা সাদকে নিয়ে যে বিতর্ক আছে এটা উভয় পক্ষকে নিয়ে প্রশমনের চেষ্টা উঁচু পর্যায়ে চলছে। আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে জানতে পেরেছি, উনি সম্ভবত এখানে আসবেন না। তারপরও সরকারীভাবে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে ওটাই আমরা সবাই মেনে চলব এবং ওটা এনসিউর করব। আমাদের সকল প্রস্তুতি আছে। ঢাকা শহরে যে ব্যাটেলিয়ানগুলো আছে, প্রতি ব্যাটেলিয়ান থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল আমরা এয়ারমার্ক করে রেখেছি। যে কোন জায়গায় যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে আমরা এর ব্যবস্থা নিতে পারব। ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোঃ গাউস আল মুনির জানান, এজতেমা চলাকালে বিশেষ ট্রেন চালু হবে এবং প্রতিটি ট্রেন টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে দুই মিনিট করে যাত্রা বিরতি করবে। বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এজতেমা এলাকায় পাঁচটি ফিডারের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক বিদ্যুত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এমএ মান্নান জানান, ২৬টি ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশক নিধনের ওষুধ স্প্রে করা হবে। ২১টি গার্বেজ ট্রাকের মাধ্যমে এজতেমা ময়দান থেকে বর্জ অপসারণ, ধুলাবালি নিয়ন্ত্রণে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা ও ময়দান এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্লিচিং পাউডার সরবরাহ করা হবে। এখানে বিদেশী ক্যাম্পে রান্নার জন্য ১৩৬টি গ্যাসের চুলা স্থাপন করা হবে। গাজীপুরের সিভিল সার্জন সৈয়দ মোঃ মঞ্জুরুল হক জানান, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার হাসপাতালে বার্ন ইউনিট, অর্থোপেডিক্স ও ট্রমা, চর্ম-যৌন, সার্জারি, এ্যাজমা, কার্ডিওলজি বিশেষজ্ঞসহ ছাড়াও তাদের তিনটি অস্থায়ী মেডিক্যাল ক্যাম্পে শতাধিক চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও অফিসসহায়ক ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করবে। মুসল্লিদের সেবা দিতে ১৪টি এ্যাম্বলেন্স মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়ার জন্য ৪৫টি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র স্থাপন করছে। ১১ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত চিকিৎসকসহ সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
×