ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

উত্তর সিটির প্রার্থী চূড়ান্ত হবে ১৬ জানুয়ারি

দেশে আর ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:৫০, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

দেশে আর ওয়ান ইলেভেনের পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ওয়ান ইলেভেন থেকে আওয়ামী লীগ শিক্ষা নিয়েছে। কিন্তু বিএনপি নেয়নি বলেই ভয়-আশঙ্কা আছে। এছাড়া বিএনপি তার বর্তমান অবস্থা জেনে গেছে। নির্বাচনের আগেই সারা দেশে আওয়ামী লীগের জোয়ার দেখে বিএনপি বুঝে গেছে যে আগামী নির্বাচনে তাদের পরিণতি কী। ভোট পাওয়ার মতো কোনও কাজ তারা করেনি। এ কারণে বিশৃঙ্খলা সুষ্টি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা তারা করছে। তবে আওয়ামী লীগ বিএনপির সেই দুরভিসন্ধি বাস্তবায়ন করতে দেবে না, বাংলাদেশে আর এক-এগারোর পুনরাবৃত্তি ঘটানো যাবে না। বিএনপির কারণে এ ঘটনার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থাকলেও এটা আর ঘটবে না বলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমন্ডলীর সভা শেষে ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপনির্বাচন বিষয়ে তিনি বলেন, ডিএনসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ এখনো কাউকে মনোনয়ন দেয়নি। প্রার্থী ঘোষণার আগে কেউ প্রার্থী নন। অনেকে নিজের মতো করে দলের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। অনেকে দেখা করছেন। এতে প্রমাণিত হয় না যে প্রার্থী মনোনয়ন করা হয়ে গেছে। তবে আতিকুল ইসলাম দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন। সে সময় সভানেত্রী তাঁকে কাজ করার কথা বলেছেন, সিদ্ধান্ত জানাননি। প্রধানমন্ত্রী আতিকুলকে বলেছেন, ‘তুমি নির্বাচন করতে চাইলে জনগণের কাছে যাও’। ওবায়দুল কাদের জানান, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী কে হবেন, সে বিষয়ে ১৬ জানুয়ারি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত হবে। মনোনয়ন বোর্ড যখন সিদ্ধান্ত নেবে, সেখানে ১৮ জন আছেন। নেত্রী (শেখ হাসিনা) হচ্ছেন চেয়ারপার্সন। সেখানেই আলাপ-আলোচনা করবেন। সেখানে নেত্রী কিছু জরিপও করিয়েছেন। সব মিলিয়েই আমরা ফাইনালি সিদ্ধান্ত নেব। ১৬ জানুয়ারি আমাদের মনোনয়ন বোর্ডের সভা, সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে কে নৌকা পাবেন, কে হবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তের আগে কেউই আওয়ামী লীগের প্রার্থী নন। আওয়ামী লীগ ক্রমে ব্যবসায়ীদের দিকে ঝুঁকছে কিনা একজন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলের প্রার্থী, দলীয় নেতা আর নির্বাচন এটার মধ্যে পার্থক্য আছে। এটা রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি। স্ট্র্যাটেজিক এ্যালায়েন্স (কৌশলগত জোট)। নির্বাচনে স্ট্র্যাটেজিক এ্যালায়েন্স হয়। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন, একজন রাজনীতিবিদ কি ব্যবসা করতে পারেন না? তাঁরা কী চাঁদাবাজি করে খাবেন?’ নিজেদের দল এবং সরকারের চার বছর নিয়ে দলের ভেতরে কোনও সংকট বা ত্রুটি দেখেন কি না এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের ভেতরে ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। সেকারণে কোথাও কোথাও সম্মেলন হয়নি। তবে দলকে আধুনিক এবং মাঠ সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেবো। ইতোমধ্যে আমাদের টিম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেকের সাংগঠনিক এলাকায় তারা টিম ওয়ার্ক করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান নেবে। সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলবেন। এরপর দলীয়ভাবে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলনে আমরা আমাদের কথাগুলো বলব। তিনি বলেন, আপাতত এতটুকু বলা যায়, আমাদের ত্রুটি নেই এমনটি বলব না, চাঁদেরও তো কলঙ্ক আছে। তাই বলে কি আলো থেমে থাকে? আমাদের অনেক সফলতা আছে, ত্রুটিও আছে। তাই বলে আমাদের উন্নয়নকে ঢেকে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, বিএনপি দেশে যতই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করুক না কেন, এ দেশে আর কোনোদিন ওয়ান-ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি ফিরে আসবে না। এছাড়া যেকোনো নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের দাবি করে সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার দুরভিসন্ধি বিএনপি করে বলে অভিযোগ করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিতে কোনো গণতন্ত্র নেই। দুই বছর হলো তাদের (বিএনপি) কাউন্সিল হয়েছে। কাউন্সিলের পর থেকে এখনো তাদের ওয়ার্কিং কমিটির কোনো মিটিং হয়নি। এটা কি কোনো গণতান্ত্রিক দল? যে দলে আভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নেই, সেই দল আবার দেশে গণতন্ত্র নেই কী করে বলে? তারা কিভাবে দেশে গণতন্ত্র দেবে? তাদের দলের এক নেতা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ছেলেকে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল, দলের কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এ কে এম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×