ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৭ মার্চ নিয়ে আলোচনায় নেতারা

শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করছেন বলেই বার বার হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করছেন বলেই বার বার হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতীয় সংসদে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনেই মূলত স্বাধীনতার পূর্ণতা পায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, পরাজিত শত্রুদের সেই ষড়যন্ত্র এখনও অব্যাহত আছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনা আজ সম্পন্ন করছেন বলেই তাঁকে বার বার হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে যাতে করে তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারেন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার রাতে এক অনির্ধারিত আলোচনার সূত্রপাত করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। আলোচনায় আরও অংশ নেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আলোচনার সূত্রপাত করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে ধাপে ধাপে স্বাধীনতার আন্দোলনে বাঙালী জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে বাংলার মাটিতে স্বাধীনতার প্রশ্নে এক কাতারে একত্রিত করেছিলেন। তিনি বলেন, ইয়াহিয়া খান প্রহসনের বিচারে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ফাঁসির আদেশে সইও করেছিলেন। এর মধ্যে আমরা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করি। এজন্য বঙ্গবন্ধুকে তারা ফাঁসি দিতে পারেনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দুটি স্বপ্ন ছিল। একটি স্বাধীনতা, আরেকটি বাঙালীর অর্থনৈতিক মুক্তি। বঙ্গবন্ধু আজ আমাদের মাঝে নেই। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ জাতির অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আজ বাংলাদেশ সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেল। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা আজ শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, সারাবিশ্বের মহান নেতা। আলোচনায় অংশ নিয়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন ছিল স্বাধীনতার প্রত্যাবর্তন। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় হলেও প্রকৃতপক্ষে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনই কোটি কোটি বাঙালী জাতি স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ ও আনন্দ উপভোগ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে তার পূর্ণতা লাভ করে। খুনী মোশতাকরা মুক্তিযুদ্ধের সময়েও ’বঙ্গবন্ধুকে চাও নাকি স্বাধীনতা চাও’- এ ধরণের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধকে নস্যাত করার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু বাঙালী জাতি তাদের ষড়যন্ত্র নস্যাত করে দেয়। কারণ জাতির কাছে সে সময় স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু ছিল এক ও অভীন্ন। তিনি বলেন, এতো রক্তের বিনিময়ে কোন দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশকে গড়ে তোলার পাশাপাশি ১৭৩টি দেশের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্থ দেশকে যখন বঙ্গবন্ধু সচল করলেন, দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিলেন তখন স্বপরিবারে তাঁকে হত্যা করে এদেশকে নব্য পাকিস্তানে পরিণত করা হলো। আজ যখন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছেন তখনই তাঁকেও হত্যার নানা ষড়যন্ত্র চলছে। আজ বিশ্ব নেতৃত্বে সমাদৃত, আন্তর্জাতিক নেত্রী হিসেবে নিজের স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও তা অর্থবহ ছিল না, কেননা তখনও বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা অর্থবহ হয়। যে পাকিস্তানীরা এতো চেষ্টা করেও বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পারেনি, কিন্তু খুনী মোশতাক-জিয়ারা তাঁকে হত্যার করলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যর পর দেশে যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল, আজও সেই ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনাকে বার বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা করছেন। আজ আমাদের এটাই প্রতিজ্ঞা- শেখ হাসিনা যেন বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করতে পারেন, সেজন্য সবাই মিলে তাঁকে সহযোগিতা করতে হবে।
×