ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ক্যালেন্ডার ডায়েরিতে এখনও নতুন বছর টাটকা আবেগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১০ জানুয়ারি ২০১৮

ক্যালেন্ডার ডায়েরিতে এখনও নতুন বছর টাটকা আবেগ

জনকণ্ঠ ফিচার ॥ অনেকে বলবেন, সময় বদলে গেছে। ক্যালেন্ডার আর ডায়েরির জন্য কিছু এখন থেমে থাকে না। থেমে যে থাকে না, বলাই বাহুল্য। তাই বলে আবেগ ভালবাসা ফুরিয়ে গেছে? হারিয়ে গেছে সব? না, এ কথাও ঠিক নয়। খোঁজ খবর নিতে গিয়ে রীতিমত অবাক হতে হলো। কয়েক পাতার ক্যালেন্ডার। মামুলি ডায়েরি। এখনও আবেদন ধরে রেখেছে। হাতে পেলে ছেলে বুড়ো সকলেরই ভাল লাগে। কী যে ভাললাগে! দেয়ার আনন্দটাও কম নয়। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেয়া হচ্ছে ডায়েরি ক্যালেন্ডার। প্রীতি উপহার তো বটেই। প্রয়োজনটাও কম বড় নয়। তাই কর্মব্যস্ত মানুষের চোখের সামনে, সেটি দেয়ালে হোক কিংবা টেবিলের উপর, অন্তত একটি ক্যালেন্ডার আছে। আর ডায়েরি নিয়ে তো কাড়াকাড়ি অবস্থা! যক্ষের ধনের মতো আগলে রাখতে চান সবাই। চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে অনেক আগে ভাগেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। ছাপাখানাগুলো ব্যস্ত সময় পার করে। আর এখন ঢাকার ঝকঝকে তকতকে শোরুম ভর্তি ক্যালেন্ডার ডায়েরি। ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ও বিপুল সম্ভার চোখে পড়ে। ২০১৭ সাল শেষ হওয়ার আগে থেকে সাজানো ছিল পসরা। নতুন বছর খ্রিস্টীয় ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসেও দেদার বিক্রি হচ্ছে। ক্যালেন্ডারগুলো নানা মাপের। ১ থেকে ১২ পাতা পর্যন্ত হয়। পাতা কম বেশি হলেও, তারিখ দেখার ক্ষেত্রে এটি কোন সমস্যা করে না। পার্থক্য গড়ে দেয় ক্যালেন্ডারে ব্যবহার করা ছবি। সাধারণত সুন্দর ছবি দেখে ক্যালেন্ডার কেনা হয়। ডায়েরির বেলায় ছবির কোন ব্যাপার নেই। ৩৬৫ দিন ব্যবহার করার জন্য সমানসংখ্যক পাতা। পাতাগুলো উন্নত হওয়া চাই। হাতে কিংবা হাতের কাছে থাকে। এ কারণে একটু স্মার্ট অভিজাত হলো কিনা, ব্যবহারকারী সে দিকটিও খেয়াল রাখেন। ক্যালেন্ডার ডায়েরির জন্য পল্টন ফকিরাপুল নিউমার্কেট এলাকা বেশ বিখ্যাত। এইসব এলাকায় নামীদামী একাধিক প্রতিষ্ঠানের শোরুম। মঙ্গলবার আজাদ প্রোডাক্টসের শোরুমে গিয়ে দেখা যায়, নতুন বছরের নানা আয়োজন। অন্য সময় গ্রিটিংস কার্ড দিয়ে সাজানো থাকে। থাকে নানা ডিজাইনের বিয়ের কার্ড। ভিউকার্ড পোস্টার থাকে। কিন্তু বর্তমানে যেদিকে চোখ যায়, ক্যালেন্ডার ও ডায়েরি। দেয়ালের এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ক্যালেন্ডার টানানো। মাঝখানে টেবিলের উপর স্তূপ করে রাখা হয়েছে ডায়েরি। ভরপুর আয়োজন দেখে মনেই হয় না, জানুয়ারির এক সপ্তাহ গত হয়েছে। নববর্ষের টাটকা অনুভূতি পাওয়া যায় এখনও। দেয়ালের ক্যালেন্ডারগুলো বড় জায়গাজুড়ে আছে। প্রথমে সেদিকেই চোখ যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত ট্যুরিস্ট স্পট ও স্থাপনার ছবি দিয়ে ক্যালেন্ডার করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ফুল বাগান, সবুজ উদ্যান, প্রাসাদোপম বাড়ি পাহাড়- ঝরনা ও বড় সেতুর ছবি চোখে পড়ে। এ বছর ৩০ থেকে ৪০ প্রকারের ক্যালেন্ডার করা হয়েছে। ডায়েরি করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ প্রকারের। প্রতিষ্ঠানের জিএম মোস্তফা কামাল জানান, ইংরেজী নতুন বছরে ক্যালেন্ডার ডায়েরির প্রচুর চাহিদা। এ কারণে তিন চার মাস আগে থকে কাজ শুরু করেন তারা। এখনও ব্যস্ততা শেষ হয়নি। কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডায়েরি ক্যালেন্ডার তো এক বছরের জন্য। জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিতরণ করা হবে। এটি মাথায় রেখেই কাজ করতে হচ্ছে আমাদের। বাইরে ফুটপাথেও বিক্রি হচ্ছে ক্যালেন্ডার ও ডায়েরি। এক সময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত যেসব জায়গা, ক্যালেন্ডারে সেগুলোর ছবি ওঠেছে। বাংলার নদী নৌকার চির চেনা রূপ খুঁজে পাওয়া যায়। সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সুন্দর সময় ঘুরে ফিরে আসে। সিলেটের চা বাগান, রাতারগুল, বিছানাকান্দি, ট্যাকের ঘাট, টাঙ্গুয়ার হাওড় দেখে মন ভরে যায়। নজড় কাড়ে পার্বত্য এলাকার সবুজ। তবে বেশি দেখা গেল বিদেশী আলোকচিত্র।
×