স্টাফ রিপোর্টার ॥ অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে এক নারীকে বিয়ে করার অভিযোগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারের (ডিআইজি) পদ থেকে মিজানুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া তিনটায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ কথা জানান। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ডিআইজি মিজানের নৈতিক স্খলনের কথা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে তদন্তের পর জানতে পারব আসলে সে কতটা দোষী। এখন প্রাথমিকভাবে অভিযোগের ভিত্তিতে ডিআইজি মিজানকে ডিএমপি থেকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। কত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পুলিশ সপ্তাহ চলছে। দুই-একদিন পর আইজিপি-ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত কাজ শুরু করবেন। আসাদুজ্জামান কামাল জানান, কোন ব্যক্তির দায় বাহিনী নেবে না। কেউ আইনের উর্ধে নয়। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। পুলিশের অনেক সদস্যও বিভিন্ন অপরাধে কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে পুলিশ সপ্তাহ শুরুর আগে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে এক নারীকে বিয়ে করার অভিযোগ উঠে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম এ্যান্ড অবস্) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন মহলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে যদিও ডিআইজি পদমর্যাদায় কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, ওই নারী প্রতারক ও মিথ্যাবাদী।
ওই নারী পত্রিকায় অভিযোগ করেন, পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের কাছে তার বাসা। গত বছর জুলাই মাসে পুলিশ কর্মকর্তা মিজান ওই বাসা থেকে কৌশলে তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে বেইলি রোডের মিজানের বাসায় নিয়ে তিনদিন আটকে রাখা হয়েছিল তাকে। ওই নারী দাবি করেন, আটকে রাখার পর ১৭ জুলাই তার মাকে বগুড়া থেকে ঢাকায় ডেকে আনা হয়। ৫০ লাখ টাকা কাবিননামায় মিজানকে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়। পরে লালমাটিয়ার একটি ভাড়া বাড়িতে তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে রাখেন। ইতোপূর্বে মিজান বিয়ে করেছেন। এই নারীর অভিযোগ, কয়েক মাস কোন সমস্যা না হলেও ফেসবুকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি ছবি তোলার পর পুলিশ কর্মকর্তা মিজান ক্ষিপ্ত হন। ভাংচুরের ‘মিথ্যা’ একটি মামলা দিয়ে তাকে গত ১২ ডিসেম্বর কারাগারে পাঠানো হয়। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর মিথ্যা কাবিননামা তৈরির অভিযোগে আরেকটি মামলায় জড়ানো হয়। দুটি মামলায় জামিনে বেরিয়ে আসার পর পুলিশ কর্মকর্তা মিজানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন ওই নারী। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে আরেক টিভি উপস্থাপিকার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কসহ নানা ধরনের অভিযোগ ছিল।
সে সময় ডিএমপি উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান, মগবাজারের কাজী অফিসের কাজী মাওলানা সেলিম রেজা ভুয়া কাবিননামা তৈরির অভিযোগে ওই নারীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়। আদালতের নির্দেশে রমনা থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করে। ওই মামলাটির তদন্ত চলছে।
তবে পুলিশ কর্মকর্তা মিজান জানান, তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। আমার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ভাল বোঝাপড়া। আমরা পারিবারিক জীবনে সুখী। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য স্বামী বানিয়ে মিথ্যা প্রচার চালানো হচ্ছে। এর আগে প্রতারণার অভিযোগ ওই নারীর বিরুদ্ধে একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: